জুবেল আহমদ সেকেল, ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউনিয়নের সাদিখাল প্রায় এক বছর পর সবার জন উম্মুক্ত করা হলো।
চলতি বছর সিলেট জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে সাদিখালটি টোকেন মানির মাধ্যমে লিজ প্রদান না করায় সাদিখালে এলাকার মৎস্যজীবীসহ সাধারণ মানুষ মাছ ধরতে পারছেন। তবে কতিপয় কিছু মৎস্যজীবী একাধিক বেলজাল দিয়ে পোনামাছ ধরার অভিযোগ এনে— রোববার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাদিখাল নদীতে বেল জাল দিয়ে পোনা ও মা মাছ ধরছেন স্থানীয় মিন্টু দাশ, কাজল বিশ্বাস ও অরুণ বিশ্বাস সহ কয়েকজন মৎস্যজীবী। আর রিংকু নমসুত্র স্থানীয় প্রভাবশালী বেদার আহমদের কাছ থেকে ২৫,০০০ (পঁচিশ) হাজার টাকা দিয়ে জাল দিয়ে মাছ ধরছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
চলতি বছর থেকে সাদিখাল উম্মুক্ত থাকলেও কতিপয় কিছু মৎস্যজীবীরা অবৈধ বেলজাল দিয়ে পোনা ও মা মাছ ধরে বিক্রি করছে।
এতে সাদিখাল দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও সাদিখালটি উন্মুক্ত থাকলেও দীর্ঘদিন স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্র দখল করে রেখেছিলেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ উন্মুক্ত জলাশয়ে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন জাতের জাল দিয়ে অবাধে মা ও পোনা মাছ নিধন করা হয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
সরজমিন গত শনিবার সাদিখাল ঘুরে দেখা যায়, সাদিখালটিতে বর্তমানে সাদিপুর মৎস্য সমবায় সমিতির ৭২ সদস্যের কমিটির মৎস্যজীবীদের ১৪টি বেলজাল দিয়ে মাছ ধরা অব্যাহত রয়েছে। এই ১৪টি জাল দিয়ে ধরা মাছ বিক্রির টাকা সমিতির সকল সদস্যগন বন্টন করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে বলে স্থানীয় মৎস্যজীবরিা জানান।
অভিযোগকারী ইব্রাহিমপুর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য হিরন আলী বলেন, ১৯৮৭ সাল থেকে সাদিখাল উম্মুক্ত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে কিছু প্রভাবশালী চক্র ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে সাদিখাল দখল করে রেখেছিল। সাধারণ মানুষ সেসময় বরশি ও জাল দিয়ে টাকা ছাড়া মাছ ধরতে পারতনা। ছাত্রআন্দোলনের পর এখন চাঁদামুক্ত হলেও মা ও পোনা মাছ ধরা বন্ধ হচ্ছে না এ ব্যাপারে আমরা ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
সাদিপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি শুধাংসু দাস ও সাধারণ সম্পাদক রনজিত দাস বলেন, দীর্ঘদিন প্রভাবশালীর দখলে থাকার পর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসায় সাদিখাল দখলদালমুক্ত হয়ে আমরা প্রকৃত মৎস্যজীবীরা মাছ ধরতে পারছি। আমরা সমিতির ৭২ জন সদস্য সাদিখালের মৎস্য বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপমা দাশ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এব্যাপারে তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।