মুহাম্মদ সালেহ আহমদ :
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে সক্রিয় হয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক একুশে পদকপ্রাপ্ত, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দ সৈনিক ড. অরূপ রতন চৌধুরী।
সম্প্রতি লন্ডনে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেছেন, আমি নৌকা প্রতীকেই নির্বাচন করতে চাই। আর এজন্যই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশী।
প্রায় তিন দশক থেকে দেশের যুবসমাজকে নিয়ে কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি আলোকিত সমাজ ও দেশ গঠনে আমি এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে গিয়েছি। ৮৯ সালে মাদক ও ধূমপান বিরোধী সংগঠন ‘মানস’ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের যুব সম্প্রদায়কে ধূমপান ও মাদকদ্রব্যের কুফল সম্পর্কে সচেতন করে তোলার কাজ নিরলসভাবে করে যাচ্ছি বিগত ৩৩ বছর যাবত। তাঁর সম্পর্কে দলের গবেষণা টিম নানা খোঁজখবর নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিকে মানসম্পন্ন করতে চাইলে স্বচ্ছ এবং ভালো মানুষকে সংসদে পাঠাতে হবে।
সিলেট ২ আসনেকে স্মার্ট, আধুনিক এবং উদাহরণযোগ্য হিসেবে তুলে ধরার প্রত্যয় ব্যক্ত করে ডা. অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, এর জন্য আগে চাই সচেতন জনগোষ্ঠী ও আলোকিত একটি যুবসমাজ। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ইতোমধ্যে আমার কাজ শুরু হয়ে গেছে। মাদকাসক্ত যুব সমাজকে কর্মক্ষম এবং শক্তিতে রূপান্তরের প্রয়াস চলছে অব্যাহতভাবে। আমি বিশ্বাস করি আলোকিত মানুষ ছাড়া আলোকিত সমাজ গঠন অসম্ভব।
রণাঙ্গণের এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, জীবন ক্ষণস্থায়ী কিন্তু তার কর্ম চিরস্থায়ী। সুতরাং ক্ষণস্থায়ী এই জীবনটাকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলেই মানব জীবনের স্বার্থকতা খোঁজে পাওয়া সম্ভব। সেই বিশ্বাস ও বোধকে সামনে রেখেই আমার পথচলা। এই পথ খুব সহজ নয়।
নিজের সুকর্মের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, মানুষ মাত্রই মোহযুক্ত। কেহ সম্পদের, কেহ বা ক্ষমতার আবার কারো মোহ মানুষের কল্যাণ বা সেবা।
আমিও মোহাবিষ্ট মানুষ। বিশ্বনাথের আকিলপুরের সন্তান আমি। এই মাটিতে জন্ম নিয়ে পেয়েছি অনেক কিছুই। তবুও একটা অপূর্ণতা কাজ করছে মনের ভিতর। এর পিছনে রয়েছে শেকড়ের প্রতি অনিবার্য দুর্বার টান এবং দায়বোধ। আমার শেকড় সিলেট। জন্ম মাটির টানেই বারবার সিলেটে আমার ছুটে আসা। এখন চাওয়া একটাই- নিজের শেষ সময়টুকু সিলেটের মাটি ও মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করতে চাই। সিলেট-২ আসন সবদিক থেকেই বর্তমানে খুবই অবহেলিত অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই আসনে জনপ্রতিনিধি থাকলেও এলাকার মানুষ তাঁকে পাশে পান না। এর আগেও এই আসন ছিল একই অবস্থায়। জাতীয় পার্টির সাংসদ থাকলেও এলাকার জনগণ ছিল উন্নয়ন বঞ্চিত। ধারাবাহিক উন্নয়ন বঞ্চিতের কারণে পাহাড়সম সমস্যায় সিলেট-২ আসন। যোগ্য এবং দক্ষ জনপ্রতিনিধিদের অভাব সর্বোপরি এলাকার প্রতি দায়হীনতার কারণে কাঙ্খিত উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত হচ্ছে আসনটি। আমি এই অবহেলিত এই অঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।
কাজের মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি আদায় করে নেওয়াই বীরের লক্ষণ উল্লেখ করে এই বলি মুক্তিযোদ্ধা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অর্জন ধরে রাখতে হলে, মনে-প্রাণে দেশবান্ধব শক্তির প্রয়োজন।
আমার বিশ্বাস, দলীয় প্রধান বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে আমাকে সিলেট-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে আমাকে অবহেলিত মানুষের পক্ষে কাজ করার সুযোগ করে দিবেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বিলেত প্রবাসী বাঙালীদের অবদান চিরদিন জাতি কৃতজ্ঞতার সাথে মনে রাখবে উল্লেখ করে ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, আগামী নির্বাচনে আমি আপনাদের সহযোগিতা লাভের আশা নিয়েই আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি।
গডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, আমার প্রথম কাজ হবে মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন। সেটি সম্ভব না হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের মানদণ্ড সমৃদ্ধ হয় না। এই জন্য তৃণমূল থেকেই এই উন্নয়নযজ্ঞ শুরু করতে হবে। সুস্থ পরিবেশের মানুষ সুষ্ঠু চিন্তা করতে পারে। আমি সর্বাগ্রে একটি সুস্থ পরিবেশ দিতে চাই। এর জন্য প্রয়োজন কর্মোদীপ্ত, প্রাণোচ্ছল একটি যুব সমাজ যাদের হাত ধরেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হবে বাসযোগ্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব, কণ্ঠশিল্পি হিমাংশু গোস্বামী ও অশ্রু বৈরাগী।