আনসার আহমেদ উল্লাহ :
গত ১ আগস্ট পূর্ব লন্ডনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে
সর্ব ইউরোপিয়ান বঙ্গবন্ধু পরিষদ তাদের মাসব্যাপী কর্মসূচি শুরু করে। এই সময় উপস্থিত ছিলেন
সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিম উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক এস এম মুস্তাফিজুর রহমান,
যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসাইন আহবাব সহ সংগঠনের আরও অনেকে।
এক মিনিট নীরবতা এবং ফুলের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানোর পরে নেতৃবৃন্দরা বলেন ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সব রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের সূচনা করেন । বঙ্গবন্ধু সব রাজনৈতিক দল ও নেতাদের এই জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বাংলাদেশকে একটি স্বনির্ভর জাতি হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তাই তিনি স্বনির্ভরতার লক্ষ্য অর্জনের জন্য অর্থনৈতিক নীতিগুলি সংশোধন করেছিলেন, তিনি স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে এবং জনগণের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং কাজ নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন। বিপ্লবের উদ্দেশ্য ছিল: দুর্নীতি নির্মূল, কল-কারখানা ও ক্ষেতে উৎপাদন বৃদ্ধি, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা।
সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের আহ্বানে বঙ্গবন্ধু অভূতপূর্ব সাড়া পান। অল্প সময়ের মধ্যেই অর্থনীতি দ্রুত গতিতে শুরু করে। নতুন আশায় উদ্বুদ্ধ, জনগণ স্বাধীনতার সুফলকে সর্বদা দোরগোড়ায় প্রসারিত করার জন্য অগ্রসর হয়েছিল। কিন্তু সেই অবস্থা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি।
১৫ আগস্ট ভোরবেলা, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গুটিকয়েক বিশ্বাসঘাতক সামরিক অফিসারের হাতে হত্যা করা হয়। সেদিন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা, তার বড় ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র লে. শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী কামাল, বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ নাসের, শ্যালক ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং তার কন্যা শিশু সেরনিয়াবাত, আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ এবং ভাতিজা শহীদ সেরনিয়াবাত বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে, যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি এবং তার গর্ভবতী স্ত্রী আরজু মনি, বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জামিল ও ১৪ বছরের রিন্টু নিহত হয়। সব মিলিয়ে খুনিরা বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ১৬ সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনকে নরপশু ঘাতকরা হত্যা করে।
তবে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে পারে নি। বঙ্গবন্ধু এখন বাঙালির ঋদয় জুড়ে আছেন
এবং তার স্বপ্নের বাংলাদেশ তারই কন্যা প্রধানমত্রী শেইখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে।