সাজিদুর রহমান :
যুক্তরাজ্যে ইউনিভার্সাল ক্রেডিট পায় এমন প্রতি তিনজন মানুষের মধ্যে একজনের ক্রেডিট কেটে নেওয়া হচ্ছে। ওভার পেমেন্ট, ক্রেডিট সংস্কার, ত্রুটি প্রভৃতির কথা উল্লেখ করে অসংখ্য মানুষের পেমেন্ট অর্ধেক হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী এসব মানুষ এখন চরম দারিদ্র্য, উচ্ছেদ হওয়া, মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে।
পাবলিক ল’ প্রজেক্টের নতুন একটি গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
নিউ ইকোনমিক্স ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষণ অনুসারে, ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশন (ডিডব্লিউপি) প্রায় অর্ধেক ইউনিভার্সাল ক্রেডিট দাবিদারদের কাছ থেকে লোন পরিশোধ এবং ভুল সংশোধনের জন্য অর্থ ফেরত নিয়েছে। হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ মানুষের এভাবে পেমেন্ট কাটা হয়েছে। পাবলিক ল প্রজেক্টের গবেষক ক্যারোলিন সেলম্যান বলেছেন, মানুষ ধারণা করেনি তারা এভাবে নিঃস্ব হয়ে যাবে। এক দশক আগে নেওয়া ওভার পেমেন্ট এখন কস্ট অফ লিভিং ক্রাইসিসের এই সময়ে পরিশোধ করতে হচ্ছে। এভাবে পেমেন্ট কমে যাওয়ায় বিভিন্ন বিল এবং দৈনন্দিন খরচ কভার করা সম্ভব হচ্ছে না।
অনেকে ইতিমধ্যেই লোনের একটি ধ্বংসাত্মক চক্রে আটকে গেছে। ওভার পেমেন্টের জন্য কয়েকটি প্রতিবন্ধী শিশুর এক সিংগেল মাদারকে ১৭ হাজার পাউন্ড পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। পাবলিক ল প্রজেক্টের গবেষণায় দেখা গেছে, ৪২ শতাংশ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। ইউনিভার্সাল ক্রেডিট কাটার ফলে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ খাদ্যের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে খরচ কমিয়ে দিয়েছে। প্রতি চারজনের মধ্যে একজন বলেছে যে তারা খাদ্য সহায়তার জন্য ফুড ব্যাংক ব্যবহার করেছে।
জোসেফ রাউনট্রি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ক্রেডিট কেটে নেওয়ার কারণে একজন মানুষ প্রতি মাসে ১২০ পাউন্ড কম পাচ্ছে। এদিকে এভাবে আয় কমে যাওয়ায় প্রতি দশজন মানুষের একজন মানুষ রাফ স্লিপিং করছে। এছাড়া ক্রেডিট হারানো ২১ শতাংশ মানুষ দেরিতে বিল পরিশোধ করেছে, ২১ শতাংশকে অতিরিক্ত লোন নিতে হয়েছে, ১৯ শতাংশ মানুষ বন্ধু বা রিলেটিভদের কাছ থেকে ধার করেছে এবং ১২ শতাংশ ভুক্তভোগী অতিরিক্ত ক্রেডিট কার্ড লোন নিতে বাধ্য হয়েছে। বিশেষজ্ঞরারা বলছেন, প্রায় ৭৫ শতাংশ ওভার পেমেন্টের জন্য ডিডব্লিউপি কর্মকর্তাদের ত্রুটি দায়ী। কিন্তু এভাবে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে কম আয়ের মানুষরা।