মির্জা আবুল কাসেম :
যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৭ জনই রোগীর প্রতি প্রয়োজনীয় সহমর্মিতার অভাবে ভুগছেন। দেশটির চার অঙ্গরাজ্য ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ১ হাজার ৮৫৫ জন চিকিৎসকের ওপর পরিচালিত এক জরিপ থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
দেশটির চিকিৎসক ও দন্ত চিকিৎসকদের অন্যতম সংস্থা মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল ডিফেন্স ইউনিয়ন অব স্কটল্যান্ডের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়েছে জরিপটি। জরিপে অংশ নেওয়া চিকিৎসকদের অধিকাংশই স্বীকার করেছেন, অসুস্থ রোগীদের প্রতি যথাযথ সহমর্মিতা-সহানুভূতির অভাবে তারা ভুগছেন। এর কারণ হিসেবে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি, ত্রুটিপূর্ণ ও প্রতিকূল কর্মপরিবেশকে দায়ী করেছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, রোগীর প্রতি সহমর্মিতা-সহানুভূতি চিকিৎসা পেশার একটি জরুরি অঙ্গ। চিকিৎসক যদি রোগীর সঙ্গে সহানুভূতিশীল আচরণ করেন, সেক্ষেত্রে রোগীরা এক ধরনের মানসিক শক্তি পান, যা তাদের দ্রুত আরোগ্য হয়ে উঠতে সহায়তা করে। তাই চিকিৎসা শাস্ত্রের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ছাত্রাবস্থাতেই এ ব্যাপারটি রপ্ত করতে হয়।
যুক্তরাজ্যে দুই ধরনের চিকিৎসক রয়েছেন— জেনারেল প্র্যাকটিশনার বা সাধারণ চিকিৎসক (জিপি) এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সংস্থা মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল ডিফেন্স ইউনিয়ন অব স্কটল্যান্ডে জরিপে জিপি এবং বিশেষজ্ঞ— উভয় পর্যায়ের চিকিৎসক অংশ নিয়েছেন।
জরিপের ফলাফল বলছে জিপিদের মধ্যে ৭১ শতাংশ এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মধ্যে ৬২ শতাংশ স্বীকার করেছেন যে তারা রোগীদের প্রতি প্রয়োজনীয় সহানুভূতির অভাব বোধ করেন। এই চিকিৎসকদের প্রায় সবারই বয়স ২৫ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে।
পারিবারিক চিকিৎসকদের অবস্থা এক্ষেত্রে সবচেয়ে বাজে। ব্রিটেনের চিকিৎসক নেতা জন হোল্ডেন এর কারণ সম্পর্কে বলেন, পারিবারিক চিকিৎসকদের দীর্ঘদিন ধরে একই রোগীকে দেখতে হবে, সেবা দিতে হয়। এ কারণে অনেক সময় এক ঘেঁয়েমিতে ভোগেন তারা।
তবে জরিপে অংশ নেওয়া চিকিৎসকদের ৪৪ শতাংশ বলেছেন, তারা নিজেদের এই ঘাটতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। কারণ তাদের আশঙ্কা, এই ঘাটতি ভবিষ্যতে কোনো না কোনো সময় তাদেরকে বড় ভুলের দিকে চালিত করবে।
সূত্র : এএফপি