আতিকুল ইসলাম, ওয়েলস :
যথাযোগ্য মর্যাদায়, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় ও পুষ্পস্তবক অর্পণ এর মাধ্যমে সমগ্র জাতির ন্যায় বাংলাদেশ বিজয়ের গৌরবময় ৫২ বছর উদযাপন করেছে বৃটেনের ওয়েলস বাংলাদেশ কমিউনিটি,
মহাণ বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে গত ১৬ ডিসেম্বর শনিবার দূপুর ১২টা ১ মিনিটে একে একে শহীদ মিনার ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট কমিটি, কাডিফ বিএনপি, ওয়েলস যুবলীগ, ওয়েলস ছাত্রলীগ, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকে, ৭১ এর ঘাতক দালাল নিমূল কমিটি ওয়েলস শাখা, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকে সাউথ ওয়েলস সহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান এর পক্ষ থেকে স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা নিবেদনে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে কার্ডিফের শহীদ মিনার তথা ইন্ট্যারন্যাশনাল ম্যাদার লাংগুয়েজ মনুমেন্ট। শহীদ মিনারে আগতরা বিনম্র চিত্তে স্মরণ করলো সেই বীর সন্তানদের, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের। আর আমরা পেয়েছিলাম লাল বৃত্ত -সবুজে খচিত একটি বিজয়ের পতাকা।
কার্ডিফ ইন্ট্যারন্যাশনাল ম্যাদার লাংগুয়েজ মনুমেন্ট তথা শহীদ মিনার ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট কমিটির সেক্রেটারি বিশিষ্ট সাংবাদিক মোহাম্মদ মকিস মনসুর এর পরিচালনায় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মনুমেন্ট ফাউন্ডার্স ট্রাষ্ট কমিটির প্রেসিডেন্ট আলহাজ্ব আনোয়ার আলী, ট্রেজারার আনহার মিয়া, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকে সাউথ ওয়েলস রিজিওনাল কনভেনার মুজিবুর রহমান,
কার্ডিফ বিএনপির নেতা এম আসরাফ হোসেন, কার্ডিফ বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি ইউসুফ খান জিমি, ওয়েলস যুবলীগের সভাপতি ভিপি সেলিম আহমদ, ওয়েলস যুবলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি আবুল কালাম মুমিন, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড ১৯৭১ ইন ইউকে ওয়েলস এর সভাপতি আলহাজ্ব আসাদ মিয়া, সেক্রেটারি জহির আলী, গ্রেটার সিলেট নিউপোট এর জয়েন্ট কনভেনার নুরুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান মামনুর রশিদ, শামীম চৌধুরী ও ওয়েলস ছাত্রলীগের সভাপতি মোহাম্মদ বদরুল মনসুর, সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা মহান বিজয় দিবস অর্জনের ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে বার বার সেই সব স্বজনদের কথা উচ্চারণ করে বলেন এ বিজয় আমাদের অহংকার, দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে আজকের এই দিনে বিজয়ের স্বাদ গ্রহণ করেছে বাঙালি জাতি। আর এই বিজয়ের পথে রক্ত ঢেলেছেন ৩০ লক্ষ শহীদ। ২ লক্ষ মা-বোন হারিয়েছেন সম্ভ্রম।
জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান সহ তিরিশ লক্ষ শহীদের প্রাণের আত্মাহুতি আর দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি, বিযাদের বলিদান ও ত্যাগের বিনিময়ে এই দিনের জন্ম হয়েছিল।যারা নিজেদেরকে আত্মাহুতি দিয়ে ও যে সকল মা বোনেরা সম্ভ্রমের জলাঞ্জলী দিয়ে বিজয়ের পতাকা বাংলার জমিনে স্থাপন করে দিয়ে গেল, তাদের এই ঋণ কোন দিন শোধ করা যাবে না। তবে প্রত্যেকেই দৃঢ়তার সাথে বলেছেন তাদের এই ত্যাগের কথা কোনদিন স্মৃতি থেকে বাদ পড়বে না। যতদিন বেঁচে থাকবো ততোদিন আনন্দের সহিত তাদের ঋণের বোঝা বহন করে যাব। তাদের আত্মার শান্তির জন্য দোয়া করে যাব কারন তাদের নির্ভীকতার বিনিময়ে আমরা বিশ্বের দরবারে বিজয়ী জাতি হিসাবে স্বীকৃতিসহ একটি স্বাধীন রাস্ট্র পেয়েছি। শির উন্নত করে বাঁচার ও নির্যাতন এবং নিপীড়িনের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করার জ্ঞান আমরা পেয়েছি তাদের কাছ থেকে। শোক আর রক্তের ঋণ শোধ করার গর্ব নিয়ে উজ্জীবিত জাতি প্রতিবছরের ন্যায় গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বিজয়ের এই দিনে গোটা দেশ সহ বিশ্বময় প্রবাসীরা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করছে। অতএব কোনদিন তাদের স্মৃতি আমাদের মন থেকে মুছা যাবেনা। তাদের স্মৃতির কথা থাকবে আমাদের হৃদেয়ে চীর অম্লান হয়ে থাকবে বলে উল্লেখ করে আমাদের নব প্রজন্মের সন্তানদের সামনে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার প্রতি বক্তারা গুরুত্বআরোপ করেছেন।