নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট :
আড়াই বছর আইনি লড়াইয়ের পর আদালতের রায়ে বিজয়ী হলেন সিলেটের জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদ।
নির্বাচনে দুই ভোটে তার পরাজয় দেখানো হয়েছিল। আদালতের নির্দেশে ভোট পুনর্গণনার পর তাকে ৪ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, বৃহস্পতিবার নির্বাচনী মামলার এই রায় ঘোষণা করেন সিলেট যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক আরিফুজ্জামান। এদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওয়েবসাইটে রায়ের তথ্য প্রকাশ হয়।
২০২১ সালের ৩০শে জানুয়ারি জকিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনের ফারুক আহমদ ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্র্থী। তিনি এর আগে দু’বার পৌর নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের অপর বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আহাদকে দুই ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব। বিষয়টি তখন মেনে নিতে পারেননি ফারুক আহমদ। তিনি বিষয়টি নিয়ে আদালতে যান।
ওই বছর সিলেট যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ব্যালট পেপার পুনরায় গণনা চেয়ে মামলা করেন।
মামলায় কারচুপির অভিযোগ তুলে জকিগঞ্জ সরকারি কলেজ কেন্দ্র, মধুদত্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়, আইডিয়াল কেজি স্কুল কেছরী, মাইজকান্দি মাদ্রাসা কেন্দ্র ও জকিগঞ্জ গার্লস হাইস্কুল কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার জন্য ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন জানান। মামলার শুনানিকালে আদালত বাদী পক্ষের সাক্ষী ও বিবাদী পক্ষের সাফাই সাক্ষী গ্রহণ করে ভোট পুনরায় গণনার নির্দেশ দেন। গণনায় মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদ জগ প্রতীকে ৪ ভোট বেশি পান।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ফলাফলে কারচুপির অভিযোগে করা মামলা দীর্ঘদিন চলার পর উভয় পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় আদালতে ভোট পুনরায় গণনা করা হয়। এতে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফারুক আহমদের বৈধ ভোট হয় ২০৭১টি আর আব্দুল আহাদের বৈধ ভোট হয় ২০৬৭টি। এতে দেখা গেছে- ফারুক আহমদ ৪ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সিলেটের আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফারুক আহমদের আইনজীবী আলী মর্তুজা কিবরিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর পরই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আব্দুল আহাদকে ২ ভোটে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু ফলাফল ঘোষণায় কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট পুনরায় গণনার দাবিতে সিলেট যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। বহুল আলোচিত এ মামলা দীর্ঘদিন চলার পর ভোট পুনরায় গণনার আদেশ হয়। কয়েক দফায় গণনা শেষে ফারুক আহমদ ৪ ভোটে বিজয় হন।
সদ্য বিজয়ী ফারুক আহমদ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ভোট পুনঃগণনার রায়ে জনগণের বিজয় হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি আইনি লড়াই করেছিলেন। তিনি তার আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।