সারোয়ার হোসেন জাবেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
ধান কাটার ছবি তুলেছেন – অপু ॥
জগন্নাথপুরসহ সুনামগন্জের হাওরে হাওরে ধান কাটা উৎসব শুরু হয়েছে, কৃষকের চোখে মুখে হাসির ঝলক।
এদিকে জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের মমিনপুর হাওরে মজিদপুর গ্রামের কৃষক রইছ উল্যার জমির বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধান কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা উৎসবের উদ্ধোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম।
এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মধু সুধন ধর,
প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা খালেদ সাইফুল্লাহ, পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী, কৃষক রইছ উল্যা সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে সুনামগন্জের হাওর গুলোতে কৃষকের সাথে আলাপ করে ও বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে, কৃষকের মুখে এবার হাসি ফুঁটেছে।
সুনামগন্জের হাওরে হাওরে পাকা বোরো ধানের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত এখন চারপাশ। হাওরাঞ্চলে এবার ধানের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের মলিন মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। সেই খুশিতে কষ্টে ফলানো সোনালী রঙ্গের ধান কেটে মাড়াই দিয়ে গোলায় তুলতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আপন মনে তোরজোর শুরু করছেন সুনামগঞ্জের কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার জগন্নাথপুর, ধর্মপাশা, দোয়ারা বাজার, ছাতক, জামালগঞ্জ, দিরাই, সুনামগঞ্জ
সদর, শাল্লা, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগরসহ ১২টি উপজেলা হাওরাঞ্চলের ৮০ভাগ কৃষক পরিবার।
তারা কৃষি কাজের মাধ্যমে বংশপরম্পরায় তাদের জীবন জীবিকা ও অতীত ঐতিহ্যের লালিত স্বপ্ন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে।
এ বছর কৃষকরা একটু দেরিতে চাষাবাদ শুরু করলেও হাওরের বোরো ধানের গোছায় সোনালী রঙ ধরায় কৃষকের বুকে জেগেছে সুখের প্রাণ।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্য্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর বোরো মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলার ছোট বড় মিলিয়ে ১৪২টি হাওরে দুই লাখ ২২ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৬০ হাজার ৮৬০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল এক লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫ হেক্টর ও স্থানীয় এক হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৯৫ হেক্টর বেশি।
ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ৩ হাজার ৮শত কোটি টাকা।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান চাষাবাদ হয়েছে। বেশকিছু হাওরে আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে ফলনও ভাল হয়েছে।