আহমাদ কাউসার :
অনেক সময় সমাজের সামগ্রিক স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ব্যক্তি স্বার্থকে বিসর্জন দিতে হয়। তবেই সুনাগরিক হওয়া সম্ভব। দুর্ভাগ্যবশত আমরা প্রায়শই সমাজের অসহায় মানুষগুলোর কথা ভুলে যাই, আমরা উপলব্ধি করি না যে, যেই সমাজে আমার জন্ম, যে সমাজে আমি বেড়ে উঠেছি সে সমাজের কাছে আমি ঋণী। তাই আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত। তা ছাড়া সমাজের একটি বড় অংশকে সুবিধাবঞ্চিত রেখে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমরা যে যেই সমাজেই বসবাস করি না কেন সমাজের প্রতি যদি আমাদের দায়বদ্ধতা না থাকে তাহলে কোনোক্রমেই একজন সুনাগরিক কিংবা সামাজিক দায়িত্ব সম্পন্ন নাগরিক হওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। অনেক মানুষের সম্মিলিত পরিশ্রমে গড়ে ওঠা সভ্যতায় আমরা সভ্য হয়েছি। এই সভ্যতার প্রতিদান দিতে আমি থেকে আমাদের হয়ে উঠতে হবে।
আমার থেকে সকলের। আত্মকেন্দ্রিকতা পরিহার করে চিন্তা করতে হবে সামগ্রিকতার। আমাদের কণ্ঠ রোধ হয়েছে, বিবেক বধ হয়েছে। এই রোধ আর বধ থেকে মুক্তি পেতে সামাজিক অবক্ষয় রোধে এগিয়ে আসতে হবে সকলকে একযোগে। মানুষ সামাজিক জীব। সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকে মানুষ সমাজবদ্ধভাবে বসবাস করে আসছে। মানুষের রয়েছে সামাজিক দায়বদ্ধতা, এই দায়বদ্ধতাই তাকে করেছে সৃষ্টির সেরা। একজন সুনাগরিক শুধু নিজের জন্য বা নিজের ভালোর জন্য চিন্তা করেন না, শুধু নিজের অগ্রগতি কিংবা উন্নতি নিয়ে চিন্তা করে না বরং নিজের অগ্রগতির পাশাপাশি সমাজের অন্য মানুষদেরও এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালান। পুরো সমাজকে এগিয়ে নিতে, উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে চেষ্টা করেন।
সমাজের একজন নাগরিক হিসেবে সবার উচিত শুধু নিজের কথা না ভেবে, শুধু নিজের ভালোর কথা চিন্তা না করে সমাজের ভালো চাওয়া এবং সমাজের উন্নতি কামনা করা। সমাজের হতদরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো আমাদের স্বজন, বিত্তবানদের সম্পদে তাদের অধিকার রয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত আমরা সমাজের অসহায় মানুষগুলোর কথা ভুলে যাই। সভ্যতার বিকাশের চুড়ায় এসেও মানুষের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রচণ্ড অভাব দেখা দিয়েছে। মানুষ ক্রমেই হয়ে উঠছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক, ফলে সামাজিক গণ্ডি ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। সমাজের প্রতি নিজের দায়িত্ব নিয়ে কেউ ভাবতে চাইছেন না। মানুষ ক্রমেই তার সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা ভুলে যাচ্ছে। এটি প্রত্যাশিত নয়। আসুন সমাজের ঋণ শোধ করি।