মির্জা আবুল কাসেম:
যুক্তরাজ্যজুড়ে বহুল প্রতীক্ষীত সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। প্রত্যাশিত সময়ের আগেই অনুষ্ঠিত হওয়া এই নির্বাচনে রেকর্ড ভাঙা জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বিরোধী লেবার পার্টির।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ছয় সপ্তাহের নির্বাচনী প্রচারণার পর যুক্তরাজ্যজুড়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডজুড়ে ৪০ হাজার ভোট কেন্দ্রে নতুন এমপিদের বেছে নিতে ভোট দেওয়া শুরু করেছেন ভোটাররা।
প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে ব্যক্তিগতভাবে ভোট দিতে হলে ভোটারদের ফটো আইডি সঙ্গে নিতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যে নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ হয় পাঁচ বছরের। গতবার, অর্থাৎ ২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল কনজারভেটিভ পার্টি।
নিয়ম মাফিক পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। অনেকে আগামী শরতে তথা অক্টোবর মাসে নির্বাচন হতে পারে এমন অনুমান করলেও বাস্তবে তা হয়নি।
যুক্তরাজ্য মোট ৬৫০টি নির্বাচনী কেন্দ্র বা এলাকায় বিভক্ত। এই প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকার ভোটাররা একজন করে সংসদ সদস্য নির্বাচন করেন যারা তাদের হয়ে ‘হাউস অব কমন্স’-এ প্রতিনিধিত্ব করেন।
নির্বাচনী ময়দানে লড়াই করতে নামা প্রার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। তবে কেউ কেউ আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবেও ভোটে লড়ছেন।
জনমত জরিপ অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টির জনপ্রিয়তা কমছে। বিবিসির পলিটিক্যাল এডিটর ক্রিস ম্যাসন বলছেন, ‘দলের কিছু রাজনীতিবিদ মনে করেন, পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হবে না এবং ভোটারদের মত প্রকাশের যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তাতে নির্বাচন পিছিয়ে দিলে কনজারভেটিভ পার্টির পরাজয় আরও খারাপভাবে হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।’
সাম্প্রতিক জনমত জরিপ বলছে, নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টি তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লেবার পার্টির থেকে বেশ খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে। আসলে গত ১২ মাস ধরে চিত্রটা প্রায় একই ছিল। জরিপ অনুযায়ী, লেবার পার্টি ধারাবাহিকভাবে ৪০ শতাংশের উপরে জনসমর্থন পেয়ে এসেছে।সারভেশনের নির্বাচন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পার্লামেন্টের ৬৫০টি আসনের মধ্যে অন্তত ৪৮৪টিতে জয় পাবে লেবার পার্টি। যা ১৯৯৭ সালে টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টির ৪১৮টি আসনে জয়ের চেয়েও বেশি। সেই বার ব্রিটেনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ আসনে জয়ের অনন্য কীর্তি গড়েছিল লেবার পার্টি।
অপরদিকে কনজারভেটিভ পার্টি মাত্র ৬৪টি আসনে জয় পাবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। যদি এই ধারণা সঠিক হয় তাহলে ১৮৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কনজারভেটিভ পার্টি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে কম আসনে জয় পাওয়ার লজ্জায় পড়বে।
অন্যান্য নির্বাচনী পর্যবেক্ষক ও সংস্থাগুলো জানিয়েছে, লেবার পার্টি হয়তো কম ব্যবধানে জিততে পারে। তবে কনজারভেটিভরা আবারও জয় পাবে এমন কিছু বলেনি কেউই।