নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামশিতে ১৯৭১ সালের ৩১ আগস্টে গণহত্যা চালায় পাকিস্তানের দোসররা শান্তি কমিটি নামে গ্রামের লোকজনকে একত্রিত করে গণহত্যা করে। সেই ৩১ আগস্টের গণহত্যার দিনকে স্মরণে শোক দিবস পালন করা হয় শ্রদ্ধা জানানো হয় —সেদিন শাহাদাত বরণকারী শহীদদের প্রতি । প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শহীদ স্মৃতি মেধাবৃত্তি প্রদান করা হয় ।
শনিবার (৩১ আগস্ট) শ্রীরামশি শহিদ স্মতি সংসদ কার্যলয়ে এক দোয়া মাহফিল ও মেধা নির্বাচন পরিক্ষার ফলাফল ও সনদ প্রদান হয়ছে। সকাল ১০ ঘটিঘায় সংগঠনের কার্যলয়ে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
শহিদ স্মৃতি সংসদের সভাপতি নূর মোহাম্মদ জুয়েল ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের সিনিয়র (সাবেক) সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল কাইয়ুম মশাহিদ।
বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, আশরাফুল আলম, জাফর আলম, জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সংসদের সাবেক সভাপতি বাবুল মিয়া, সাবেক সভাপতি মুহিবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাজ্য প্রবাসী তফজ্জুল হোসেন সাবেক সহ সভাপতি জুয়েল মিয়া, শাহান আলম, মোন্তাকিম হোসাইন শহিদ স্মৃতি সংসদের কার্য নির্বাহী সদস্য, কামরান আহমদ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রাজু মিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ৩১ আগস্ট ১৯৭১শ্রীরামসী আঞ্চলিক শোক দিবস ৩১ আগস্টের দিনে স্বাভাবিক ভাবে অন্যান্য দিনের মত জীবনযাত্রা শুরু করেছিল ও শ্রীরামসীবাসী।কেই বা জানত এই দিন হবে শ্রীরামসীর জন্য এক ভয়াবহ কালো দিন।হটাৎ করে সকাল ১০ টার দিকে ৯টি নৌকায় প্রায় অর্ধশতাধিক পাকিস্তানি সৈন্য ও এদেশীয় দোসর কয়েক জন্য রাজাকার শ্রীরামসী বাজারে উপস্থিত হয়।বাজারে এসে কয়েকজন রাজাকার সবার উদ্দেশ্য ঘোষণা করে এখানে শান্তি কমিটি গঠন করা হবে,যাতে এখানে কোনো দূর্ঘটনায় না গঠে।রাজাকারেরা পাড়ায় পাড়ায় গিয়া শান্তি কমিটি গঠনের জন্য সবাইকে শ্রীরামসী হাই স্কুলে আশার কথা বলে অন্যথায় এলাকার সবাই মেশিনগান দিয়ে হত্যা করার হুমকি প্রধান করে।এলাকার এই বিপদ কে এড়াতে গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষ স্কুলে সমবেত হতে থাকে। সবাই মিটিং শুধু করার জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে।
এই সময় হবিবপুরের রাজাকার লিডার আহমেদ আলি খান সেনাদের সাথে ফিসফিস করে কি যেন ও আলাফ করেন।সাথে সাথেই পাকিস্তানি সৈন্য বাহিনীরা উপস্থিত ব্যক্তি বর্গদের দিকে মেসিনগান ধরে গিরে রাকে।এর মধ্যে মুরব্বি কয়েকজন কে বাদ দিয়ে উপস্থিত সবার হাত পা বেধে পেলা হয়।
হাত পা বাদা ব্যক্তিদের দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়,প্রথম এক দলে প্রায় ৫০ জনের মত ব্যক্তিকে নৌকায় তুলে বাজারের দক্ষিণে রহিম উল্লাহর পুকুর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়,আরেকটি দলে ৬০ জনের উপরে ব্যক্তি কে নজির মিয়ার পুকুর পাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত কয়েকজন্য মুরব্বি নামাজের জন্য ও আকুতি করেন পরে তাদের ছেড়ে দিয়ে ছিল এদিকে উভয় পুকুর পাড়ে দার করানো ব্যক্তিদের কলিমা পড়তে নির্দেশ দেয়।নিশ্চিত মৃত্যু পথযাত্রা ব্যক্তিরা উচ্চ আওয়াজে আল্লাহ্ আকবার ধ্বনিতে শ্রীরামসীর জনপদ কেপে উঠে।এরপর পরই হ্রদয়বেদনা জনক হত্যাকাণ্ড ঘটে।
পাকসেনা সদস্যদের গুলিতে সারিবদ্ব তাজাপ্রাণ গুলোর লাশ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে:
আলা মিয়া প্রধান শিক্ষক ছাদ উদ্দিন, তহশীলদার এহিয়া চৌধুরী, সত্য নারায়ণ চক্রবর্তী, সৈয়দ আশরাফ হোসেন, শফিকুল রহমান, ফিরোজ মিয়া, সুনু মিয়া, আলা মিয়া, সমুজ মিয়া গেদু,নজির মিয়া, আব্দুল মান্নান, ওয়ারিছ মিয়া, মানিক মিয়া, আব্দুল জলিল, দবির মিয়া, মরম উল্লাহ, মন্তাজ আলী, ছরওয়ার উল্লাহ, রইছ উল্লাহ, আব্দুল মজিদ, আব্দুল লতিফ, এখলাছ মিয়া, মুক্তার মিয়া, ছামির আলী, আব্দুল হাই, শামসু মিয়া, ছোয়াব উল্লাহ, রুফু মিয়া রুছমত আলী, আছাব মিয়া,তৈয়ব আলী, রোয়াব আলী, তফজ্জুল আলী, মছদ্দর আলী,আব্দুল হান্নান,আব্দুল বারিক মেম্বার, শুধাংশ টেইলার, শ্রীরামসী পোস্ট অফিসে সৈয়দ জহিদ উদ্দিন আরও অনেকেই নাম জানা যায় নি।
৩১ আগস্ট শ্রীরামসী বাসীর জন্য এক অবিস্মরণীয় দিন।এই দিন কে স্মরণীয় করে রাকতে ১৯৮৭ সালে এলাকার সচেতন লোকজন গঠিত করেন “শহীদ স্মৃতি সংসদ শ্রীরামসী”।
সেই ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ থেকেই শহীদদের স্মৃতি রক্ষার্থে এই জগন্নাথপুর উপজেলায় শ্রীরামসী শহীদ স্মৃতি সংসদ ৩১ আগস্ট শ্রীরামসী আঞ্চলিক শোক দিবস যথাযোগ্য সম্মানের সাথে পালন করে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পালন করা হয় ৩১ আগস্ট আঞ্চলিক এ শোক দিবসটি।