জগন্নাথপুর টাইমসশুক্রবার , ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

*সুখ, সুখী এবং সুখময় পরিবার* – ফায়সাল আইয়ূব

Jagannathpur Times Uk
ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৫ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

*সুখ, সুখী এবং সুখময় পরিবার*
ফায়সাল আইয়ূব

::

‘সবাই তো সুখী হতে চায়, তবু কেউ সুখী হয় কেউ হয় না…।’ পুরনো দিনের চিরায়ত সুন্দর এ গানের কথাগুলো সুখপ্রত্যাশী এবং অসুখ তাড়াতে মরিয়া যে কোনো নরনারীকে আমূল ছুঁয়ে যায়। এর প্রধান কারণ, বামন এ মানবজীবনে আমরা কেউই অসুখী হতে চাই না, চাই শুধু সুখ। আমরা ভাসতে চাই, উড়তে চাই, ছুটতে চাই, ঘুরতে চাই, বাঁচতে চাই এমনকি মরতেও চাই সুখে। অর্থাৎ আমরা সুখী হতে চাই। এ সুখের বোধ মানবজীবনের কৈশোরকাল থেকে মনোজগতে জায়গা করতে শুরু করে। তারুণ্যে এটি কৈশোরে পৌঁছে, যৌবনে তা তরুণ হয়, প্রৌঢ়ত্বে এর যৌবন আসে এবং আমাদের বার্ধক্যে এই বোধ প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছায়। প্রাকৃতিক এ বোধের বাইরে কোনো সুস্থ মানুষ নেই। অথচ, সুখ পেয়ে সুখী হওয়ার এ বোধ নিরন্তর লালনের পরও আমরা প্রত্যহ অসুখ কুড়াই! জেনে ও না-জেনে আমরা সুখী হওয়ার পথ থেকে দূরে সরে যাই। আমরা শিকড় কেঁটে কাণ্ডে জল ঢেলে গাছ থেকে ফুল ফল ছায়া প্রত্যাশা করি!

আমি তো বিশ্বাস করি, প্রতিটি পরিবার একেকটি ফলদ গাছের মতন। এ গাছ থেকে ফুল ফল ছায়া আশা করলে অবশ্যই শিকড়কে মাটিতেই প্রোথিত রাখতে হবে; এর সযত্ন রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রাত্যহিক পরিচর্যায় দিতে হবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব। আর এর দায়িত্ব নিতে হবে স্বামী ও স্ত্রী, দু’জনকেই যুগপত। কারণ, একটি পরিবার মূলত এই দু’জনেরই যোগফল। এ জন্যে পারিবারিক দুঃখের জন্যে যেমন কেউ এককভাবে দায়ী হতে পারে না, তেমনি সুখের জন্যেও নিতে পারে না কেউ একক কৃতিত্ব ।

স্বর্গ নরক বিশ্বাসীরা পরিবারকে এ দুয়ের সাথে তুলনা করেন। আসলে সাংসারিক সুখের নেপথ্যশক্তি হিশেবে আরো যেসব বিষয় ওতপ্রোথভাবে সংযুক্ত থাকে এবং যেগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সর্বদা সজীব রাখা প্রয়োজন সেগুলোর কয়েকটি হচ্ছে, পারিবারিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক নিরাপত্তা, জৈবিক চাহিদা পূরণ, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, স্বামীস্ত্রীর বয়সের ব্যবধান বেশি না-হওয়া, অভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক আবহে বেড়ে ওঠা, অভিন্ন পারিবারিক অবস্থান এবং অভিন্ন বংশ মর্যাদা। যোগ্যতার প্রশ্নে ব্যবধান কম থাকা, সহনশীলতার মনোভাব উজ্জীবিত রাখা, শ্রদ্ধার সম্পর্কে থাকা, চাওয়া পাওয়ার মধ্যে দূরত্ব কম থাকা, স্বপ্নের কাছাকাছি থাকা, আশা ও ভালোবাসাকে কোলেপিঠে রাখা, পারস্পরিক প্রশংসার মনোভাব নিরন্তর জিইয়ে রাখা। বন্ধু হয়ে যাওয়া। লুকোচুরি না-করা। ভালো লাগা ও মন্দ লাগা শেয়ার করা। শুধু স্ত্রী নয়, স্বামীকেও গৃহস্থকর্মে সক্রিয় অংশ নেওয়া।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদলে পরিবারকে কোয়ালিটি সময় দেওয়া। কারণ, সামাজিক মাধ্যম পৃথিবীর কোটিকোটি নারীপুরুষকে ইতোমধ্যে চূড়ান্তরূপে অসামাজিক করে ফেলেছে; বহু কারণে গৃহশান্তি উপড়ে ফেলে ধ্বংস করে দিয়েছে সংসার। ঝগড়াকে ভয় করে নিরন্তর সদাচরণকে প্রশ্রয় দেওয়া। পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতিযোগিতা করা। একে অন্যকে পড়তে শেখা। বড়সংকট উত্তরণে বসে পরামর্শ করা। যে কোনো প্রকার সন্দেহকে সাথেসাথে গুরুত্ব না-দিয়ে কিছুটা সময় ধৈর্য ধরা। রাগ প্রশমিত করা; এটি শুধু সুখময় সংসারের জন্যে নয়, সুস্বাস্থ্যের পক্ষেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। একজন কথা বললে অন্যজনকে মুখের দিকে তাকিয়ে শোনা, ছোটবড় আচরণে আগ্রহ দেখানো, অপ্রত্যাশিত ছোট বিষয়কে বড় না-করা। অনাকাঙ্ক্ষিত বড় বিষয়কে যতটুকু সম্ভব ছোট করে নেওয়া। সন্তানের সামনে অবাঞ্ছিত কর্ম চর্চা থেকে সজ্ঞান দূরে থাকা। ইতিবাচক মনোভাব হৃদয়ে লালন করা। পারস্পরিক সুখ-দুঃখ অনভব করতে শেখা। নিয়ম করে বেড়ানো এবং বাইরে খাবার খাওয়া। এমনকি বছরে অনন্ত একবার ঘরের আসবাবপত্রের অবস্থান বদলে দেওয়া। কারণ, লাইফ ডাজন্ট এলাও অ্য স্ট্যাটিক কন্ডিশান, গতিতে জীবন মম স্থিতিতে মরণ।

সর্বোপরি, অগাধ আস্থা, অখণ্ড প্রেম, অপার বিশ্বাস আর অতুল ভালোবাসা, এ চার খুঁটির শক্তভিত্তির ওপর সংসারঘর নির্মাণ করা গেলে প্রশান্তির হাওয়া শুধু দখিনের জানালা দিয়েই নয়, ফাঁকফোঁকর দিয়েও ঘরে আসবে; সংসার হবে সুখময়।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।