মুহাম্মদ সাজিদুর রহমান :
মানুষের শারীরিক সুস্থতা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতেও পানি জরুরি। কিন্তু স্বাস্থ্যখাতে ইতিবাচক ফলাফল অর্জনের জন্য বিশুদ্ধ পানি, নিরাপদ স্যানিটেশন ও ভালো স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োজন। তবুও বিশ্বের প্রায় ২৩০ কোটি মানুষের নিরাপদ সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। এছাড়া বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক (৩৬০ কোটি) মানুষের নেই নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
বর্তমানে পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন সংকট উন্নয়নকে হুমকির মুখে ফেলেছে। অনিরাপদ পানির প্রভাব মোকাবিলায় প্রতিবছর বৈশ্বিক ব্যয় ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাতে বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংস্থাটি জানায়, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খরা ও বন্যা সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে। বর্তমানে জরুরি প্রয়োজনে পানি সমস্যার নিরসন করতে হবে।
এজন্য বিশ্ববাসীকে এক হতে হবে।
উন্নয়নশীল দেশগুলিতে পানি উন্নয়নে অর্থায়নের উৎস হিসেবে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ উদ্ভাবনী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই পানির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একটি পানি-সুরক্ষিত বিশ্বের জন্য কাজ করছে বিশ্বব্যাংক।
ইয়েমেনের উদাহরণ টেনে বিশ্বব্যাংক জানায়, ইয়েমেনের অগণিত গ্রামে মৌলিক পরিষেবার অভাব রয়েছে, তবে সেখানে নিরাপদ পানির অভাব সব থেকে বেশি। দেশটির জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশের বেশি প্রায় ১৮ মিলিয়ন মানুষ নিরাপদ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের অভাবে রয়েছে। ইয়েমেনের আল-আদন, আল-আনিন এবং হাওফ- এই তিন গ্রামে পানির অভাব নিরসনে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। কীভাবে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা যায় সেই বিষয়ে অর্থায়ন করেছে সংস্থাটি।
আল-আদন গ্রামের বাসিন্দা এবং ছয় সন্তানের জননী হালিয়া আল-জালাল জানান, আগে তার পরিবারকে পানি সংগ্রহের জন্য দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হতো। কিন্তু বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ফলে সেই সমস্যা নেই। তিনি বলেন, আমাদের আর প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পানি আনার লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে না। আমাদের দুঃখের অবসান ঘটিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশনের অভাব মানবজাতিকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে। ২০১৯ সালে মৃত্যুর অষ্টম কারণ ছিল ডায়রিয়াজনিত। অভিযোগ করা হয় সারাবিশ্বে ২০১৯ সালে নিরাপদ পানি ও নিরাপদ স্যানিটেশনের অভাবে ১৫ লাখ মানুষ মারা যায়। বিশেষ করে নারী ও স্কুলগামী মেয়ে শিশুদের ওপর কঠোর প্রভাব পড়ে।