জগন্নাথপুর টাইমসমঙ্গলবার , ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ৩রা বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল

Jagannathpur Times Uk
এপ্রিল ১৫, ২০২৫ ২:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এসকেএম আশরাফুল হুদা,
জগন্নাথপুর টাইমস ডেস্কঃ

‘শাওয়াল’ শব্দটি আরবি। এর অর্থ হলো উঁচু করা, উন্নতকরণ, পাল্লা ভারী হওয়া, গৌরব করা, বিজয় লাভ করা, প্রার্থনায় হাত উঠানো ইত্যাদি। প্রতিটি অর্থের সঙ্গেই শাওয়াল মাসের রয়েছে গভীর সম্পর্ক।

এ মাসের ছয়টি রোজা রাখা সুন্নত। শাওয়ালের ছয় রোজার ফজিলত বর্ণনা করে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল। (সহিহ মুসলিম)।

ফরজ নামাজের দুর্বলতা কাটাতে যেমন নফল নামাজ রয়েছে, তেমনি ফরজ রোজার কমতি কাটাতে রয়েছে শাওয়ালের ছয় রোজা। শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখা মহানবী (সা.)-এর সুন্নত। এই ছয় নফল রোজা রমজানের ফরজ রোজার সব ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষতিপূরণ।

ছয় রোজার মাধ্যমে রমজানের রোজা রাখতে পারার শুকরিয়া আদায়ও করা হয়। বান্দার আমল আল্লাহ তায়ালার কাছে কবুল হওয়ার আলামত হলো, সেই কাজের পর সে অন্য নেক আমলগুলো করতে থাকে। সুতরাং এই ছয় রোজা রাখতে পারা রমজানের রোজা কবুল হওয়ারও আলামত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে এই ছয় রোজা রাখতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে রাখার নির্দেশ দিতেন। আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল, এরপর শাওয়ালের ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছরই রোজা রাখল। (মুসলিম: ২৬৪৮)।

রমজানের ৩০টি রোজার সঙ্গে শাওয়ালের ৬টি রোজা যুক্ত হলে মোট রোজার সংখ্যা হয় ৩৬। আর প্রতিটি পুণ্যের জন্য ১০ গুণ পুরস্কারের কথা উল্লেখ আছে পবিত্র কুরআনে। তাহলে ৩৬টি রোজার ১০ গুণ হলো ৩৬০টি রোজার সমান (এটি পুরস্কারের দিক থেকে), অর্থাৎ সারা বছর রোজার সমান সওয়াব হবে।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যে ব্যক্তি একটি সৎ কাজ করল, সে ১০ গুণ সওয়াব পাবে।’ (সুরা আনআম: ১৬০)।

হাদিসে এসেছে, সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রমজানের রোজা ১০ মাসের রোজার সমতুল্য, আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং, এই হলো এক বছরের রোজা।’ (নাসায়ি: ২/১৬২)।

শাওয়ালের ছয়টি রোজার ব্যাপারে কিছু ভুল ধারণা সমাজে প্রচলিত। অনেকের ধারণা, এই রোজা শুধু নারীরা রাখবেন। এই ধারণা সত্য নয়। এই রোজা নারী-পুরুষ সবার জন্য সুন্নত।

এই রোজা গুলো মাসের শুরু, শেষ কিংবা মাঝামাঝি—সব সময়ই রাখা যায়। এক নাগাড়ে অথবা মাঝে ফাঁক রেখে পৃথক ভাবেও রাখা যায়। শাওয়াল মাসে শুরু করে এই মাসে শেষ করলেই হলো। তবে ঈদুল ফিতরের পর শাওয়ালের প্রথম দিকে একসঙ্গে ছয়টি রোজা রাখাই উত্তম।

শাওয়াল মাসের আমলে উন্নতি লাভ হয়, নেকির পাল্লা ভারী হয়, আমলে সাফল্য আসে, কল্যাণ প্রত্যাশী আল্লাহর কাছে উভয় হাত প্রসারিত করে প্রার্থনায় মগ্ন হয়। রমজানের পূর্ণ মাস রোজা পালনের পর আরও কয়েকটি রোজা রাখার আনন্দে বিভোর হয় মুমিন। যে রোজার বরকতে বছর জুড়ে রোজা রাখার সাওয়াব মিলে। এ সবই শাওয়াল মাসের আমলের সার্থকতা।

শাওয়ালের ৬ রোজা সুন্নাত:

শাওয়াল মাসের এ ছয়টি রোজা মূলত সুন্নত। যেহেতু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে তা আমল করেছেন এবং আমল করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পরিভাষায় এগুলোকে নফল রোজা বলা হয়। কারণ, এগুলো ফরজ ও ওয়াজিব নয়, অতিরিক্ত তথা নফল। এ মাসে ছয়টি নফল রোজা রাখা সুন্নত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-‘যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে; তারা যেন সারা বছরই রোজা পালন করল।’ (মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)।

রোজা রাখার নিয়ম:

মাসের যে কোনো সময় এই রোজা আদায় করা যায়। ধারাবাহিকভাবে বা মাঝে মাঝে বিরতি দিয়েও আদায় করা যায়। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) শাওয়াল মাসের ভেতর ছয় রোজা রাখার কথা বলেছেন। মাসের প্রথম দিকে, মধ্যভাগে না শেষাংশে সে কথা হাদিসে উল্লেখ নেই। আবার ছয়টি রোজা একসঙ্গে লাগাতার রাখতে হবে, না-কি বিরতি দিয়ে দিয়ে রাখতে হবে, সে কথারও কোনো উল্লেখ নেই।

তাই বিজ্ঞ আলিমগণের অভিমত হল, যেহেতু শাওয়াল মাসের প্রথম দিন মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উৎসব এবং ওই দিনে রোজা রাখা হারাম, সেহেতু ঈদুল ফিতরের দিনটি বাদ দিয়ে মাসের যে কোনো ছয়দিনে রোজা রাখলেই উল্লিখিত আমল আদায় হয়ে যাবে।

অপরদিকে আরবি মাসের ১৩, ১৪ এবং ১৫ তারিখে আইয়ামে বীজের রোজা রাখাও সুন্নত। এ হিসেবে আলিমগণ পরামর্শ দিয়ে থাকেন ওই তারিখগুলোতে শাওয়ালের রোজা রাখলে একসাথে রাসুল (সা.) এর দুটি ‍সুন্নত পালন করা যায়। বাংলাদেশে এ বছর ইংরেজি এপ্রিল মাসের ১২, ১৩ এবং ১৪ তারিখ আইয়ামে বীজের রোজা রাখা যাবে।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।