রিয়াজ রহমান :
সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের রাণীনগর মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে অবৈধ মদের ভাটি (দোকান) অপসারণের দাবীতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে এলাকার মানুষ। ওইস্থানে উন্মুক্তভাবে মদের ব্যবসা চালানোর কারণে পরিবেশ দিন দিন বিনষ্ট হচ্ছে। এতে উঠতি বয়সী যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ মাদকে আসক্ত হচ্ছে।
এছাড়া অভিযোগ উঠেছে ওই মদের ভাটির রানীগঞ্জ বাজারের লাইসেন্স ব্যবহার করে রাণীনগর এলাকায় অবৈধ ভাবে ব্যবসা করছে। অবৈধ মদের ভাটি বন্ধের দাবীতে রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ইসলামপুর, রানীনগর ও আশপাশের এলাকাবাসী এক সভা করেন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাতে সভায় উপস্থিত ছিলেন তকদির মিয়া, মজনু মিয়া, আবুল হোসেন, শফিক মিয়া, মখলিছ মিয়া, মজমিল মিয়া, পরাছ মিয়া, আনোয়ার মিয়া, ডা. সুষেন, জয়চান, নুরুল আমিন, কাবিল, শচিন্দ দাস, যুগল বিশ্বাস, নিপেন্দ্র, আব্দাল মিয়া, সাইদুল আমিন, জামশেদ মিয়া, মিজানুর রহমান,আশরাফুল আলম, জাকির মিয়া, গোবিন্দ বিশ্বাস, শ্যামল রবি দাশ, ইরু বিশ্বাস, দিরু বিশ্বাস, বিমল চন্দ্র দাস, অরুন বিশ্বাস, দিবাংশু চন্দ, রনি দাশ, ছইল উদ্দিন, দিলোয়ার হোসেন, আলী হোসেন, আবেদ আলী, জমিদার মিয়া, নজির মিয়া, নিরঞ্জন বিশ্বাস, সাইফুর রহমান, সাদিকুর রহমান, নোমান মিয়া, আরিফুল ইসলাম, শামসুল হক প্রমূখ।
উপস্থিত এলাকাবাসী জানান, ১৪ অক্টোবর রানীনগর মদের ভাটি (মদের দোকান) সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে ৭৪৮ লিটার মদ সহ মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল থানার দক্ষিন ভাড়াউড়া গ্রামের মৃত নিরঞ্জন বিশ্বাসের দুই ছেলে নির্মল বিশ্বাস ও মিলন বিশ্বাসকে আটক করে জগন্নাথপুর সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেনা ক্যাম্প থেকে থানায় হস্তান্তর করেন।পরে আদালতের মাধ্যমে জামিনে আসে তারা।সেনাবাহিনীর অভিযানের পর মদের ভাটিটি সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়। এলাকাবাসী আরোজানান, অবৈধ মদের ভাটি এলাকায় অনেকেই বসতবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছে।
আশপাশে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং রানীনগর জামে মসজিদ এ এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত কোমলমতি শিক্ষার্থী, শ্রমিক-কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ যাতাযাত করে থাকে। আর মদ্যপাযীরা মদপান করে প্রকাশ্যে মাতলামি করার কারণে সামাজিক পরিবেশ কুলষিত হচ্ছে। রানীনগর মসজিদ প্রাঙ্গন, রাস্তায় ও আশেপাশের এলাকায় মদের খালি বোতল ফেলে রাখার ফলে দিন দিন এ অঞ্চলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
শুধু তাই নয় সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে ভাটির মালিক উপজেলার বিভিন্ন অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতিদিন শত শত লিটার বিভিন্ন ধরণের মদ বিক্রি করছে। এছাড়া রানীনগরসহ আশপাশের গ্রামের বিভিন্ন সহজ সরল মানুষের নামে মদ ভাটির পরিচালক তাদেরকে অবগত না করে মদ খাওয়ার লাইসেন্স তৈরী করে মদ বিক্রয় করছে।
প্রতিদিন অবৈধ মাদক ব্যবসাযীরা এই মদের ভাটি থেকে মদ নিয়ে মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন যানবাহনে করে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে পুরো উপজেলায় মাদকাসক্তির সংখ্যা বিপদজনক হারে বাড়ছে। সামাজিক অবক্ষয় এবং অপকর্মরোধে এলাকার স্বার্থে মদের ভাটিটি বন্ধ বা অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা গ্রহনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন রাণীনগর ও ইসলামপুর গ্রামের জনসাধারন।