নিজস্ব প্রতিবেদক :
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৩) সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ নিয়োগ দিয়েছেন বলে আইন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগের বিচারক বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করিয়াছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।
সংবিদানের ৯৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে বিচারকদের ৬৭ বছরের বেশি হলে আর সে পদে থাকার সুযোগ নেই। সে হিসেবে বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর ৬৭ বছর পূর্ণ হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ওইদিন তিনি অবসরে যাবেন। এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ওমরাহ পালন করতে ১১ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর দেশের বাইরে থাকবেন।
যে কারণে গতকাল সোমবার আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান বিচারপতির কার্জভার পালনের দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। এ দায়িত্ব পালনের মধ্যেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেলেন ওবায়দুল হাসান।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের জীবন বৃত্তান্ত :
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের ছয়াশী (হাটনাইয়া) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তার বাবা আখলাকুল হোসাইন আহমেদ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তিনি নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ওবায়দুল হাসানের মায়ের নাম বেগম হোসনে আরা হোসাইন। ওবায়দুল হাসানের ভাই সাজ্জাদুল হাসান ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব। পরে তাকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (অনার্স), এমএসএস (অর্থনীতি) করার পর এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদ প্রাপ্ত হন। পরে ১৯৮৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০৫ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আইন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।২০০৯ সালের ৩০ জুন তিনি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০১১ সালের ৬ জুন তার নিয়োগ স্থায়ী করা হয়। তিনি ২০১২ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ওই বছর ১৩ ডিসেম্বর তাকে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানকরা হলে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের ১১টি মামলার রায় দেন তার নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল। ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ওবায়দুল হাসানকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।