এস কে এম আশরাফুল হুদা :
সাফল্যের অদম্য বাসনা,পরিশ্রম আর একাগ্রতা- প্রকৃতি প্রদত্ত মেধার সঙ্গে কেউ যদি এসব গুণাবলির সংমিশ্রণ ঘটাতে পারলে সফলতা ঠেকায় কে!
তরুণ ব্রিটিশ বক্সার হামজা উদ্দীনের দেশসেরা হওয়ার গল্পটাও অনেকটা এমন। শৈশব থেকেই বিশ্বসেরা বক্সার হওয়ার তীব্র বাসনা লালন করতেন মনে।অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পরিশ্রম করে গেছেন শুরু থেকে।ক্সিংয়ে দুনিয়ায় রাজত্ব করতেই যে এসেছেন সেটি ইতিমধ্যেই প্রমাণ করেছেন ইংল্যান্ডের ছোট্ট শহর ওয়লাসওয়াল বেড়ে উঠা এই তরুণ। বয়স সবে মাত্র ১৯ পেরিয়েছে,তবে এরই মধ্যে তার অর্জনের ঝুলিতে শোভা পাচ্ছে সাত সাতটি ন্যাশনাল টাইটেল!
সর্বশেষ গত ১৮ মে ২০২৩ ইংল্যান্ড ন্যশনানল আ্যমেচার চ্যাম্পিয়নশীপের টাইটেল দ্বিতীয়বারের মতো জিতেন হামজা।আর তাতেই গড়েন নতুন রেকর্ড।
প্রতিযোগিতাটির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ বক্সার হিসেবে দুই দুইবার মর্যাদাপূর্ণ এই টাইটেল জেতার অনন্য মাইলফলক অর্জন করলেন এই তরুণ। অনূর্ধ্ব ৫১ কেজি ফাইনালে হাড্ডাহাডি লড়াইয়ে তার কাছে পরাজিত হয় আরেক চ্যাম্পিয়ন হুসাইন আবু। টানা দুইবার এই প্রতিযোগিতা জেতা ছাড়াও চারবার ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ ও একবার জিবি টাইটেলও জিতেছেন হামজা।
সাত নম্বর টাইটেল জেতার পর নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে স্বপ্নবাজ এর তরুণ জানান, এটা আমার জন্য অসাধারণ এক অনুভূতি। দীর্ঘদিন ধরে এটি অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছিলাম। এত দ্রুত ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখাতে পারবো সেটি কখনো ভাবিনি।
বক্সিং রিংয়ে ভয়ডরহীন পারফরম্যান্সের জন্য ইতিমধ্যেই বাহবা কুড়িয়েছে পন্ডিতদের কাছ থেকে।প্রতিপক্ষের শক্তি-দুর্বলতা বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, আগ্রাসী মনোভাব ও হার না মানা মানসিকতার কারণে তাকে ভাবা হচ্ছে ব্রিটিশ বক্সিংয়ের ভবিষ্যৎ হিসেবে।অনেকের কাছে হামজা ব্রিটিশ কিংবদন্তী বক্সার প্রিন্স নাসিমের যোগ্য উত্তরসূরী।
এই তুলনা যে বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করছেন হামজা তা জানা গেল তার কথায়, এটি আমার জন্য অনেক গর্বের ও সম্মানের। ছোটকাল থেকেই তার মত হওয়ার স্বপ্ন দেখে আসছি। ক্যারিয়ার শেষে বক্সিং রিংয়ে তার মতো আমিও নিজের ছাপ রেখে যেতে চায়।
বিশ্বসেরা বক্সার হওয়ার স্বপ্নে বিভোর এই তরুণ অবসরের আগে নিজেকে এমন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান যাতে দেশের হাজারো শিশু-কিশোর ও তরুণ তাকে দেখে স্বপ্নজয় করতে শিখে।