জগন্নাথপুর টাইমসশুক্রবার , ৮ মার্চ ২০২৪, ২৭শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গরীবের অধিকার যাকাত : সম্পদকে পবিত্র ও সম্পদশালীদের পরিশুদ্ধ করে- ড. সৈয়দ রেজওয়ান আহমদ

Jagannathpur Times BD
মার্চ ৮, ২০২৪ ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

গরীবের অধিকার যাকাত : সম্পদকে পবিত্র ও সম্পদশালীদের পরিশুদ্ধ করে- ড. সৈয়দ রেজওয়ান আহমদ

::

জাকাত আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ পবিত্র হওয়া, পরিশুদ্ধ হওয়া, বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাদি। পারিভাষিকভাবে জাকাত; ধনীদের অর্থ-সম্পদে আল্লাহর নির্ধারিত অংশকে বোঝায়। জাকাত সম্পদকে পবিত্র করে, বিত্তশালীদের পরিশুদ্ধ করে, দারিদ্র্য মোচন ও উৎপাদন বৃদ্ধি করে। তাছাড়া অর্থনৈতিক বৈষম্য হ্রাস করে সমাজে শান্তি আনয়ন করে। ইসলাম মানবসমাজে অর্থনৈতিক সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বিত্তশালীদের ওপর নির্দিষ্ট হারে জাকাত ফরজ করেছে। আর জাকাতকে বলা হয়েছে গরিবের অধিকার। এটা কোনোক্রমেই গরিবের প্রতি ধনীর দয়া বা অনুগ্রহ নয়। জাকাত দ্বিতীয় হিজরিতে ফরজ হয়। সালাত দৈহিক ইবাদত, আর জাকাত হলো আর্থিক ইবাদত।
পবিত্র কোরআন মজিদে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জাকাতের নির্দেশনা এসেছে ৮২ বার। তার মধ্যে ‘জাকাত’ শব্দ ৩০ বার, ‘ইনফাক’ ৪৩ বার ও ‘সাদাকাহ’ দ্বারা ৯ বার জাকাতের নির্দেশনা রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে জাকাত সম্পর্কে বলা হয়েছে,
‘তাদের মালামাল থেকে জাকাত গ্রহণ কর যাতে তুমি সেগুলোকে পবিত্র করতে এবং সেগুলোকে বরকতময় করতে পার এর মাধ্যমে। (আল কোরআন : ৯ : ১০৩)
জাকাত ফরজ হওয়ার দলীল; ‘তাদের এ মর্মে আদেশ করা হয়েছে যে, তারা নিবিষ্ট মনে একান্তভাবে শুধুমাত্র আল্লাহর এবাদত করবে, যথাযথভাবে সালাত আদায় করবে, জাকাত প্রদান করবে, আর এটাই হলো সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন। (আল কোরআন: ৯৮ : ৫)

অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে; যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, সৎ কাজ করেছে, নামাজ প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং জাকাত প্রদান করেছে, তাদের জন্য পুরস্কার তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে। তাদের কোনো ভয় নাই এবং তারা দুঃখিত হবে না।’ (আল কোরআন; ২ : ২৭৭)
অন্য এক আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা যথানিয়মে সালাত আদায় কর, জাকাত প্রদান কর, আল্লাহ তাআলাকে উত্তম ঋণ দাও, আর তোমরা নিজেদের কল্যাণে যা অগ্রে প্রেরণ করবে, তা আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম ও শ্রেষ্ঠ প্রতিদান হিসাবে প্রাপ্ত হবে।’ (আল কোরআন : ৭৩ : ২০) এ ছাড়াও জাকাত বিষয়ে পবিত্র কোরআনে অসংখ্য আয়াত রয়েছে যা সালাতের পাশাপাশি আলোচিত হয়েছে।

পবিত্র হাদীস শরীফে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি,‘পাঁচটি জিনিসের ওপর ইসলামের ভিত্তি রাখা হয়েছে। যথা : এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই, সালাত আদায় করা, জাকাত প্রদান করা, সিয়াম পালন করা ও হজ সম্পাদন করা।‘ (বুখারী ও মুসলিম) সুতরাং বুঝা গেল, জাকাত ইসলামের মৌলিক ভিত্তিগুলোর অন্যতম।
তাছাড়া সকল মুসলিম একমত (অর্থাৎ ইজমা) যে, জাকাত একটি ফরজ বিধান। সুতরাং জাকাত ফরজ জেনেও যদি কোন ব্যক্তি তা অস্বীকার করে, তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে। আর যে জাকাত প্রদানে কৃপণতা করবে বা পরিমাণের চেয়ে কম দিবে, সে লাঞ্চনা ও কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে।

যেসব সম্পদে যাকাত দিতে হয়—
এক. (ক) ভূমি থেকে উৎপাদিত শস্য ও ফল-ফলাদি।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন; ‘হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের বৈধ উপার্জন এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যে শস্য উৎপন্ন করি তা থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় কর।’ (আল কোরআন; ২ : ২৬৭)
অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন; ‘ফসল কাটার সময় তার হক (জাকাত) আদায় কর।‘ (আল কোরআন; ৬ : ৪১)

ফসলের জাকাত প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন; ‘বৃষ্টির পানিতে উৎপন্ন ফসল ও উশরী জমিতে উৎপন্ন ফসলের জাকাত বিশ ভাগের একভাগ।’ (বুখারি)
ফসলের ওপর জাকাত ওয়াজিব হওয়ার নির্ধারিত পরিমাণ হচ্ছে ‘নিসাব‘। পাঁচ ওসকে নিসাব হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; ‘শস্য বা ফলমূল এর ওপর জাকাত ওয়াজিব হবে না, যতক্ষণ তা পাঁচ ওসক পরিমাণ না হয়।’ আর ‘ওসক‘ এর পরিমাণ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা. এর ব্যবহৃত ৬০ ‘সা‘ এর সমপরিমাণ এক ওসক। সে হিসেবে জাকাতের নিসাব হওয়ার জন্য ৩০০ ‘সা‘ এর প্রয়োজন।
আর এক ‘সা‘ সমপরিমাণ ২০৪০ গ্রাম। সুতরাং নিসাব এর পরিমাণ দাড়াল ৬১২ কেজি। তাই এর কম ফসলে মধ্যে জাকাত ওয়াজিব নয়। উক্ত নিসাবে বিনাশ্রমে প্রাপ্ত ফসলে জাকাতের পরিমাণ হল এক দশমাংশ আর শ্রম ব্যয়ে প্রাপ্ত ফসলে জাকাতের পরিমাণ হল এক বিশমাংশ।

এক. (খ) ফলমূল, শাক-সব্জি, তরমুজ ও এ জাতীয় বস্তুর ওপর জাকাত ওয়াজিব নয়। হযরত ওমর রা. বলেন, ‘শাক-সব্জিতে জাকাত নেই।‘

হযরত আলী রা. বলেন,‘আপেল ও এ জাতীয় ফলের ওপর জাকাত ওয়াজিব নয়।’ যেহেতু এগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার জাতীয় শস্য বা ফল নয়, তাই এর ওপর জাকাত নেই। তবে যদি এগুলো টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়, যার অংক নিসাব পরিমাণ, তাহলে এ মূল্যের ওপর এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর জাকাত ওয়াজিব হবে।

(দুই) প্রাণীর ওপর জাকাত; যে সকল প্রণীর উপর জাকাত ওয়াজিব হয় তা হল, উট, গরু, ছাগল,  ভেড়া ও মহিষ। যদি এ সকল প্রাণী সায়িমা হয় ও মাঠ চড়ে ঘাষ খায় এবং এগুলো বংশ বৃদ্ধির জন্য পালন করা হয় ও তা নিসাব পরিমাণ হয়, তাহলে এদের জাকাত দিতে হবে। উটের নিসাব ন্যুনতম ৫টি, গরুর ৩০টি, আর ছাগলের ৪০টি।

সায়িমা ঐ সকল প্রাণীকে বলে, যেগুলো সারা বছর বা বছরের অধিকাংশ সময় চারণভূমিতে ঘাস খেয়ে বেড়ায়। যদি এ সকল প্রাণী সায়িমা না হয়, তবে এর ওপর জাকাত ওয়াজিব নয়। কিন্তু ব্যবসার উদ্দেশ্যে পালন করা হলে, সর্বাবস্থায় এগুলোর জাকাত দিতে হবে, যদি তা নিসাব পরিমাণ হয়। আর নিসাবের কম হলে এগুলোর মূল্য অন্য সম্পদের সাথে যুক্ত করে নিসাব পরিমাণ হলে জাকাত দিতে হবে।

(তিন) স্বর্ণ- রৌপ্য: স্বর্ণ এবং রৌপ্যের ওপর (নিসাব পরিমাণ হলে) সর্বাবস্থায় জাকাত ফরজ।
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন; ‘যারা সোনা- রূপা জমা করে রাখে অথচ তা আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় করে না। আপনি তাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সংবাদ প্রদান করুন। কিয়ামত দিবসে ঐ সোনা-রূপাকে জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে তা দ্বারা তাদের ললাট, পার্শ্ব ও পৃষ্ঠে ছেকা দেয়া হবে এবং বলা হবে এ হল তোমাদের সে সকল ধন-সম্পদ যা তোমরা নিজেদের জন্য সঞ্চয় করে রাখতে। সুতরাং আজ জমা করে রাখা সম্পদের স্বাদ গ্রহণ কর।‘ (আল কোরআন; ৯ : ৩৪-৩৫)

সঞ্চয় করে রাখার অর্থ হল, আল্লাহর নির্দেশিত পথে পরিমাণ মত ব্যয় না করা। আর সর্বোত্তম ব্যয় হল- জাকাত প্রদান করা।
এ বিষয়ে হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত,  রাসূলুল্লাহ সা. বলেন; ‘যে সকল সোনা-রূপার মালিকগণ তাদের সম্পদ থেকে নির্ধারিত হক আদায় করে না, কিয়ামত দিবসে তার জন্য কতগুলো আগুনের পাত প্রস্তুত করে তা জাহান্নামের আগুনে উত্তপ্ত করে তা দ্বারা ঐ লোকদের ললাট ও পিঠে চেপে ধরা হবে, তাপ কমে গেলে উত্তপ্ত করে পুনরায় চেপে ধরা হবে। পঞ্চাশ হাজার বছর দীর্ঘ সময় বান্দাদের হিসাব-নিকাশ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে শাস্তি চলতেই থাকবে।’ (মুসলিম)
সোনা-রূপ জাতীয় দিনার, দিরহাম, চাকা বা টুকরা, অলংকারসহ সকল কিছুর ওপরই জাকাত ফরজ, কারণ সোনা-রূপা সংক্রান্ত সকল আয়াত বা হাদীসে এগুলো ব্যাপকভাবে বর্ণিত হয়েছে।

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনুল আস রা থেকে বর্ণিত; ‘একদা একজন মহিলা তার মেয়েকে সাথে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সা. এর নিকট আসলেন, ঐ মেয়ের হাতে স্বর্ণের দু’টি ভারি ও মোটা বালা ছিল, তা দেখে রাসূলুল্লাহ সা. বললেন, তুমি কি এগুলোর জাকাত দাও? মেয়ে বলল, না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি এটা পছন্দ কর যে কিয়ামত দিবসে আল্লাহ এগুলোর দ্বারা দু’টি আগুনের চুড়ি বানিয়ে তোমার হাতে পড়িয়ে দিবেন? মেয়েটি এ কথা শুনে বালা দু’টি খুলে রাসূলুল্লাহ সা. কে দিয়ে বলল, এগুলো আমি আল্লাহর রাস্তায় দান করলাম।

অন্য এক হাদীসে আয়েশা রাদিআল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন; ‘একবার রাসূলুল্লাহ সা. আমার নিকট এলেন তখন আমার হাতে কয়েকটি রূপার আংটি ছিল, তখন তিনি বললেন, এগুলো কি? আমি বললাম, আপনার সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য এগুলো তৈরি করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি এগুলোর জাকাত প্রদান কর? আমি বললাম না, তিনি বললেন, তোমার জাহান্নামে যাওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। (আবু দাউদ)সোনা-রূপার নিসাব পূর্ণ হলে তার ওপর জাকাত ফরজ; স্বর্ণের নিসাব হল ২০ দিনার। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন; ‘সোনা বিশ দিনার পরিমাণ হলে তাতে জাকাত ফরজ হবে।‘ (আবু দাউদ) দিনার বলতে ইসলামী দিনার উদ্দেশ্য যার ওজন এক মিছকাল। মিছকাল সমান সোয়া চার গ্রাম। সে হিসাবে সোনার নিসাব হল ৮৫ গ্রাম। যা এ দেশীয় মাপে ৭.৫ ভরি হয়।

এছাড়া রূপার নিসাব হলো পাঁচ আওকিয়া। রাসূলুল্লাহ সা. বলেন,‘পাঁচ আওকিয়ার কম রূপার ওপর জাকাত নেই।’ (বুখারী, মুসলিম) এক আওকিয়া সমান ৪০ ইসলামী দিরহাম। সে মতে রূপার নিসাব হল ২০০ দিরহাম। আর এক দিরহাম হল এক মিছকালের সাত দশমাংশ, এর মোট ওজন ১৪০ মিছকাল, যার বর্তমান প্রচলিত ওজন হল, ৫৯৫ গ্রাম। যা এ দেশীয় মাপে ৫২.৫ ভরি, তা থেকে ৪০ ভাগের ১ ভাগ জাকাত দেয়া ফরজ।
এমনিভাবে কাগজের তৈরি নোটের ওপরও জাকাত ওয়াজিব। কারণ এ নোটগুলো রূপার বদলেই চলমান, সুতরাং এগুলো রূপার স্থলাভিষিক্ত হবে এবং এর মূল্য রূপার নিসাবের সমপরিমাণ হলে, তাতে জাকাত ওয়াজিব হবে।

সোনা-রূপা ও কাগজের নোট ইত্যাদির ওপর সর্বাবস্তায় জাকাত ওয়াজিব। চাই এগুলো হাতে মজুদ থাকুক বা অন্য কারো কাছে ঋণ থাকুক। এ থেকে বুঝা যায়, সব ধরনের ঋণ (চাই তা কর্জ হোক বা বিক্রয়কৃত মূল্য হোক অথবা ভাড়া বা এ ধরনের যাই হোক না কেন) তার ওপর জাকাত ওয়াজিব। উক্ত ঋণ আদায় হওয়া পর্যন্ত প্রতি বছর অন্যান্য সম্পদের সাথে সাথে এগুলোর জাকাত দিতে হবে। এক সাথেও দিতে পারে, যদি ঋণ এমন লোকের কাছে থাকে যে স্বচ্ছল এবং যার থেকে সহজে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আর যদি দরিদ্র বা প্রতারক লোককে ঋণ দেয়া থাকে, তাহলে ঋণ আদায় হওয়ার পর শুধুমাত্র ঐ বছরের জাকাত প্রদান করবে।
তাছাড়া সোনা-রূপা ছাড়া অন্য সকল খনিজ পদার্থের ওপর জাকাত ওয়াজিব নয়। তবে যদি সেগুলো ব্যবসার জন্য হয়ে থাকে, তবে নিসাব পরিমাণ হলে অবশ্যই জাকাত দিতে হবে।
৪. ব্যবসায়ী পণ্য। স্থাবর-অস্থাবর সকল প্রকার ব্যবসায়ী পণ্যের ওপর জাকাত ওয়াজিব।

বছরান্তে সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করত, তার ৪০ ভাগের এক ভাগ জাকাত দিতে হবে। মেশিনারিজ বা খুচরা যন্ত্রাংশ ও এ জাতীয় ক্ষুদ্র পণ্যের ব্যবসায়ীদের কর্তব্য হল, ছোট-বড় সকল অংশের মূল্য নিধারণ করে নিবে, যাতে কোন কিছু বাদ না পড়ে। পরিমাণ নির্ণয়ে যদি জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে সতর্কতামূলক বেশী দাম ধরে জাকাত আদায় করবে, যাতে সে সম্পূর্ণ দায়িত্ত্ব থেকে মুক্ত হতে পারে।

এছাড়া মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু যথা খাবার, পানীয়, আসবাবপত্র, বাহন, পোষাক, (সোনা-রূপা ছাড়া) অলংকারসহ ব্যবহার্য পণ্যের ওপর জাকাত আবশ্যক নয়। কারণ, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘মুসলিমদের গোলাম, বাদী, ঘোড়া এগুলোর ওপর জাকাত নেই।‘ এমনিভাবে ভাড়া দেয়ার জন্য প্রস্তুতকৃত পণ্যের ওপর জাকাত আসবে না। তবে সেগুলো থেকে প্রাপ্ত অর্থের ওপর নিসাব পূর্ণ হবার পর জাকাত আসবে।

তাই আসুন! আমাদের সম্পদের জাকাত যথাযথ ভাবে আদায় করে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করি, এতে আমাদের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ সাধিত হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল সম্পশালীদেরকে হিসাব করে জাকাত দিতে তাওফিক দিন। আমীন।

 

লেখক : ড. সৈয়দ রেজওয়ান আহমদ, গবেষক ও অধ্যক্ষ।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।