সরকার কুষ্ঠরোগ নির্মূলে অঙ্গীকারাবদ্ধ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কুষ্ঠরোগীদের কেউ আর দূর-দূর, ছেই-ছেই করবেন না, এটা আমার অনুরোধ। আসুন তাদের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়ে, তাদের পাশে থেকে আমরা সুস্থ করে তুলি। তারা আমাদেরই আপনজন।’
রবিবার (১২ নভেম্বর ২০২৩) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিতীয় কুষ্ঠরোগ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কুষ্ঠরোগ সম্পর্কে একটা বিরূপ ধারণা আছে। সবাই মনে করতো এটা একটা ছোঁয়াচে রোগ। তাই এ ধরনের রোগীদের কাছে কেউ যেতে চাইত না। আমি যখন এ ধরনের রোগীদের কাছে যেতাম তাদের সঙ্গে বসে কথা বলতাম, আমাকে অনেকে মানা করত। কিন্তু আমি তাদের বলতাম, এটা তো ছোঁয়াচে রোগ না। এই রোগ নির্মূলে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিই। ১৯৯৮ সালে আমরা কুষ্ঠরোগ নির্মূলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করি।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মেডিকেল সায়েন্সের ওপর গবেষণা করা আমাদের খুব বেশি দরকার। আপনারা সবাই কিন্তু এ বিষয়ে গবেষণাটা খুব কমই করেন। এখানে যদি দয়া করে আপনারা গবেষণাটা করেন, তাহলে আমাদের দেশে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত যত রোগ আছে সেগুলোর সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা পেয়ে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারব।’
বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত যখন সরকার ক্ষমতায় ছিলাম। আমরা সারাদেশে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তখন প্রায় ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আমরা নির্মাণ করি এবং এর মধ্যে ৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালুও করেছিলাম। মাত্র এক বছরের মধ্যে সাফল্য প্রায় ৭০ ভাগের উপরে ছিল। মানুষের অনেক সাড়া পড়ে। কারণ বিনা-পয়সায় সেখানে ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারিনি। তখন বিএনপি ক্ষমতায় আসে। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়েই কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। স্বাস্থ্যসেবা থেকে মানুষকে তারা বঞ্চিত করে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় আসি। এরপর থেকে আমরা আবারও মানুষের স্বাস্থ্যসেবার দিকে বিশেষভাবে নজর দিই। জনগণের স্বাস্থ্যসেবা সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য আমরা এমডিজি, ভ্যাকসিন হিরোসহ বিভিন্ন সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে যাতে প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে ওঠে, তার জন্য প্রাইভেট হাসপাতালের সব যন্ত্রপাতির ওপর ট্যাক্স, বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসার জন্য ট্যাক্স একেবারে শূন্য করে দেই। বেসরকারি উদ্যোক্তা যাতে সৃষ্টি হয় সেজন্য তাদের উৎসাহিত করি। তাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা আমরা করে দেই। যার জন্য সারা বাংলাদেশে প্রাইভেট হাসপাতাল গড়ে উঠেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সারাটা জীবন আমার বাবা সংগ্রাম করেছিলেন। সে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারছি। তার সেই স্বপ্নপূরণই আমার একমাত্র লক্ষ্য।’