মির্জা আবুল কাসেম : যুক্তরাজ্যে প্রায় ৬ বছর ধরে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালনকারী সাইদা মুনা তাসনীমকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রশাসনে রদবদলের অংশ হিসেবে পেশাদার ওই কূটনীতিককে ঢাকায় বদলি করা হয়েছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ নাজমুল হক স্বাক্ষরিত এক দাপ্তরিক আদেশে সাইদা মুনা তাসনীমকে লন্ডনের দায়িত্বভার ত্যাগ করে অনতিবিলম্বে ঢাকায় ফিরতে বলা হয়েছে।
বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১১তম ব্যাচের কর্মকর্তা সাইদা মুনা তাসনীমের আগামী ২৬ ডিসেম্বর অবসর–উত্তর ছুটিতে যাওয়ার কথা রয়েছে। রেওয়াজ অনুযায়ী সাধারণ একজন কূটনীতিক কোনো মিশনে তিন বছর রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যন্ত আস্থাভাজন হওয়ায় তিনি ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর থেকে লন্ডনে হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ওই কূটনীতিক লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় বানিয়ে ফেলেছেন বলে বিএনপি–সমর্থক প্রবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন।
অবশ্য ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামিয়ে ফেলেন বিএনপি-জামায়াত সমর্থকেরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে ওই সময় সেখানে উপস্থিত মুনা তাসনিম বক্তৃতা করছেন। এরপরও পেশাদারত্বকে ছাপিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতি তাঁর বাড়তি আনুগত্যের অভিযোগ বিএনপিসহ প্রবাসীরা ভোলেননি। এ জন্য প্রবাসী বাংলাদেশি বিশেষ করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লোকজন যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার পরিবর্তনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে চিঠিপত্র এবং স্মারকলিপি পাঠিয়ে চাপ সৃষ্টি করছিলেন।
উল্লেখ্য সাইদা মুনা তাসনীম লন্ডনে হাইকমিশনারের নিয়োগ পাওয়ার আগে থাইল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কূটনীতিক হিসেবে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং লন্ডন মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। কূটনীতিক হিসেবে পরিচিত সাইদা মুনা তাসনীম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে স্নাতক এবং লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ স্কুল (সোয়াস) থেকে জননীতি এবং ব্যবস্থাপনায় এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।