সাজিদুর রহমান, জগন্নাথপুর টাইমস ডেস্ক :
ব্রিটেনের বাংলাদেশী কমিউনিটির সাফল্যগাঁথা ও অগ্রযাত্রার চিত্র ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের হুজহু প্রকাশনায় ফুটে উঠে। দীর্ঘ ষোলবছর ধরে এই প্রকাশনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশী কমিউনিটির সঙ্গে ব্রিটেনের মূলধারায় সেতুবন্ধন তৈরী করতে এবং পেয়েছে সফলতাও। এই প্রকাশনা তরুণ প্রজন্মের মাঝে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা সঞ্চার করবে।
মঙ্গলবার(১৮ নবেম্ভর) লন্ডনের অভিজাত ভেন্যু মেরিডিয়ান গ্র্যান্ড হলে ‘ব্রিটিশ-বাংলাদেশী হুজহু’র প্রকাশনা ও এওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান অনুষ্ঠানের ১৬তম আসরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন হাউস অফ লর্ডসের সদস্য ও অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্যারোনেস পলা উদ্দিন।
তিনি তাঁর বক্তব্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জনকারী ব্যক্তিদের আলোকপাত করার জন্য প্রকাশনাটিকে সাধুবাদ জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, এ বছরের সংস্করণে সাতজন বিশিষ্ট ব্রিটিশ-বাংলাদেশিকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে, যাঁদের অর্জন ভবিষ্যত প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ জজ সাপনারা খাতুন, চেস্টারের লর্ড মেয়র কাউন্সিলর শেরিন আখতার, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার কাউন্সিলর সুলুক আহমেদ, ওয়ারিংটনের মেয়র কাউন্সিলর মোয়াজ্জেম হুসেইন, কেম্পস্টন টাউন কাউন্সিল বেডফোর্ডের মেয়র কাউন্সিলর আলী আকবর, হারিঙ্গের মেয়র কাউন্সিলর আহমেদ মাহবুব, ব্যারিস্টার আনিস রহমান, চ্যানেল এস-এর প্রতিষ্ঠাতা মাহি ফেরদৌস জলিলসহ কমিউনিটির অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এবারের প্রকাশনার মোড়ক আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করেন- চ্যানেল এস- এর প্রতিষ্ঠাতা মাহি ফেরদৌস জলিল, হুজহু’র প্রতিষ্ঠাতা আব্দুল করিম গনি, পার্ল অ্যাডভার্টাইজিংয়ের পরিচালক আহাদ আহমেদ, নির্বাহী সম্পাদক সুহানা আহমেদ, ব্যারিস্টার আনোয়াার মিয়া, ব্যারিস্টার নাদিয়া আলী ও হাফসা নূর।
এ বছরের প্রকাশনায় মোট ২৭২ জন ব্রিটিশ-বাংলাদেশির সাফল্যের গল্প অন্তর্ভুক্ত হয়েছে- যেখানে উদীয়মান প্রতিভাদের অবদানও বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তৃতীয় প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অন্তর্ভুক্তি প্রকাশনাটিকে আরও সমৃদ্ধ করেছে এবং কমিউনিটির নবীনদের উদ্ভাবনী অর্জনকে দৃশ্যমান করেছে।
এ বছরের এওয়ার্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছেন- ড. রিফাত এইচ. মজুমদার (চিকিৎসা), মো. কামরুল হাসান (আইন), শাহেদ আহমেদ ( ক্যাটারিং ও প্রপার্টি), কাউন্সিলর নাদিয়া শাহ ( রাজনীতি ও সমাজসেবা),
মো. হারুন মিয়া ( ফাইন্যান্স ও পর্যটন), আব্দুস সামাদ (ব্যবসা) ও আফরোজ মিয়া ( চ্যারিটি)।
অনুষ্ঠানে ড. রিফাত এইচ. মজুমদারের হাতে এওয়ার্ড তুলে দেন নিকিতা মূলচাঁদানি, আব্দুল করিম গনি ও কাউন্সিলর আলী আকবর, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কামরুল হাসানকে এওয়ার্ড প্রদান করেন- ব্যারোনেস পলা উদ্দিন, মাহি ফেরদৌস জলিল ও মোহাম্মদ আলী, শাহেদ আহমেদকে এওয়ার্ড তুলে দেন কাউন্সিলর সুলুক আহমেদ, আব্দুল হক (পার্পল-আই) ও তারেক মাহমুদ (এপেক্স অ্যাকাউন্টেন্সি), কাউন্সিলর নাদিয়া শাহকে এওয়ার্ড তুলে দেন জজ সাপনারা খাতুন, সেলিম হোসেন এমবিই, জোরিদ মিয়া ও সাইদুর রহমান রানু, মো. হারুন মিয়াকে এওয়ার্ড তুলে দেন- কাউন্সিলর সুলুক আহমেদ, কাউন্সিলর আলী আকবর, ডেভিড রোয়েস্টন এন্ড জান (স্কয়ার মাইল ইন্স্যুরেন্স), কাজী আরিফ ও আহমেদ উস সামাদ চৌধুরী। আব্দুস সামাদ এওয়ার্ড গ্রহণ করেন কাউন্সিলর আহমেদ মাহবুব, কাউন্সিলর মোয়াজ্জেম হুসেইন, কাউন্সিলর শেরিন আখতার, মোহাম্মদ কুদ্দুস ও প্রভু সেরুমাদারের কাছ থেকে এবং আফরুজ মিয়াকে এওয়ার্ড তুলে দেন- ব্যারোনেস পলা উদ্দিন, জান চৌধুরী, এম. সৈয়দ আলতাব ও মোহাম্মদ ফারুক রশিদ।
এবারের এওয়ার্ডপ্রাপ্তরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, হুজহু- এর এওয়ার্ডপ্রাপ্তি তাঁদের জন্য গর্ব ও সম্মানের, যা তাঁদের কাজের একটি মূল্যবান স্বীকৃতি। প্রকাশনাটির সূচনা থেকেই ব্রিটিশ -বাংলাদেশি কমিউনিটির পথিকৃৎদের কীর্তি সংরক্ষণ করে আসছে- যা ভবিষ্যত প্রজন্মকে কমিউনিটির ইতিহাস জানার সুযোগ দেবে।
সম্পাদক আব্দুল করিম গনি বলেন, ব্রিটেনের সমাজে সিনিয়র ও তরুণ প্রজন্মের ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন, তা এই প্রকাশনার মাধ্যমে সহজেই অনুধাবন করা যায়।
নির্বাহী সম্পাদক সুহানা আহমেদ বলেন, “ হুজহু’র প্রকাশনা ও গালা অনুষ্ঠান এখন ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অত্যন্ত পরিচিত ও প্রতীক্ষিত একটি আয়োজন। আমি নিজেও প্রতিবছর প্রোফাইলগুলো পড়ার ও অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় থাকি। এই প্রকাশনার উদ্দেশ্য দুটি- প্রথমত, কমিউনিটির বিশেষ করে তরুণদের জন্য অনুকরণীয় রোল মডেল তুলে ধরা; দ্বিতীয়ত, এমন এক সময়ে যখন সমাজের কিছু অংশ অভিবাসনের মূল্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তখন ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অসামান্য অবদানকে সামনে আনা।”
পুরো প্রকাশনা অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ব্যারিস্টার নাদিয়া আলী এবং ব্যারিস্টার আনোয়ার মিয়া।
জমকালো এই অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তুলতে আয়োজন করা হয় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এসময় বরেণ্য কন্ঠশিল্পী আলাউর রহমান ও বীথি চৌধুরীর সঙ্গীত পরিবেশনা সবাইকে আনন্দ জোগায়।
হুজহু প্রকাশনার এবারের মিডিয়া পার্টনার ছিল- চ্যানেল এস, জি টেন ডিজাইন এন্ড প্রিন্টার্স ও আমেজী মিডিয়া। পুরো অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগীতায় ছিল মেরিডিয়ান গ্রান্ড, ইভেন্ট পরিচালনায় পার্ল এডভারটাইজিং এবং একমাত্র চ্যারিটি পার্টনার হিসেবে ছিল- যাইমাহ ফাউন্ডিং প্রভার্টি ।
তাছাড়া এবার স্পন্সরে ছিল- ইউরো ফুড গ্রæপ, স্কয়ার মাইল ইনস্যুরেন্স, পারফল আই লিমিটেড, প্রাইম স্টেইট এজেন্ট, কিচেন এন্ড বাথরুম লিমিটেড, ড্রিম স্পা, এপেক্স একাউন্টেন্সী, মিড নাইট গার্ডেন।
এছাড়াও বিজ্ঞাপন সহযোগিরা হচ্ছে- ওয়াক পারমিট ক্লাউড, ট্যালেন্টিফাই স্টেইট এজেন্ট, এফবিএ ইউকে লিমিটেড, ইমপ্রেস মিডিয়া, ছাফকো ফাইন ফুড লিমিটেড, কামলা, এবং কুশিয়ারা ট্রেভেলস।
