ইসতিয়াক হোসেন মজুমদার :
শহরের কোলাহল থেকে দূরে পাহাড়ের পাদদেশে প্রকৃতির কোলে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের অন্যতম বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানসম্মত শিক্ষা, নৈতিক মূল্যবোধ তৈরির কারখানা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়টি কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক, গণতান্ত্রিক এই প্রতিষ্ঠানের গণতন্ত্র চর্চার বড় ক্ষেত্র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-চাকসুর কার্যক্রম তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে স্থবির। ১৯৭০ সালে প্রথম চাকসু নির্বাচনের পর মাত্র ছয়বার শিক্ষার্থীরা তাঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার সুযোগ হিসেবে চাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পেরেছেন। সর্বশেষ ১৯৯০ সালে নির্বাচনের পর তা আর আলোর মুখ দেখেনি। কার্যকর ছাত্র সংসদের অনুপস্থিতির ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের টেবিলে পৌঁছাতে পারে না। যে জন্য হলের সিট বরাদ্দ, শাটলে বগি বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণে বরাবরই ব্যর্থ হয়।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টি ছাত্র রাজনীতির নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে বারবার সংবাদ শিরোনাম হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে ক্যাম্পাসে অরাজকতা কাম্য নয়। এসব কর্মকাণ্ড শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের মধ্যে ভীতির সঞ্চার করে। আমরা চাই ছাত্র সংসদের প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের দাবিদাওয়া নিয়ে কথা বলুন। অসুস্থ রাজনীতি ক্যাম্পাস থেকে বিদায় হোক।
সময়ের প্রবাহে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের চেহারা পাল্টালেও চাকসু নির্বাচন নিয়ে কখনও তাঁদের আশ্বাসের দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। উপরন্তু প্রশাসন কর্তৃক চাকসু ভবনকে কখনও কমিউনিটি সেন্টার, খাবারের ক্যান্টিন কিংবা কর্মচারী নির্বাচন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে এই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা এবং ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কার্যকর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
ইসতিয়াক হোসেন মজুমদার: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়