এস কে এম আশরাফুল হুদা :
উপমহাদেশের প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, বাম প্রগতিশীল আন্দোলনের পুরোধা, সাবেক সংসদ, গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি, ভাষা সৈনিক ও গরীব দুঃখী মেহনতী মানুষের বন্ধু মরহুম জননেতা পীর হবিবুর রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে স্থানীয় একটি হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পীর হবিবুর রহমান ফাউন্ডেশন ইউকে।
পীর হবিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের সভাপতি আজিজ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহিব উদ্দিন চৌধুরীর পরিচালনায় এ দোয়া ও স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা পীর হবিবুর রহমানের রাজনৈতিক কর্মময় জীবনের উপর স্মৃতিচারণ করে বলেন, পীর হাবিবুর রহমান ছিলেন একজন সৎ রাজনীতিবিদ। সব ধরনের লোভ লালসার ঊর্ধ্বে থেকে তিনি রাজনীতি করেছেন, ক্ষমতায় যাওয়াকে উপেক্ষা করে তিনি দেশের জাতির কল্যাণে আমৃত্যু কাজ করে গেছেন।
বক্তারা আরও বলেন, বর্ষিয়ান এই রাজনীতিবিদ ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা আন্দোলনসহ বাংলাদেশের সবকটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের সকল মানুষের সমানভাবে উন্নতি কামনা করতেন। তিনি সত্যিকার অর্থেই মাটি ও মানুষের রাজনীতি করেছিলেন। সারা জীবন ত্যাগ ও আদর্শের রাজনীতি করেছেন।
বক্তারা বাংলাদেশের সব কটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী এই বর্ষীয়ান নেতাকে স্বাধীনতা এবং একুশে পদক দেওয়ার জন্য সরকারকে আহ্বান জানান।
এ স্মরণসভায় অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, ২৬শে টিভির চেয়ারম্যান, মানবাধিকার নেতা আব্দুল আহাদ চৌধুরী, যুক্তরাজ্য কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আবেদ আলী, বিশিষ্ট সাংবাদিক আনসার আহমাদ উল্লাহ, রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন, পীর হবিবুর রহমানের ছেলে মনজুর হোসেন, রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ ইমরান আহমদ, যুবলীগ নেতা, ২৬শে টিভির সিইও জামাল আহমেদ খান, বাসদ নেতা গয়াছুর রহমান গয়াছ, লালাবাজার এডুকেশন ট্রাস্টের সভাপতি আব্দুল কাদির। যুক্তরাজ্য কৃষক লীগের সেক্রেটারি নেতা এম এ আলী, সহ সভাপতি ইলিয়াস মিয়া ও মহিবুর রহমান।
বক্তারা বলেন, যিনি সারা জীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করে গেলেন, তার অবদানের স্বীকৃতি একটা পদক জীবদ্দশায় পেলে খুশি হতেন। না পেলে কিছু আসে যায় না। তার অবদান তুলনাহীন। আমাদের উচিত তাকে সম্মান জানানো। পীর হবিবুর রহমান অনেক বড় মাপের নেতা ছিলেন। তিনি আদর্শের রাজনীতি করে গেছেন। নীতিচ্যুত হননি। যদি হতেন তাহলে বড় মন্ত্রী হতে পারতেন।
পীর হবিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি আব্দুল করিম ,ট্রেজারার শামীম আহমেদ, ইসমাইল হোসেন লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক আখলাকুন-নবি চৌধুরী জুয়েল, জাফরাবাদ হাইস্কুল এন্ড কলেজ ডেভেলপমেন্ট কমিটি যুক্তরাজ্যের সাধারণ সম্পাদক ও সংগঠনের কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ এনামুল হক। তাছাড়া যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতা মামুন আহমদ চৌধুরী মোঃ জাহিদ সারোয়ার, মোজাফফর হোসেন, নেতা মাস্টার নুরুল ইসলাম মধু মিয়া বক্তব্য রাখেন।
লিয়াকত হোসেন লোভনের কন্ঠে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে পীর হবিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। বিশিষ্ট ইসলামিক ব্যক্তিত্ব, বাইতুল আমান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল মালিক দোয়া পরিচালনা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে পীর হবিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের সভাপতি আজিজ চৌধুরী স্মরণসভায় উপস্তিতি হওয়ার জন্য সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, আমাদের প্রয়াত নেতা সম্পর্কে আপনাদের আজকের স্মৃতিচারণ ফাউন্ডেশনের জন্য অনন্য এক পাওয়া। এছাড়াও স্মরণসভায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।