জগন্নাথপুর টাইমসশনিবার , ২২ নভেম্বর ২০২৫, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

উদ্যোক্তা ও সমাজসেবক আব্দুস সামাদের ব্রিটিশ বাংলাদেশি হুজ হু ২০২৫ সম্মাননা অর্জন

Jagannathpur Times Uk
নভেম্বর ২২, ২০২৫ ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মির্জা আবুল কাসেম, জগন্নাথপুর টাইমস ডেস্কঃ

ব্রিটিশ বাংলাদেশি প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোক্তা ও সমাজসেবক আব্দুস সামাদ হুজ হু ২০২৫ সম্মাননা অর্জন করেছেন ।

লন্ডনের মেরিডিয়ান গ্র্যান্ডে গত ১৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হলো ব্রিটিশ বাংলাদেশি হুজহু ২০২৫–এর ১৬তম প্রকাশনা ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান।
বাংলা মিরর গ্রুপের এ আয়োজন প্রতি বছরই ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির অনুকরণীয় সাফল্যকে সামনে আনে। এবার উদ্যোক্তা ও মানবকল্যাণে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি পেয়েছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি উদ্যোক্তা ও সমাজসেবক আব্দুস সামাদ।

ব্রিটিশ বাংলাদেশি হুজহু ২০২৫–এর অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে ব্রিজবাংলা নিউজ এর সম্পাদক শাহ বেলাল বলেন, ব্রিটেনে কমিউনিটিতে এই প্রজন্মে আব্দুস সামাদের মতো উদ্যোক্তা কম দেখা যায়। তাঁর জীবনকাহিনি নতুন উদ্যোক্তা ও তরুণদের পরিষ্কার বার্তা দেয়—সততা, নিবেদন এবং মানুষের পাশে থাকার ইচ্ছা থাকলেই সাফল্য স্থায়ী হয়। সম্মাননাটি শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং পুরো ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির গর্ব।

এ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবন, সমাজ ও প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগে নেতৃত্ব এবং মানবিক কাজের ধারাবাহিকতাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে এ বছরের অন্যতম আলোচিত বিজয়ী করে তুলেছে। একজন সফল উদ্যোক্তা, নিবেদিত সমাজকর্মী এবং মানবতার পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠ—এই ত্রিমাত্রিক পরিচয়ই আব্দুস সামাদকে আলাদা করে। প্রযুক্তি, ব্যবসা, শিক্ষা ও মানবিক উদ্যোগকে একই সুতোয় গেঁথে তিনি যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা তাঁকে ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির অনুপ্রেরণাদায়ক নেতৃত্বে পরিণত করেছে।

আব্দুস সামাদের প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোক্তা যাত্রা :
২০০৫ সালে তিনি চালু করেন Curry London—যুক্তরাজ্যের শুরুর দিকের অনলাইন ফুড-টেক প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি। সে সময় অনলাইন ফুড ডেলিভারি ধারণা খুব পরিচিত ছিল না, কিন্তু তাঁর উদ্যোগ রেস্তোরাঁ শিল্প ও গ্রাহকের মধ্যে আধুনিক সংযোগ তৈরি করে। এখান থেকেই দক্ষিণ এশীয় উদ্যোক্তা সমাজে তিনি উদ্ভাবকের পরিচয় পান।

পরে তাঁর ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত হয় বীমা, রিয়েল এস্টেট, হসপিটালিটি, প্রাইভেট হায়ার এবং প্রযুক্তি খাতে। ২০০৯ সাল থেকে তিনি Vintage Accident Management Group (VAMG)–এর সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকসেবা, পেশাদারিত্ব এবং কমিউনিটির প্রতি দায়বদ্ধতার জন্য স্বীকৃতি অর্জন করেছে।

সংকটকালে মানবিক উদ্যোগ :
মেডএক্স–ইউকে লিমিটেড, যা তিনি ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠা করেন, করোনা মহামারির সময় অসংখ্য প্রাইভেট–হায়ার ড্রাইভারের পাশে দাঁড়ায়। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া ৮০–এর বেশি ড্রাইভারকে বিনামূল্যে গাড়ি প্রদান করে প্রতিষ্ঠানটি মানবিক সহযোগিতার অনন্য উদাহরণ স্থাপন করে।

একইভাবে আল–বারাকাহ ইনভেস্ট লিমিটেডের মাধ্যমে তিনি সাশ্রয়ী আবাসন, কর্মসংস্থান এবং টেকসই নগরায়ণে বিনিয়োগ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন।

২০১৪ সালে তিনি Love2Laundry–এর সহ–প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে যুক্ত হন। বর্তমানে এই সেবা যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডসে পরিচালিত হচ্ছে।

ফিউচারদেশ: গ্রামীণ অর্থনীতির নতুন দিগন্ত :
২০২৪ সালে তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প ফিউচারদেশ আত্মপ্রকাশ করে। শেয়ার্ড–প্রোফিট মডেলে পরিচালিত এই ফিনটেক প্ল্যাটফর্মে যুক্ত আছেন ৭০০–এর বেশি গ্রামীণ উদ্যোক্তা, কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ১৩০ জন সামাজিকভাবে সচেতন বিনিয়োগকারী।

কৃষি, উৎপাদন, টেক্সটাইল, খুচরা বিক্রয়সহ নানা খাতে ফিউচারদেশ একটি বৃত্তাকার ও টেকসই গ্রামীণ অর্থনৈতিক কাঠামো তৈরি করছে। নারী উদ্যোক্তা, যুবসমাজ এবং ছোট কৃষকদের ক্ষমতায়নে এটি ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচিত হয়েছে।

শিক্ষা ও সমাজসেবায় ধারাবাহিক ভূমিকা:
আব্দুস সামাদ শুধু ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেই নয়, সমাজসেবাতেও সক্রিয়। তাঁর প্রতিষ্ঠিত আব্দুস সামাদ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের কালাম এন্ড সামাদ হাই স্কুল, এএফকে ট্রাস্ট ইসলামিক এডুকেশন সেন্টার এবং আনসারুন নেছা অরফানেজে শিক্ষার্থীদের আবাসন, খাদ্য ও শিক্ষার মান উন্নত করতে কাজ করছে।

যুক্তরাজ্যে তিনি ছিলেন বেঙ্গলি ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপারসন (২০১৪–২০১৯)। বয়স্কদের যত্ন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই তাঁর কর্মকাণ্ড প্রশংসিত হয়েছে। পাশাপাশি ওয়েস্ট ইউস্টোন প্রজেক্ট লিমিটেডে পরিচালক হিসেবে সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে কাজ করেছেন।

বাংলাদেশেও তিনি শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বড় ভূমিকা রাখছেন। নিজ জন্মভূমি সিলেটের গুলাপগঞ্জ লক্ষণাবন্দ এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছেন একাধিক স্কুল, মাদ্রাসা ও মসজিদ।

আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তায় সক্রিয় অংশগ্রহণ :
দুর্যোগ–সঙ্কটে তিনি ছিলেন সামনের সারির মানুষ। গ্রেনফেল টাওয়ার দুর্ঘটনা, কোভিড–১৯, গাজা, পাকিস্তান, মরক্কো ও সিরিয়ার মানবিক বিপর্যয়ে তিনি ফাউন্টেন অব মার্চি ও ক্যাপ ফাউন্ডেশনসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছেন।

কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ–এর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাজ্য–বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়ন ও কমিউনিটির সংযোগ বাড়াতেও ভূমিকা রাখছেন।

হুজ হু অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সামাদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁর দুই মেয়ে আবেগভরা কণ্ঠে বাবার পরিশ্রম, ধৈর্য এবং মানুষের প্রতি আন্তরিকতার কথা বলেন।

আরও যাঁরা সম্মাননা পেয়েছেন– এবারের আসরে সম্মাননা পেয়েছেন আরও কয়েকজন কৃতী ব্যক্তিত্ব—
শাহেদ আহমেদ (হসপিটালিটি ও রিয়েল–এস্টেট), ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কামরুল হাসান (আইন), ড. রিফাত এইচ মজুমদার (চিকিৎসা), মোহাম্মদ আফরুজ মিয়াহ BEM (চ্যারিটি ও কমিউনিটি), এমডি হারুন মিয়াহ (ফাইন্যান্স), কাউন্সিলর নাদিয়া শাহ (রাজনীতি ও দাতব্য কাজ)

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।