মির্জা আবুল কাসেম :
বিগত এক দশক ধরেই নিজেদের বড় কিছুর জন্য প্রস্তুত করেছিল ইংল্যান্ড। ২০১৪ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর থেকেই ইংল্যান্ডের ক্লাবগুলো মনোযোগ বাড়িয়েছিল নিজের অ্যাকাডেমির দিকে। তারই সুফল বর্তমান ইংলিশ স্কোয়াড। প্রজন্মের সবচেয়ে প্রতিভাবান দল বললেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
প্রতিটি বৈশ্বিক আসরেই শোনা যায় ইংলিশদের স্লোগান ‘ইটস কামিং হোম’। যদিও ২০১৮ বিশ্বকাপে চতুর্থ স্থান আর ২০২০ সালের ইউরোতে তাদের থামতে হয়েছে রানারআপ হিসেবে।
এবার ইউরোতেও অনেকটা খুঁড়িয়েই এতটা পথ উঠেছে ইংলিশরা। স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে জয়ের পর সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষেও খেলতে হলো পেনাল্টি শ্যুটআউট পর্যন্ত। তাতে ৫-৩ ব্যবধানে জিতে সেমির টিকিট কাটলো ইংল্যান্ড।
জার্মানির ডুসেলডর্ফে ইংল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ড দুই দলই উপহার দিয়েছে ঝিমিয়ে থাকা ফুটবল। পুরো ম্যাচে প্রথম অন টার্গেট শট এসেছে ৫০ মিনিটে এসে। সময়ের অন্যতম তুখোড় স্কোয়াড নিয়েও ইংল্যান্ডকে ভুগতে হয়েছে ফাইনাল থার্ডে এসে। হ্যারি কেইন, জ্যুড বেলিংহ্যাম, বুকায়ো সাকা, ফিল ফোডেন, কোল পালমার… মাঠে ছিলেন সবাই। তবু কোচ গ্যারেথ সাউথগেট সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে পার করেছেন উদ্বিগ্ন সময়।
প্রথমার্ধের পুরোটা সময় দুই দলই হতাশ করেছে এলোমেলো ফুটবলে। অন টার্গেট শট রাখা হয়নি কারোরই৷ এমনকি অফ টার্গেট শটও ছিল মোটে ১টা করে।
তবে মৃতপ্রায় ম্যাচে প্রাণ ফেরে ৫৪ মিনিটের পর থেকে। সুইজারল্যান্ড ম্যাচে প্রথমবার আধিপত্য বিস্তার করেছিল সেই সময় থেকে। সেই ধারার সুফল এলো ২০ মিনিট পর। সুইস ডিফেন্ডার ফ্যাবিয়ান শারের নিচু পাস ইংলিশ ডিফেন্ডার জন স্টোনের পায়ে লেগে চলে আসে ফাকায়। সুইস স্ট্রাইকার এমবোলো আলতো টোকায় বল জড়ান জালে।
গোল হজমের পরেই ইংল্যান্ডের মাঝে দেখা যায় ম্যাচে ফেরার প্রবণতা। গত ম্যাচের পর এবারেও ইংলিশরা বেঁচে যায় ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের কল্যাণে। দূর থেকে নেওয়া বুকায়ো সাকার বাঁকানো শট বারে লেগে চলে যায় জালে। ৭৫ মিনিটে সুইসদের গোলের পর ইংল্যান্ড সমতায় ফেরে ৮০ মিনিটে।
অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও ইংল্যান্ডকে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে রক্ষণের কাজে। সুইজারল্যান্ডের অভিজ্ঞ অ্যাটাকার জের্দান শাকিরি গতি বাড়ান আক্রমণের। কিন্তু গোল আসেনি তাতে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারেই হলো ম্যাচের ফয়সালা।