জগন্নাথপুর টাইমসরবিবার , ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে লন্ডনে সংবাদ সম্মেলন

Jagannathpur Times BD
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ ৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

মুহাম্মদ সালেহ আহমদ : 

বড়লেখায় বাসা থেকে মসজিদে যাওয়ার পথে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মোঃ ফয়জুর রহমানকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে লন্ডনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ।

শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রবাসী ফয়জুর রহমানের ছেলে সিদ্দিক মোহাম্মদ রহমান  । উপস্থিত ছিলেন  কাউন্সিলার রাইহান মোঃ চৌধুরী ও ফখরুল ইসলাম।

লিখিত বক্তব্যে ফয়জুর রহমান (ফাইজ মোঃ রহমান)  বলেন-  ১৯৭০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকে লন্ডনে বসবাস করছেন। টাওয়ার হ্যামলেটসের মাইলএন্ড এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করছেন। ১৯৭৫ সালে তিনি টাওয়ার হ্যামলেটস ইয়ুথ মুভমেন্ট অর্গানাইজেশনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। শুরুতে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পরবর্তিতে এই সংগঠনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বড়লেখা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইউকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে বড়লেখা ফাউন্ডেশন ইউকের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ও স্থানীয় মাজাহিরুল উলুম মসজিদ এন্ড মাদ্রাসার ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়াও, মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা এফআর মহিউসসুন্নাহ একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও ট্রাস্টি, বড়লেখা সুড়িকান্দি দারুল উলুম কাওমী মাদ্রাসা ইউকে চ্যারিটির ট্রাস্টি ও চেয়ারম্যান, বড়লেখা হযরত আয়শা সিদ্দিকা (রাঃ) ও নেকরুজা খাতুন ইসলামিক প্রাইমারি স্কলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, বড়লেখা সরকারি কলেজের দাতা সদস্য, দাসের বাজার কলেজের দাতা সদস্য, ঈদগাহ বাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভুমি দাতা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বাংলাদেশে গ্রামের বাড়ি মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের সুড়িকান্দি রসগ্রাম গ্রামে । তবে বড়লেখা পৌরসভার হাটবন্দ এলাকায় প্রায় ৫ কোটি টাকা মুল্যের ৩ তলা বিশিষ্ট একটি বাসা রয়েছে । বাসার পাশে নিজস্ব জায়গায় নির্মিত ৫ তলা বিশিষ্ট মহিউসুন্নাহ একাডেমি রয়েছে । মাদ্রাসাটির নিচতলায় মসজিদ এবং উপরের ৪ তলায় মাদ্রাসা। মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য তিনি সময় সময় বাংলাদেশে ভ্রমণ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জুন তিনি বাংলাদেশ যান। ৫ আগস্ট ভোর পৌনে ৫টার দিকে ফজরের নামাজের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হলে মসজিদের কাছাকাছি পৌছামাত্র এক অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী আমাকে লক্ষ্য করে আমার মাথায় ধারালো দা দিয়ে কোপ মারে । দা’র কোপটি ভাগ্যক্রমে মাথায় না লেগে আমার বাম কাঁধে বিদ্ধ হয়। দ্বিতীয় কোপটি আমার বাম হাতের বাহুতে বিদ্ধ হলে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হই । এসময় বুকের বাম পাশেও মারাত্মক জখম হয়। আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে চিৎকার করে তাকে ধরার চেষ্টা করি। তখন সে “আর এক পা এগুলে মাথা বিচ্ছিন্ন করে ফেলার’ হুমকী দিয়ে পালিয়ে যায় । তখন আমার চিৎকার শুনে মুসল্লি ও পথচারিরা দৌড়ে এগিয়ে এসে মারাত্মক জখম অবস্থায় আমাকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন। আমার কাঁধে ৫টি সেলাই ও বাম হাতের বাহুতে ১০টি সেলাই লাগে। আমি ৫ ও ৬ আগস্ট দুইদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। অবশ্য ৫ আগস্ট সকালে হাসপাতালে চিকিৎসার পর শারিরীক অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলে ৯৯৯ নাম্বারে কল করি। কল করার ১৫ মিনিটের মধ্যে পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছে এবং আমার কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনে। কিন্তু হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি। কোনো সহযোগিতাও করেনি।

৬ আগস্ট বিকেলের দিকে হাসপাতাল থেকে আমাকে ডিসচার্জ করা হয়। শারিরীকভাবে দুর্বল থাকায় আমি পরদিন থানায় যেতে পরিনি। ৮ আগস্ট বড়লেখা থানায় যাই এবং ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ইয়ারদৌস হাসানের সাথে কথা বলে মামলা দায়ের করার চেষ্টা করি। কিন্তু থানা পুলিশ আমার মামলা গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করে। এরপর ১৪ আগস্ট আমি বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে আমাকে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় মামলা করি। (মামলা নাম্বার সিআর ৩৩৯/২০২৩)। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে থানায় পাঠালে বড়লেখা থানা মামলা এফআইর করে আরো একটি মামলা রুজ করে । (মামলা নং জিআর ১২৩/২০২৩)।

এই মামলার প্রধান আসামী বড়লেখা সুড়িকান্দি রসগ্রামের হবিব আলীর ছেলে খয়রুল ইসলাম (৩০), দ্বিতীয় ও তৃতীয় আসামী যথাক্রমে একই গ্রামের আমার মরহুম বড় ভাই শফিকুর রহমানের স্ত্রী শফি আক্তার খানম ও তাঁর ছেলে নাদের আহমদ । প্রধান আসামী খায়রুল ইসলাম হচ্ছেন শফি আক্তার খানম ও তার ছেলে নাদের আহমদের রসগ্রামের বাড়ির পাহারাদার । মুলত নাদের আহমদ ও তার মা আমার তিন তলা বাসা ও মাদ্রাসা ভবন দখলের উদ্দেশ্যে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং প্রধান আসামী খায়রুল ইসলামকে আমাকে হত্যার জন্য ভাড়া করেন বলে আমি মামলায় উল্লেখ করি। কারণ এই নাদের আহমদ আমার বাসা ও মাদ্রাসা দখলের চেষ্টায় বিভিন্ন সময় আমাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হুমকী দিয়ে আসছে। বিভিন্ন সময় তার হুমকীর ঘটনায় আমি তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করি।

নাদের আহমদ ও তার মা-সহ পরিবারের সকলে মিলে পারিবারিক বাটোয়ারা ভিত্তিক প্রাপ্ত দত্তরমহল মৌজায় আমার ভাগের ১৫ শতক জায়গা অবৈধভাবে বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করে। এ ঘটনায় ৫ জানুয়ারি ২০২৩ আমি তাদের বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজেস্ট্রেট আদালতে মামলা করি। (মামলা নং সিআর ৫/২০২৩)
৩ আগস্ট ২০২২ তারিখে নাদের আহমদ তার সহযোগীদের নিয়ে স্থানীয় গোয়ালটাবাজারে আমার অর্থায়নে নির্মাণাধীন আয়শা সিদ্দিকা (রাঃ) এন্ড নেকরুজা খাতুন মহিলা মাদ্রাসার অনেকগুলো পিলার ভেঙ্গে ফেলে। ওই ঘটনায় নাদের আহমদসহ ৯ জনকে আসামী করে ১৭ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মামলা করি। (মামলা নং সিআর ২৬/২০২৩)
এছাড়াও, রসগ্রাম মৌজায় আমার মালিকানাধীন ৭ শতক জায়গা অবৈধভাবে বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করার ঘটনায় ৩০ জুলাই ২০২৩ তারিখে নাদের আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করি। (মামলা নং সিআর ৩৩৪/২০২৩)
প্রধান আসামী হামলাকারী খয়রুল ইসলামকে আমি চিনি। যেহেতু সে নাদের আহমদের গ্রামের বাড়িতে পাহারাদার হিসেবে চাকরি করে এবং আমার বাড়িও একই গ্রামে তাই যখন বাংলাদেশে যাই তার সাথে কথাবার্তা হয়। হামলার সময় আমি তার কণ্ঠস্বর শনাক্ত করে সক্ষম হই। এখন তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেই আমাকে হত্যার পরিকল্পাকারিদের নাম বেরিয়ে আসবে।

আমি একজন সহজ সরল মানুষ। স্ত্রী সন্তান নিয়ে আমার সুন্দর সংসার। আমার মা নেকরুজা খাতুন মৃত্যুর সময় আমাকে একটি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করতে ওসিয়ত করেছিলেন। তার ওসিয়ত পালন করতে গিয়ে ২০০৪ সালে মায়ের মৃত্যূর পর থেকে বাকি জীবন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা ও চ্যারিটি কাজে উৎসর্গ করে দিই।

যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও আমার মন পড়ে থাকে বাংলাদেশে। মাদ্রাসা পরিচালনার স্বার্থে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে গিয়ে থাকি। কিন্তু এই হামলার ঘটনার পর আমার পরিবার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। আমার ছেলে সন্তানরা তো কোনোদিনও বাংলাদেশে যাবেনা, আমাকেও না যেতে বারণ করেছে । আমিও মনে করি, আমার জীবন ঝুঁকিপুর্ণ। আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমি কোনোভাবে বেঁচে এসেছি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে গেলে হয়তো ফিরেই আসতে পারবো না।
বর্তমানে হত্যা চেষ্টা মামলাটি মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আসামী গ্রেফতারের ব্যাপারে কোনো তৎপরতা পরলক্ষিত হচ্ছেনা।
তাই আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই, অবিলম্বে প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে হত্যার পরিকল্পনাকারিদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।