সাজিদুর রহমান,
জগন্নাথপুর টাইমস ডেস্ক :
সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল কে এম শফি উল্লাহর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত একাত্তরের রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা।
যুক্তরাজ্যে বসবাসরত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান খান এবং লোকমান হোসেন এক শোকবার্তায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ঊষালগ্নে কে এম শফি উল্লাহ পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর কর্মরত অফিসার থাকা অবস্থাতেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। নয় মাসের মরনপণ যুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের অধীনে তিনি যুদ্ধ করেন এবং তিন নাম্বার সেক্টরের নেতৃত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৭২ সালে সরকার তাঁকে বীর উত্তম খেতাবে সম্মানিত করে। দেশ মুক্ত হবার পর তিনি স্বাধীন দেশের প্রথম সেনা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি কূটনীতিক এবং সংসদ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।’
তারা সদ্য প্রয়াত সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল কে এম শফি উল্লাহকে স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা বৃটেনে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম শফি উল্লাহর আত্মার চির শান্তি কামনা করছি। পরম করুণাময়ের কাছে দোয়া করি তিনি যেন মরহুমকে বেহেস্ত নসীব করেন। তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।’
উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে সফিউল্লাহ ছিলেন জয়দেবপুরে দ্বিতীয় ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের দ্বিতীয় প্রধান। তার নেতৃত্বেই ওই রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যরা বিদ্রোহ করে।মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ‘বীর উত্তম’ খেতাব পান। ১৯৩৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জন্ম নেওয়া কে এম সফিউল্লাহ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।
সফিউল্লাহ ১৯৯৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং ১৯৯৬ সালে নৌকা প্রতীবে নির্বাচন করে নারায়ণগঞ্জ ১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
১৯৭৫ সালে একদল সেনাসদস্য যখন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে হত্যা করে, সফিউল্লাহ তখন সেনাপ্রধানের দায়িত্বে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খন্দকার মোশতাক আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত সরকারের প্রতি তিনি আনুগত্যও প্রকাশ করেছিলেন। তবে কয়েক দিনের মধ্যে তাকে সেনাপ্রধানের পদ হারাতে হয়।
সফিউল্লাহ অবশ্য পরে বলছিলেন, তিনিসহ ওই সময়কার বিমানবাহিনী প্রধান ও নৌবাহিনী প্রধানকে ‘বাধ্য হয়ে’ মোশতাক সরকারের প্রতি সমর্থন দিতে হয়েছিল।
ReplyForward |
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি