আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক রুসলিন জুসহ এর সাথে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের বিদায়ী হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বুধবার ৪ অক্টোবর পুত্রজায়া পরিচালকের কার্যালয়ে সাক্ষাতকলে বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি কর্মীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন ।
এ ছাড়া হাইকমিশনার মহাপরিচালক, ইমিগ্রেশনকে মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবস্থায় তাঁর এবং তাঁর দপ্তরের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ।
তিনি তাঁর সময়কালে গত ডিসেম্বর ২০২১ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হওয়ার কথা জানিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বর্তমান অবস্থা জানান। বাংলাদেশী কর্মীদের বিশ্বস্ততা, কর্মনিষ্ঠা, উত্তম চারিত্রিক বৈশিষ্ট, কঠোর পরিশ্রমী হওয়ার কারনে মালয়েশিয়ার কর্ম বাজারে বাংলাদেশী কর্মীদের ব্যাপক চাহিদার কথা উল্লেখ করেন। মহাপরিচালক, ইমিগ্রেশন এ বিষয়ে একমত প্রকাশ করে জানান যে, ইতঃপূর্বে মালয়েশিয়ায় বিদেশী কর্মীর সংখ্যা বিবেচনায় বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও, রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ার আওতায় এ বছরের ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে চলে আসবে। হাইকমিশনার মালয়েশিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়ার ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে চলমান ধীরগতির কথা উল্লেখ করে মালয়েশিয়ায় নতুন বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দ্রুততার সাথে ই-ভিসা ইস্যু করার জন্য অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে মহাপরিচালক, ইমিগ্রেশন অতি শীঘ্রই টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে আগামী এক মাসের মধ্যে মালয়েশিয়ার ভিসা ইস্যূ করার ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা দূর করে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে চলমান প্রক্রিয়াকে দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার বিষয়ে হাই কমিশনারকে আশ্বাস প্রদান করেন। হাইকমিশনার ২০১৬ সালে রি-হায়ারিং প্রোগ্রামের আওতায় বৈধ হওয়া বাংলাদেশী কর্মীদের ২০২৩ সালে ভিসার মেয়াদ শেষ হবার পর ৬ ও ৭ নম্বর ভিসা প্রাপ্তিতে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিনাতিপাত করছে। এসকল কর্মীদের বর্তমানে চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে, কর্মীদের জীবনে বিরাজমান অনিশ্চয়তার অবসানে ইমিগ্রেশন মহাপরিচালকের আন্তরিক সহযোগিতার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে অভিবাসন দপ্তর মালয়েশিয়া সরকারের বিদ্যমান ভিসা নীতি অনুসরন করছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান যে, ৬ নং ভিসায় মালয়েশিয়ায় আসা বাংলাদেশী কর্মীদের বিশেষ পাসের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় বসবাস করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
হাইকমিশনার এ সময়ে এ সকল কর্মীদের মূল্যবান কর্মঅভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা আমলে নিয়ে এবং মালয়েশিয়ার বিদ্যমান কর্মী চাহিদা বিবেচনায় ২০২৩ এর জানুয়ারি থেকে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়া কর্মীদের রিক্যালিব্রেশন-২ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার আহবান জানান। মহাপরিচালক এ বিষয়টি সহানুভূতির সাথে বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে হাইকমিশনের মাধ্যমে সকল বাংলাদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়ায় বৈধ ভাবে বসবাসের জন্য আহবান জানান।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের শেষ কর্ম দিবসে আয়োজিত এই অতি গুরুত্বপূর্ণ সভার জন্য মহাপরিচালক (অভিবাসন) তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
বিদায়ী হাইকমিশনার মহাপরিচালককে বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়নে নতুন হাইকমিশনার এবং হাইকমিশনের সকলের সাথে এক যোগে, নিবিড়ভাবে কাজ করার আহবান জানান । উল্লেখ্য, হাই কমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার মালেয়েশিয়ায় তিন বছরের কার্যকাল অত্যন্ত সফলতার সাথে সমাপ্ত করে তৃতীয় বাংলাদেশী হিসাবে দক্ষিণ এশিয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)-এর মহাসচিব হিসাবে যোগদানের নিমিত্ত বুধবার রাতে মালয়েশিয়া ছেড়েছেন।
সাক্ষাতের সময় বিদায়ী হাইকমিশনারের সাথে উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি হাই কমিশনার মোঃ খোরশেদ আলম খাস্তগীর, শ্রম মিনিস্টার মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম, শ্রম কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম, কাউন্সিলর রাজনৈতিক ও দূতালয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরী এবং কাউন্সিলর, কন্স্যুলার জি এম রাসেল রানা। এছাড়াও, মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের পরিচালক (নীতি এবং পরিকল্পনা), পরিচালক(ফরেন ওয়ার্কার্স), পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) উপস্থিত ছিলেন।