শাহ সুহেল আহমদ, প্যারিস (ফ্রান্স):
প্যারিসে উদ্বোধন হলো ভাষা আন্দোলনের প্রতিক প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার। প্যারিসের সেইন্ট ডেনিস বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে এই শহীদ মিনার যৌথভাবে উদ্বোধন করেন সেইন্ট ডেনিসের মেয়র মাতিউ হ্যানোতা, আয়েবার মহাসচিব ও শহীদ মিনার বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা কাজী এনায়েত উল্লাহ ও সিকানো বাঙালী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সরুফ সদিউল। বাংলাদেশে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের আদলে নির্মিত এই শহীদ মিনারের ফলে ফ্রান্স প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হলো।
রবিবার ( ৮ অক্টোবর ২০২৩) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ প্যারিসে স্থায়ী শহীদ মিনার তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য অনুষ্ঠানের শুরুতে মেয়রকে টেলিফোনে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানান। এর পরেই প্রতিমন্ত্রীর বানী ফ্রেঞ্চ ও বাংলা ভাষায় পাঠ করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র মাতিউ হ্যানোতা ভাষা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাঙালি একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এমন একটা স্মৃতিস্তম্ভ তার এলাকায় করতে পেরে তিনি গৌরবান্বিত বলেও জানান।
মেয়রের অফিসের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হবে বলেও তিনি জানান। এতোদিন প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের পাদদেশে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাত ফ্রান্স প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অল ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের (আয়েবা) মহাসচিব ও বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কাজী এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্যারিসের বুকে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির নিদর্শন হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে এই শহীদ মিনারটি। পরবর্তী প্রজন্মসহ বিদেশিরা সেখান থেকে জানতে পারবে বাংলা ভাষার গৌরবময় ইতিহাস। পাশাপাশি এই স্থায়ী শহীদ মিনারটি বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অন্য উচ্চতায়।’
শহীদ মিনারের মূল উদ্যোক্তা সিকানো বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সরুফ সদিওল বলেন, ‘যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বৃহত্তর এই প্যারিস সিটিতে এমন একটি ভাষা শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি আমন্ত্রিত অতিথি, ডেপুটি মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ফ্রান্সের বিভিন্ন বাংলাদেশি রাজনৈতিক দলের নেতা, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত আয়েবা নেতা, গণমাধ্যমকর্মী, বাংলাদেশ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ফ্রান্সের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।