তোফাজ্জল ইসলাম,
জগন্নাথপুর টাইমস :
সুরমার মোহনা’র ২১তম সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন : সাহিত্যচর্চার আলোকবর্তিকা জ্বালালো নতুন সম্ভাবনার দীপ্তি।
সাহিত্য সমাজের দর্পণ, জ্ঞানের আলোকবর্তিকা। সেই আলো ছড়াতে নিরন্তর পথ চলা সুনামগঞ্জের অন্যতম আলোচিত সাহিত্য সাময়িকী ‘সুরমার মোহনা’।
সোমবার (৯ জুন) বিকেলে সুনামগঞ্জ সদরের ইয়াকুব উল্লা পাবলিক উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হলো ম্যাগাজিনটির ঈদসংখ্যা (২১তম) সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সংগঠক ও সাহিত্যানুরাগী মো. সিরাজুল ইসলাম পলাশ।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুজ আলী।
তিনি বলেন- “সাহিত্য মানুষকে মানুষ করে, সমাজকে দেয় নৈতিক বোধ ও মানবিক চেতনার দিশা। ‘সুরমার মোহনা’ শুধু একটি ম্যাগাজিন নয়, এটি একটি আন্দোলন— চিন্তার, বোধের ও সমাজের বিবর্তনের।”
উপস্থিত ছিলেন সাহিত্য ও শিক্ষানুরাগী হাজী মো. মুক্তার আলী।
গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শওকত আলী বলেন- সুরমার মোহনা শুধু একটি সাহিত্যপত্রিকা নয়, এটি আমাদের মাটি ও মানুষের অনুভবকে তুলে আনার এক শক্তিশালী মাধ্যম। এই প্রয়াস তরুণদের চিন্তা জাগিয়ে তোলে, সৃজনশীলতার পথে উৎসাহ দেয়। আমি এর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।
প্রধান আলোচক দিগেন্দ্র বর্মন ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি প্রভাষক মশিউর রহমান বলেন, তরুণ লেখকদের আত্মপ্রকাশের নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে ‘সুরমার মোহনা’। এই সাময়িকীর প্রতিটি সংখ্যা একটি নতুন সাহিত্যযাত্রা, একেকটি সৃজনশীল স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি।
সভাপতিত্ব করেন সাময়িকীটির সম্পাদক, শিক্ষাবিদ সহ.অধ্যাপক কবি ফজলুল হক দোলন।
তাঁর বক্তৃতায় উঠে আসে এক গভীর সাহিত্যিক মমতা–এই পত্রিকার জন্ম হয়েছিল সাহিত্যকে ভালোবেসে, এই ভালোবাসা থেকেই তার পথচলা। পাঠকের ভালোবাসা, লেখকদের অক্লান্ত শ্রম আর সৃজনশীলতার ধারায় আমাদের এই প্রয়াস টিকে আছে। আমরা চাই, সুরমা পাড়ের সাহিত্য সারা বাংলার হৃদয়ে প্রবাহিত হোক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন:কবি মো. সহিদ মিয়া, সভাপতি, জাগ্রতকণ্ঠ সমাজকল্যাণ সাংস্কৃতিক পরিষদ, কবি ও সাংবাদিক মো. মহসিন কবির ,প্রবাসী সাহিত্য অনুরাগী শাহাজান মিয়া – লন্ডন প্রবাসী, বাচিক শিল্পী রতন দাস,মো. নুরুল হক, সভাপতি, জামালগঞ্জ সাহিত্য সংসদ, সৌদি প্রবাসী সমাজসেবী মো.তাজুল ইসলাম, সাহিত্য অনুরাগী মো.ফজলুল হক ও তরুণ ছড়াকার সাইফুর রহমান লিটন প্রমুখ।
মিছবাহ উদ্দীন রুমি, সাধারণ সম্পাদক, জাগ্রতকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদ – তিনি বলেন, “সুরমালর মোহনা এখন আঞ্চলিক সীমানা পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ের সাহিত্যিকদেরও আকৃষ্ট করছে। এটি এক চলমান সাহিত্য আন্দোলনের নাম।
আরো উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন, কবি প্রাবন্ধিক এস.ডি. সব্রত,গীতিকার আব্দুর রশীদ, চয়ন কুমার তালুকদার, মো. মোশাহীদ মিলটন, সাবেক সেনা সদস্য – মো. নুরুল আমিন চৌধুরী – ইকবাল হোসেন-সাবেক সেনা সদস্য মো.নুরুন্নবী,সাংবাদিক ও লেখক তোফাজ্জল ইসলাম জেলার নানা প্রান্ত থেকে আসা সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবীরা।
প্রতিটি বক্তাই তাঁদের বক্তব্যে ‘সুরমার মোহনা’-কে দক্ষিণাঞ্চলের সাহিত্যচর্চার এক অনন্য মঞ্চ হিসেবে আখ্যা দেন এবং পত্রিকাটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে আবৃত্তি, স্বরচিত কবিতা পাঠ ও সাহিত্যচর্চার নানা অনুষঙ্গ নিয়ে জমে ওঠে এক প্রাণবন্ত পরিসর।
সমাপনী বক্তব্যে সম্পাদক ফজলুল হক দোলন জানান, আগামীতেও ‘সুরমার মোহনা’ তার সাহিত্য আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। তরুণ লেখকদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
জেলার সাহিত্যপিপাসুদের মতে, এ ধরনের আয়োজনে নবীন-প্রবীণ লেখকদের মধ্যে সৃষ্টি হয় এক সাহচর্য, তৈরি হয় এক উজ্জ্বল সেতুবন্ধ।
সত্যই, সুরমার ঢেউয়ে যেমন ছন্দ খেলে যায়, তেমনি ‘সুরমার মোহনা’র পাতায় পাতায় খেলে যায় সৃজনের দীপ্তি। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি