এসকেএম আশরাফুল হুদা :
লন্ডনে “এনআরবি’স রোল ইন বাংলাদেশী পলিটিক্স” শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষের উপস্থিতে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠানের আয়োজক সিনিয়র সাংবাদিক লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট মহিব চৌধুরী।
সাংবাদিক মিসবাহ জামাল ও আহাদ চৌধুরী বাবুর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ফ্রেন্ডস অব কনজারভেটিভ এর চেয়ারপার্সন মুকিম আহমেদ, সাবেক স্পীকার আব্দুল মুকিত এমবিই, কাউন্সিলার ইকবাল হোসাইন, কমনওয়েলথ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাহাস পাশা, প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্সুরেন্সের ডাইরেক্টর জাকারিয়া আহমদ, জাতীয় চারনেতা পরিষদের যুক্তরাজ্য সভাপতি এডভোকেট ফারুক আহমদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ যুক্তরাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক আলীমুজ্জামান, লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তাইছির মাহমুদ, বালাগঞ্জ-ওসমানী নগর উপজেলা সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মাসুদ আহমদ, মনির হোসাইনের সহধর্মীনি শাকিলা চৌধুরী, মো: সামির হোসাইন,সর্ব ইউরোপিয়ান বঙ্গঁবন্ধু পরিষদের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন চৌধুরী, আব্দুল করিম পীর হাবীব পরিষদ, আব্দুল কাদির, খালেদ চৌধুরী, তোফায়েল আহমদ তুফা, মাহফুজ মনির, তানিয়া তুফা, রেদওয়ান খান, নাসরিন চৌধুরীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ার সাংবাদিক।
অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক সিলেট-৩ নির্বাচনী আসনের সম্ভাব্য এমপি পদপ্রার্থী, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ মুহাম্মদ মনির হোসাইন বলেছেন, যার জন্য আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি সেই মহান পুরুষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি। স্বরণ করছি যুক্তরাজ্য থেকে যে সকল প্রবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন, সেই দেশপ্রেমিকদের দীর্ঘায়ু কামনা করছি এবং যারা মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে এ পৃথিবী থেকে চলে গিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করণের পেছনে মূল চালিকাই হল বৈদেশিক মুদ্রা। বাংলাদেশের প্রবাসীরা তাদের হাড়ভাঙ্গা খাটুনির সব টুকু সঞ্চয় পাঠিয়েদেন জন্মভূমিতে। আর সেই অর্থেই গড়ে উঠে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তি।মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদান উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দেশের প্রবাসীদের অর্থে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ জয়ের অর্থনৈতিক সাহস পেয়েছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্য (লন্ডন) সফর করে তাঁর প্রিয় জন্মভূমিতে ফিরে গেছেন।
সাবেক এই ভিপি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু অকুন্ঠ চিত্তে সব সময় প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধামনন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবাসীদের প্রতি এতটাই কৃতজ্ঞ যে তিনি দলের সেক্রেটারী বানিয়েছিলেন একজন প্রজ্ঞা, যোগ্য সৎ ও মেধাবী ব্যক্তিত্ব সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে। মনির হোসাইন বলেন, গ্লোবাল রাজনীতিতে বাংলাদেশ এখন অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ।আর সে কারণে আমাদের দেশের রাজনীতিতে প্রবাসের রাজনীতি,অর্থনীতি, শিক্ষা, আইন, ব্যবসা, সামাজিক কার্যক্রমে যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষের অংশগ্রহন এতটা জরুরী। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যে কোনো ইস্যুতে কাজ করার মতো ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সংকট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকে একজন শেখ হাসিনা শক্তভাবে দেশের হাল ধরেছেন কিন্তু পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় তাকে কতটুকু কঠিন অবস্থায় যেতে হচ্ছে সেটাও আপনারা দেখছেন।
সাবেক ছাত্রনেতা মনির হোসাইন বলেন, এ দেশের রাজনীতিবিদরা রাষ্ট্রের পলিসি ম্যাকিংয়ে কাজ করার পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যেকটি বিষয়ে তাদের মেধাকে কাজে লাগান লোভ,লালসা এবং সকল প্রকার মোহের ঊর্ধ্বে উঠে।আমরা যারা দেশে রাজনীতি করেছি তারা জনগণের হৃদয়ের চাওয়া বুঝি।তারা কি চান আমরা সেটা বুঝেই তাদের সাথে কাজ করেছি। প্রবাসেও শিক্ষা গ্রহণ, কর্মক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি রাজনীতির নৈতিকতার যে পাঠটি রয়েছে সেই অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পেয়েছি। আমি বিশ্বাস করি দেশের ছাত্র সমাজের মনের চাওয়া, গণরাজনীতিতে জনগণের চাওয়া এবং খেটে খাওয়া মানুষগুলো কি চায় সেটা বুঝার সুযোগ পেয়েছি।এখন জনগণের জন্য কাজ করার সুযোগ পেলে আমি আমার এলাকার পরিবেশ পরিবর্তন ভূমিকা রাখতে পারবো । মনির হোসাইন বলেন, রাজনীতি কোনো পেশী শক্তির কাজ নয়। রাজনীতি গণমানুষের অধিকারকে অধিকারকে মর্যাদার সাথে প্রতিষ্ঠা করা। বঙ্গবন্ধু সেই কাজটি করেছেন। কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় করেননি। জনগণের ইচ্ছেকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে মূল্যায়ন করেছেন।
মতবিনিময় সভায় সাবেক ভিপি ও আওয়ামীলীগ নেতা মুহাম্মদ মনির হোসাই আরো বলেন, অনেকেই বলেন রাজনীতিতে সুশিক্ষিত মানুষ আস্তে চান না বলেই অশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, একশ্রেণীর সমাজ শত্রু মুখোশ পাল্টে রাজনীতির অন্দর মহলে প্রবেশ করে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তে তাদের নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তন করছে, টেন্ডারবাজি করছে। জনগণের সেবকের পরিবর্তে শোষকের পরিণত হচ্ছে। আমাদের এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের অন্তরকে বুঝেন এবং সেটার মূল্যয়ন করেন।
তিনি বলেন,মরহুম হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী বিদেশে পড়াশুনা করেছেন, কূটনৈতিক হিসেবে দাপটের সাথে দেশের জন্য কাজ করেছেন, সেই মানুষকে শেখ হাসিনা মূল্যায়ন করেছেন। আবুল মাল আব্দুল মুহিতের মতো খ্যাতিমান মানুষকে সম্মান দিয়েছেন। সৈয়দ আশরাফ সাহেবের মতো মানুষকে সম্মান দিয়েছেন। কারণ শেখ হাসিনা জানেন প্রবাসের অভিজ্ঞতার সাথে দেশপ্রেমের চেতনার ধারকদের মূল্যয়ন করলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ হাসিনার স্বপ্ন কখনো বৃথা যাবে না।
তিনি কেন সিলেট-৩ আসনে নির্বাচন করতে চান উল্লেখ করে বলেন, আমি মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ও সিলেট ল’কলেজের নির্বাচিত ভিপি ছিলাম। ছাত্র রাজনীতি করার কারণে বাবা-মা, ভাই বোনের সাথে ব্রিটেন আসিনি।দেশে কঠিন সময়ে ছাত্র সমাজের পাশে থেকেছি।ছাত্র নেতা থাকাকালীন এলাকার মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।ব্রিটেনে উচ্চ শিক্ষা, কাজের পাশাপাশি দেশের স্বার্থে পলিসি পর্যায়ে কাজ করেছি।পদ্মা সেতু নিয়ে প্রোপাগান্ডা চালানোর সময় এই ব্রিটেনে এর সম্ভাভ্যতা ও অর্থনৈতিক বিপ্লব কি হতে পারে সেটাকে তুলে সেমিনার করেছি এবং ব্রিটিশ সরকারের কাছে এর পেপারওয়ার্ক পাঠিয়েছি। আর এসবের মূল কারণই ছিল আমার দেশের উন্নতিকে তুলে ধরা। একজন বড় মাপের রাজনীতিবিদ, স্মার্ট প্রধানমন্ত্রী যেখানে আছেন সেখানে আমার মতি সত্যিকারের তৃণমূলের একজন রাজনৈতিক কর্মী মূল্যায়ন পাবে বলে আমার আস্থা রয়েছে। সভায় বক্তারা দেশে-বিদেশে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মনির হোসাইনের মতো যোগ্য প্রার্থীকে মূল্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানান।