জুবেল আহমদ সেকেল, ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি :
ওসমানীনগরে প্রেমিকার প্রতারণা, প্রবাসী যুবকের আত্মহত্যার
অভিযোগ; থানায় মামলা ।
প্রেমিকার প্রতারণা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন পর্তুগাল প্রবাসী সিলেটের
ওসমানীনগরের দয়ামীর ইউপির খাগদিওর গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম সাজু
(২৫)।
গত ১৬ মে তিনি পর্তুগালে আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার গত শনিবার রাতে লাশ দেশে
পৌছালে পরদিন দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় সাজুর মা আছিয়া বেগম বাদী হয়ে মা-
মেয়েকে আসামী করে ওসমানীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, গত প্রায় ৫ বছর আগে ওমানে পাড়ি দেন সাজু। এর পর সেখান থেকে গ্রীস
হয়ে পর্তুগাল গিয়ে প্রায় ৩ বছর ধরে বসবাস করছেন। বিদেশ যাওয়ার আগ থেকেই
পাশ্ববর্তী তাজপুর ইউনিয়নের দুরাজপুর গ্রামের লুৎফুর রহমানের মেয়ে লুৎফা বেগমের
(২০)সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পর্তুগাল থাকাবস্থায় সাজু প্রেমিকা লুৎফার
পরিবারের সাথে আলোচনা করে ভিডিও কলের মাধ্যমে লুৎফাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর লুৎফাকে
সরাসরি পর্তুগালে নেয়ার ব্যবস্থা না থাকায় স্টুডেন্ট ভিসায় ইংল্যান্ডে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু
করেন। উদ্দেশ্য ছিল ইংল্যান্ডে চলে গেলে সেখান থেকে লুৎফাকে পর্তুগালে নিয়ে যাবেন। এই
উদ্দেশ্যে লুৎফাকে আইইএলটিএস কোর্স করানোসহ প্রায় ১৪লাখ টাকা ব্যয় করে প্রস্তুতি
গ্রহণ করেন। কিন্তু এতকিছু করার পরও লুৎফা তার মায়ের প্ররোচনায় অন্য একজনের সাথে
কন্ট্রাক্ট ম্যারিজের মাধ্যমে ইংল্যান্ডে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় এবং এরপর থেকে লুৎফা ও তার মা
সাজুর সাথে খারাপ আচরণ শুরু করে। সাজু তার প্রেমিকার এই প্রতারণা সইতে না পেরে
গত ১৬ মে বাংলাদেশ সময় ৩টার দিকে পর্তুগালে তার শয়ন কক্ষের দেয়ালে থাকা লোহার স্ট্যান্ডের
সাথে দরজার ফর্দা দ্বারা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে মারা যান। এই ঘটনা জানাজানির
পর সর্বত্রই নিন্দার ঝড় বইছে এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এর
বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত শনিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে সাজুর লাশ দেশে পৌছালে
রবিবার সকালে তার দাফন সম্পন্ন হয়। লাশ দাফন করার পরদিন সাজুর মা বাদি হয়ে লুৎফা বেগম
ও তার মা’কে আসামী করে ওসমানীনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন( মামলা নং-২০)।
সাজুর মা আছিয়া বেগম বলেন, আমার ছেলে সাজু লুৎফা বেগমকে মোবাইল ফোনে বিয়ে
করে। লুৎফাকে ইংল্যান্ডের নেয়ার জন্য আইএলটিএসসহ সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করলে লুৎফা
আমার ছেলের সাথে প্রতারণা করে। এমন প্রতারণার সইতে না পেরে আমার ছেলে আত্মহত্যা
করে মারা গেছে। দোষীদের দৃষ্ঠান্ত মূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
ওসমানীনগর থানার ওসি মাছুদুল আমিন বলেন, সাজুর মায়ের লিখিত অভিযোগের
প্রেক্ষিতে মামলা রুজু করা হয়েছে।