:: ডেস্ক : প্রবাসীর কথা :
লিভারপুল ফুটবল ক্লাব সেই ছোটবেলা থেকেই আমার পছন্দের দল | খেলা দেখতে লিভারপুল স্টেডিয়ামে আগেও গিয়েছি | আমাদের শহর হার্টলিপুল থেকে, প্রায় তিন ঘন্টার ড্রাইভ |
১৬৫ মাইলের যাত্রা | আগে খেলা দেখতে যাওয়া হলেও এখন যাবার কারণ ভিন্ন |
মেয়ের শশুর বাড়ী লিভারপুল | তাই সময় পেলেই মেয়ে আর দামান, বিয়াইনকে দেখতে সেখানে যাওয়া |
২১ মার্চ সময় হাতে ছিলো বলে , ঝির ঝির বৃষ্টি উপেক্ষা করে, সালাহ, নুনেজ, ভ্যানডাইক এলিসন, ফার্মিনো, ট্রেন্ট আর ইয়ারগান ক্লপের, দেখা হবে না জেনেও শুধু স্টেডিয়াম ঘুরে দেখতে গেলাম |
বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অনেক পরিচিত ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়ন, যাঁর শোকেজ গুলো ট্রপি আর ট্রপিতে ভরপুর | বাল্য বেলার ফ্রেন্ড আমরা মামা ভাগনা শিশু ও আগের দিনের ডাকা আফফান চাচা,এখনকার সময়ে যিনি জিয়ারির জামাই ! সাথে পেয়েই তিন জন মিলে বের হয়ে পরলাম |
বার্কিংহেড লিভারপুলের সেই বিখ্যাত ট্যানেল দিয়ে ওপারের লিভারপুল যাচ্ছি | ড্রাইভিং সিটে আমি প্যাসেঞ্জার হয়ে বসে রইলাম | গাড়ী চালিয়ে যাচ্ছেন শিশু |
কথায় কথায় জানলাম টাইটানিকের ডুবে যাবার অনেক পরে কিছু ভগ্নাংশ নাকি লিভারপুল ডক সাইডের এক জাদুঘরে সংগৃহিত করে রাখা হয়েছে |
টুরিস্ট আকর্ষণের জন্য আরো ব্যাপক ভাবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে এই ঐতিহাসিক নগরীকে |
কয়েকটি বিল্ডিং বানানো হয়েছে জাহাজের আদলে |
দূর থেকে আরো একটু কাছে গিয়ে, কারের ভিতর থেকেই দেখলাম |
স্থানীয় একটি গ্রোসারী দোকানে গেলাম সামান্য কেনাকাটার জন্য-দোকানের মালিক আমাকে নাম ধরে ভাই বলে সালাম দিতে কিছুটা অবাক হলাম |
আমি বললাম আপনি আমাকে চিনেন নাকি ?
আপনাকে কে না চিনে গীতিকার সাহেব !
আমি একটু ইয়ে হলেও আন্তরিক সম্মানটুক আমাকে অভিভূত করে রাখলো কিছু সময়ের জন্য |
সমান ভাবে পাশের গ্রামের এক ভাই ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট “ধুম”এ যাবার পর দেখা হলে চিনে হাত মেলালেন | এই সবই হচ্ছে ফেসবুক, ইউটিউব আর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ফলে |
আরো কিছু ঘোরাঘুরির পরে-সামারের ঘুরে দেখার আমন্ত্রণ জানালেন আমাকে,পাশে বসা মামা চাচা|
লিভারপুলের আত্মীয়তা শেষে ওল্ডহ্যাম এসে বিরতি নিলাম -আমার এক প্রিয় শ্যালিকার বাড়ী | ভায়রা ভাই জুবেদ খাঁন ও তাঁর স্ত্রী জলি’র রাত দুপুরের আদর আপ্যায়ণ আর,মিঠা মিঠা কথাতে কাটলো আমাদের দীর্ঘক্ষণ |
আরো এক প্রিয় বন্ধুর নিমন্ত্রণ ছিলো চায়ের |
চুপ মেরে চলে আসলাম |
আমি এম, ৬ থেকে এম , ৬২, এরপর এ৯৯ এর বাতাস, বৃষ্টিকে পাশ কাটিয়ে ধীরে স্থিরে সত্তর মাইল স্পিডে গাড়ী চালাচ্ছি , আর পাশের সিটে নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছেন ছেলে মেয়ের মা, মাঝে মাঝে উনি চোখ খুলে জিজ্ঞেস করছেন আমি ঠিক আছি কি না |
আমি মৃদু ভাবে বললাম-
আমি ঠিক না থাকলে,কি গাড়ী চলে —