জুবেল আহমদ সেকেল, ওসমানীনগর প্রতিনিধি:
সিলেটের ওসমানীনগরে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন উপজেলাবাসী। গরমে হাঁসফাঁস করা গৃহিণী, অন্ধকারে পড়াশোনায় বিঘ্নে পড়া শিক্ষার্থী, ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানি কিংবা হাসপাতালে ভোগান্তিতে থাকা রোগী—সবাই একই প্রশ্ন তুলছেন: “এই ভোগান্তির শেষ কোথায়?
প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েক দফা বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। কখনও একটানা ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় বিকল্প ব্যবস্থার অভাবে গ্রামীণ মানুষ বেশি বিপাকে পড়ছেন।
তাজপুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আশফাক আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“আমি ডিগ্রি ৩য় বর্ষে পড়ি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আমার ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু কদিন ধরে পড়তে বসলেই বিদ্যুৎ চলে যায়। আমরা ঠিকঠাকভাবে পড়াশোনাটাও করতে পারছি না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিদ্যুতের সংকটের পাশাপাশি সেবার ঘাটতিও বাড়ছে কর্মচারীদের অনুপস্থিতির কারণে। পল্লী বিদ্যুতের সিস্টেম সংস্কার ও আরইবির শোষণ-নিপীড়ন থেকে মুক্তির দাবিসহ ৪ দফা দাবিতে অফিসের ৭৭ জন কর্মচারীর মধ্যে ৫৬ জনই একযোগে ছুটিতে গেছেন। যারা আছেন, তারাও নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত হন না।
ফলে গ্রাহকদের অভিযোগ শোনা বা সমস্যা সমাধানের বদলে ভোগান্তিই বেড়েছে। কয়েকজন গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমরা মাসে মাসে বিল পরিশোধ করি, কিন্তু প্রয়োজনের সময় বিদ্যুৎ অফিসে কাউকে পাওয়া যায় না। সমস্যার কথা বলার মতোও কেউ নেই।
এই দুরবস্থা ঘরে বসে আর সহ্য করছেন না সাধারণ মানুষ। ফেসবুকের স্থানীয় গ্রুপগুলোতে প্রতিদিনই লোডশেডিং নিয়ে অসংখ্য পোস্ট ও মন্তব্য দেখা যাচ্ছে। অনেকেই বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বহীনতাকে ‘গণ ছুটি সংস্কৃতি’ আখ্যা দিচ্ছেন।
গোয়ালাবাজার আদর্শ সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিংবডির সাবেক সভাপতি আব্দুল জলিল জিলু বলেন,একদিকে লোডশেডিং, অন্যদিকে কর্মচারীদের অনুপস্থিতি—দুটো মিলে ওসমানীনগরবাসীর জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
লোডশেডিংয়ের কারণ জানতে চাইলে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. নাইমুল হাসান বলেন,বিদ্যুতের কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। তাছাড়া কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে গণছুটিতে গেছেন। ফলে লোকবল সীমিত থাকায় লাইনে ফল্ট হলে সমাধান করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।