নিজস্ব প্রতিবেদকঃ একীভূত হচ্ছে দেশের যে ৯৪৪টি প্রাথমিক স্কুল । বাংলাদেশের ৫৬ জেলায় ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৫০ জন শিক্ষার্থীও নেই এমন ৯৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এরকম বেহাল স্কুলগুলোকে পাশের স্কুলের সঙ্গে একত্রিত বা একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) সমন্বয় সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
গত ৭ ডিসেম্বর অধিদপ্তরের পলিসি ও অপারেশন শাখার পরিচালক মনিষ চাকমা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেশের সব বিভাগীয় ও জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, অধিদপ্তরের মাসিক সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫০ এর কম শিক্ষার্থী এমন স্কুলের বিষয়ে বিভাগীয় উপ-পরিচালকদের কাছে প্রস্তাবনা চাওয়া হয়েছে। স্কুলগুলো একত্রীকরণ ও কম ছাত্র থাকা বিদ্যালয় পরিচালনা করা সমীচীন হবে কি না, সে বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রস্তাব আগামী ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০২২ সালের তৎকালীন সচিব আমিনুল ইসলাম খান এসব স্কুলের তালিকা করার নির্দেশ দেন। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সেই সব স্কুলের তালিকা শুরু করে। সর্বশেষ তথ্য মতে, দেশের ৫৬টি জেলায় ৯৯৪ স্কুলে ৫০ জন শিক্ষার্থী নেই। সেই তালিকা ধরে এখন এসব প্রতিষ্ঠানগুলো পাশের স্কুলের সঙ্গে একীভূত করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, ২০২৩ সালের তালিকা করলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।
এ বিষয়ে ডিপিই পরিচালক মনিষ চাকমা বলেন, এটা ২০২২ সালের তালিকা। যেসব স্কুলের ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী রয়েছে তাদের পাশের স্কুলের সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় পর্যায়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ৫টি ক্লাসে ৫০ জন শিক্ষার্থী না থাকার পরও এসব চালানো রাষ্ট্রীয় অপচয়।
অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৫৬টি জেলার ৯৪৪ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে ৫০ জনের কম শিক্ষার্থী নেই। সেই তালিকায় জাতীয়করণ করা স্কুলও রয়েছে। এ ধরনের জাতীয়করণ করা স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়েও ভাবছে ডিপিই।
৯৪৪ স্কুলের যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে একত্রিত করার জন্য প্রস্তাবিত স্কুলের নাম, ছাত্র সংখ্যা, জমির পরিমাণ, যে স্কুলের সঙ্গে একত্রিত করা হবে তার নাম, বর্তমান বিদ্যালয় থেকে একত্রিত করার জন্য প্রস্তাবিত স্কুলের দূরত্ব, প্রস্তাবিত স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা উল্লেখ করে অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠাতে হবে উপ-পরিচালকদের।
২০১৩ সাল থেকে ধাপে ধাপে ২৬ হাজারের বেশি এমপিওভুক্ত রেজিস্ট্রার্ড, আন রেজিস্ট্রার্ড ও কমিউনিটি বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হয়। এদের মধ্যে প্রায় ২১ হাজার শিক্ষক ছিলেন যোগ্যতাবিহীন। বার বার সময় দেওয়ার পরও তারা যোগ্যতা অর্জন করতে পারেননি। আবার অনেক স্কুলে ছিল নামমাত্র শিক্ষার্থী। গোঁজামিল দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য দিয়ে স্কুলগুলো চালাচ্ছেন কিছু শিক্ষক। তারা বেতনভাতাও পাচ্ছেন।