মির্জা আবুল কাসেম,
জগন্নাথপুর টাইমস ডেস্ক :
মনোমুগ্ধকর নৃত্য গানে সেই ৫২”র রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই আন্দোলন ও ৭১”র বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে স্মরণ করে লন্ডনে বুলবুল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস (বাফা) ইউকের শুভ উদ্বোধন।
বুলবুল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস (বাফা) ইউকে এর শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন, অমর একুশে শহীদ দিবস, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সুন্দরভাবে উপস্থাপনা করা হয়েছে।
লন্ডনের রেডব্রিজ এর দি ড্রাইভ চার্চে সম্প্রতি ‘বাফা’র শুভ উদ্বোধন হয়েছে। অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ‘বাফা’ ইউকে ব্রাঞ্চের প্রিন্সিপাল বাংলাদেশের জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্য শিল্পী ও অভিনয়শিল্পী রুবাইয়াত শারমিন ঝরা।
অনুষ্ঠানে নাচ, গান, আলোচনা ও আবৃত্তিতে অমর একুশ এবং স্বাধীনতা দিবসকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করা হয়। অনুষ্ঠানের শিল্পী, কলাকুশলি সকলের পরিধানেও ছিল বাংলাদেশের কৃষ্টি -সংস্কৃতির ছাপ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- লন্ডনের রেডব্রিজ কাউন্সিলের মেয়র শিলা বেইন, বারকিং ও ডাগেনহাম কাউন্সিলের মেয়র মঈন কাদরী, এনটিভি ইউরোপের সিইও সাবরিনা হোসেন, বাংলাদেশ হাই কমিশন লন্ডনের কাউন্সেলর (কূটনৈতিক শাখা এবং প্রেস শাখা) মউমিতা জিনাত, ও মৈনাক রায় প্রমুখ।
বাংলাদেশ থেকে পাঠানো ভিডিও ফুটেজে শুভেচ্ছা জানান বুলবুল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস বাংলাদেশ এর সভাপতি মোহাম্মদ ছাদ উল্লাহ, সাবেক সভাপতি হাসানুর রহমান বাচ্চু, সম্পাদক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান, উপাধ্যক্ষ শ্রী কাজল মুখার্জি, নৃত্য শিল্পী আমানুল হক, নৃত্য শিল্পী সেলিনা হক ও নৃত্য শিল্পী সাদিয়া ইসলাম মৌ।
‘বাফা’র সভাপতি মোহাম্মদ ছাদ উল্লাহ নৃত্যাচার্য বুলবুল চৌধুরি’র প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বলেন, ‘৫৫ সালের ১৭ই মে তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু মোহাম্মদ নূরুল হুদা তাঁর স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে বুলবুল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস (বাফা) প্রতিষ্ঠা করেন। তৎকালিন সময়ের বিচারপতি এম ইব্রাহিম বাফা’র সভাপতি হিসেবে ‘বুলবুল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস’ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেছিলেন।
ইউকেতে ‘বাফা’র কার্যক্রম শুরুর এমন একটি মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করবার জন্যে বাংলাদেশের বাফা’র সভাপতি মোহাম্মদ ছাদ উল্লাহ বাফা’র ইউকে’র প্রিন্সিপাল রুবাইয়াত শারমিন ঝরা এবং তাঁর দলকে শুভেচ্ছা জানান ।
বাফা’ ইউকে’র সকল সদস্যদের সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্যে অনুরোধ করেন। যাতে বাংলাদেশের বুলবুল অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস এর মত ‘বাফা’ ইউকে-ও বিশ্বব্যাপী পরিচিতি লাভ করতে পারে।
প্রতিষ্ঠানের পিয়ানো শিক্ষক এইহাম শাহীদের চমৎকার পিয়ানো মিউজিকের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের শুরু হয়। তিনি পিয়ানোতে পরিবেশন করেন ‘আমার ভাই এর রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ এবং ‘এক সাগরে রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা’ ।
এই মিউজিকের সাথে সকল অংশ গ্রহণকারিরা মঞ্চে এসে তাদের উপস্থিতি জানান এবং সাথে নৃত্য পরিবেশন করেন বাফা ইউকে’র নৃত্যের শিক্ষক নৃত্য শিল্পী কাজি ফারহানা আখতার।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলায় গান গাই’ কাজী নজরুল ইসলামের ‘বল বীর বল উন্নত মম শির’, রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের ‘খরবায়ু বয় বেগে’, নয়ীম গহরের ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’, হেলাল হাফিজ এর ‘একটি পতাকা পেলে’ কবিতা ও গান এবং অন্যান্য গানের সাথে শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। শিশু শিল্পীরাও মনোমুগ্ধকর নাচ পরিবেশন করেছে।
রুবাইয়াত শারমিন ঝরা বলেন, বাফা ছাড়াও লন্ডনের অন্যান্য নৃত্য সংগঠনগুলোকেও একত্রিত করবার চেষ্টা করেছি। যারা আমাদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন তাদের কাছে আমি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন নৃত্য শিল্পী সোনিয়া সুলতানা, মণিপুরি নৃত্য শিল্পী কাজী রায়হান, বাংলাদেশের নৃত্য শিল্পী মনিরুল ইসলাম মুকুল, সুপ্তি অ্যাকাডেমি’র শিশু শিল্পীগণ, নৃত্য শিল্পী আরওয়া রশিদ, ভরতনাট্যম শিল্পী প্রাপ্তি দেবাস্কর, ধামাইল শিল্পী সোহেল আহমেদ, কাদের, মিথিলা এবং বাফা ইউকে’র প্রিন্সিপাল রুবাইয়াত শারমিন ঝরা।
নাচের পাশাপাশি আরও ছিল আবৃত্তি। আবৃত্তিতে অংশ নিয়েছেন বাফা ইউকে’র সদস্য আনিসুর রহমান বাদল এবং ট্রিও আর্টস এর সদস্য সাদেক আহমাদ চৌধুরি। এছাড়াও বাফা ইউকে’র প্রথম পিয়ানো স্টুডেন্ট যায়ান ইসলামকেও ছোট্ট একটি পিয়ানো পিস পরিবেশন করার সুযোগ দেয়া হয়।
উপস্থাপনায় ছিলেন বাফা ইউকে’র সদস্য শায়লা শারমিন এবং ট্রিও আর্টস এর সদস্য রুমি হক।
অনুষ্ঠানের সামগ্রিক সহযোগিতায় ছিলেন মেসবাহ শাহীদ, বাতিরুল হক সরদার, অপু চৌধুরী, আযান চৌধুরী, ইমরান খান, সাজেল কুরেশি, ঈহান শাহীদ ও শাহ্নুর হোসেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মুসা হাসান, শ্যামল চৌধুরী, ঊর্মি মাযহার, ইমতিয়াজ আহমেদ, ডঃ আনন্দ গুপ্তা, রোকশানা খান, মোস্তফা কামাল, নিলুফা হাসান, আব্দুল আজিজ, মোহাম্মদ শাহিদ আলি, সিড সাহা, মিরা বড়ুয়া, শাহিদুর রহমান, নন্দিতা মুখার্জি, স্মৃতি আজাদ, সিসিলি কামাল, নাসির উদ্দিন, ইফতেখার চৌধুরী প্রমুখ ।