মুহাম্মদ সাজিদুর রহমান :
যুক্তরাজ্যের এক কিশোরী অনলাইন মেটাভার্সে ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি গেম (ভিআর গেম) খেলার সময় ‘দলবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে। ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ওই ‘ধর্ষণের’ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাজ্য পুলিশ।
খবর অনুসারে, ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ‘ধর্ষণের’ ঘটনার অভিযোগে বিশ্বে সম্ভবত এটাই প্রথম পুলিশি তদন্ত। অভিযোগকারী কিশোরীর বয়স ১৬ বছর। ভুক্তভোগী কিশোরী পুলিশকে জানিয়েছে, ভিআর গেমে তার অবতারকে (নিজের ডিজিটাল চরিত্র) ধর্ষণ করেছে অজ্ঞাত একদল পুরুষ অবতার।
মেটাভার্সে ভিআর হেডসেট পরে ভার্চ্যুয়াল জগতে ঘুরে বেড়ানো, গেম খেলাসহ নানা কাজ করা যায়। গেম খেলার ক্ষেত্রে নিজের একটি ডিজিটাল চরিত্র (অবতার) থাকে। ভিআর গেমে এমন অনেক স্বতন্ত্র অবতার অংশ নেয়। এমনই এক গেমে একাধিক পুরুষ অবতারের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় বলেও কিশোরী অভিযোগ তুলেছে।
ভুক্তভোগী ওই কিশোরী জানিয়েছে, ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ধর্ষণের কারণে সে শারীরিক কোনো আঘাত কিংবা ক্ষতির শিকার হয়নি ঠিকই। কিন্তু ‘বাস্তব জগতে’ ধর্ষণের শিকার হওয়া যে কারও মতোই তাকে মানসিক আঘাত বা ট্রমার ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পুলিশ ভার্চ্যুয়াল জগতে সংঘটিত যৌন অপরাধের কোনো ঘটনায় এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তে নেমেছে।
পুলিশের জ্যেষ্ঠ একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ওই কিশোরী শারীরিকভাবে ধর্ষণের শিকার হয়নি, তবে বাস্তবে ধর্ষণের শিকার হওয়া ব্যক্তির মতো মানসিক আঘাত পেয়েছে। যেকোনো শারীরিক আঘাতের চেয়েও এই আঘাত বেশি সময় ধরে ভুক্তভোগীকে বয়ে বেড়াতে হবে।
তদন্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত যুক্তরাজ্য পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এই অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। কেননা, প্রচলিত আইনে এমন অপরাধের কথা নেই।
ওই ভুক্তভোগী কিশোরী কোন ভিআর গেম খেলার সময় ‘দলবদ্ধ ধর্ষণের’ শিকার হয়েছে, তা সুষ্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ধর্ষণের অভিযোগ পেয়ে পুলিশি তদন্ত শুরুর ঘটনায় সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, ওই কিশোরী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক আঘাত পেয়েছে। জেমস ক্লেভারলি বলেন, এটি বাস্তব ঘটনা নয় বলে সহজেই খারিজ করে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ভার্চ্যুয়াল পরিবেশের বিষয়টা হলো, ব্যবহারকারীরা এতে অবিশ্বাস্যভাবে নিমগ্ন থাকে।
অভিযোগের বিষয়ে মেটার মুখপাত্র বলেন, আমাদের প্ল্যাটফর্মে এমন আচরণের কোনো জায়গা নেই। সব ব্যবহারকারীর জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিতে ‘ব্যক্তিগত সীমা’ (পারসোনাল বাউন্ডারি) নামে একটি সেবা চালু আছে। এই সেবা অপরিচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীকে কয়েক ফুট দূরে রাখে। সূত্র: এনডিটিভি