নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) গরিব মানুষের কাছ থেকে কম দামে জমি কিনে বড়লোকদের কাছে বিক্রি করছে। এর মাধ্যমে শহর থেকে গরিব তাড়ানোর কাজ করছে তারা। গরিব মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে এদিক-সেদিক থাকছে। আর বড়লোকরা আরও ধনী হয়েছে। রাজউক নগর উন্নয়নে কতটুকু করেছে, আর গরিব তাড়ানোর জন্য কতটুকু করেছে– সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।
শনিবার (১৫ জুলাই ২০২৩) ‘পারস্পেক্টিভ অন সাউথ এশিয়ান আরবানিজম’ বিষয়ে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। ‘ঢাকা ডেলেরিয়াম’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিইডি ভবন মিলনায়তনে এ আয়োজন হয়। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং বাংলাদেশ আরবান নলেজ হাব যৌথভাবে এ আয়োজন করেছে।
উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে প্রতিষ্ঠান যেই উদ্দেশ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল, তারা কতটুকু তা করতে পারছে– সেটা এখন ভাবার বিষয়। আমাকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলা হয়, কিন্তু আমি পরিকল্পনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত না। আমার আশপাশের কিছু লোক আছে, তারা পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ও দেশের পরিকল্পনা সঠিকভাবে করতে পারছে না। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেছিলেন, তার কোনোটাই বাস্তবায়ন করতে পারছে না পরিকল্পনা কমিশন। রাজনীতিবিদদের নির্দেশে পরিকল্পনা করা হয়। আমরা এখন ঢাকার প্রলাপ শুনছি। নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে শহরটা অসুস্থ, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এসেছে। এ শহরে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না গেলে সমস্যা আরও বাড়বে। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে ঢাকার অবদান ৮০ শতাংশ, যা সুষম বণ্টন নয়। সরকার সুষম অবস্থা চাইছে সারাদেশে। এটির জন্য গ্রাম হবে শহর, সেটি ভাবা হচ্ছে।’
পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন ‘ঢাকা ডেলেরিয়াম’ গ্রন্থের প্রণেতা স্থপতি অধ্যাপক ড. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ টি এম নুরুল আমিন, বেঙ্গল ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক স্থপতি কাজী খালেদ আশরাফ, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ প্রমুখ।