এসকেএম আশরাফুল হুদা :
বৈশ্বিক ইসলামপন্থী দল হিজবুত-তাহরিরকে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। সোমবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি বলেছেন, পার্লামেন্টের চুক্তি অনুযায়ী ইসলামপন্থী দল হিজবুত-তাহরিরকে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করেছে ব্রিটেন। একই সঙ্গে ইসলামপন্থী এই সংগঠনকে ইহুদিবিরোধী হিসেবে বর্ণনা করেছে দেশটি। এর ফলে এই সংগঠনের সাথে কারও জড়িত থাকার বিষয়টি দেশটিতে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সুন্নি ইসলামপন্থী গোষ্ঠী হিজবুত-তাহরিরকে নিষিদ্ধের প্রস্তাবে ব্রিটেনের পার্লামেন্টে ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রস্তাবটি পাস হলে আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হবে। এর ফলে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা বা আইএসের মতো এই গোষ্ঠীও ব্রিটেনে নিষিদ্ধ হবে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ইসরায়েলে হামাসের এই হামলার প্রশংসা ও সমর্থন জানায় ব্রিটেনের ইসলামপন্থী দল হিজবুত-তাহরির। হামাসের হামলার কথা উল্লেখ করে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি বলেছেন, ‘‘হিজবুত-তাহরির একটি ইহুদিবিদ্বেষী সংগঠন; যারা সন্ত্রাসবাদের সক্রিয় প্রচার এবং প্রসারে উৎসাহ দেয়। গত ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ হামলার প্রশংসা এবং উদযাপন করেছে গোষ্ঠীটি।
তিনি বলেছেন, হিজবুত-তাহরির সেই হামলার প্রশংসার পাশাপাশি তাদের ওয়েবসাইটে হামাসকে ‘‘বীর’’ হিসেবে বর্ণনা করে সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ ও প্ররোচনা দিয়েছে। সংগঠনটির ইহুদিদের বিরুদ্ধে হামলার প্রশংসা ও উদযাপনের ইতিহাসও রয়েছে, যোগ করেন ক্লিভারলি।
ব্রিটেনের এই ঘোষণার বিষয়ে গোষ্ঠীটির যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক একজন প্রতিনিধির মন্তব্য চেয়ে ই-মেইল করা হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। গত মাসে হিজবুত-তাহরিরের ওয়েবসাইটে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করার আহ্বানকে ‘‘হতাশার লক্ষণ’’ বলে বর্ণনা করা হয়।
যুক্তরাজ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় দেশটিতে হিজবুত-তাহরিরের অন্তর্ভুক্ত হওয়া বা এর কার্যক্রমের প্রচার, বৈঠকের ব্যবস্থা কিংবা জনসমক্ষে সংগঠনটির লোগো বহন করা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। বিধি লঙ্ঘন করে কেউ এসব কাজ করলে দেশটিতে তার সর্বোচ্চ ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।
১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হিজবুত-তাহরিরের প্রধান কার্যালয় লেবাননে অবস্থিত। ইসলামি আইনের আওতায় খিলাফত প্রতিষ্ঠার দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য নিয়ে ব্রিটেন ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশসহ বিশ্বের ৩২টি দেশে সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিসর এবং মধ্য এশিয়া ও আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশেও সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইউরোপের দেশ জার্মানিও হিজবুত-তাহরিরকে নিষিদ্ধ করেছে।
সূত্র: রয়টার্স।