আনসার আহমেদ উল্লাহ :
বন, ১৯ নভেম্বর, শনিবার – আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সেরাজি ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে বন নগরীতে ইন্টেগ্রেশন ও সামাজিক এবং আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রথম বার্ষিক দাবা টুর্নামেন্ট সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দাবা টুর্নামেন্টে দশজন খেলোয়াড় অংশ নেন। বি গ্রুপে বিজয়ী হয়েছেন স্পোর্ট গেমাইনশাফট ডয়েচার বুন্ডেস্ট্যাগ (এসজিডিবি) থেকে ইয়াগো স্টাইনম্যান, দ্বিতীয় স্থানে ইসুঞ্জ মওয়ানগেস এবং তৃতীয় স্থানে জায়গা করে নেন গঞ্জালো দে লা কুবা। গ্রুপ এ-তে বিজয়ী হয়েছেন লরেঞ্জো মারকুরি, দ্বিতীয় অবস্থানে বন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক অনুপম দত্ত এবং তৃতীয় অবস্থানে জায়গা করে নেন মাত্র ১৩ বছর বয়সী দাবাড়ু লাজলো সোয়েন গ্রাফ।
নেটওয়ার্ক পলিটিক অ্যাটেলিয়ার, বাসুগ ডায়াসপোরা অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, হাউস অফ ইন্টেগ্রেশন এবং জার্মান-বেঙ্গলি সোসাইটি কোলন-বন সহযোগী সংগঠন হিসাবে দাবা প্রতিযোগিতা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সহায়তা করে। দাবা টুর্নামেন্টটি বন নগরীর কায়জার-ফ্রিডরিশ স্ট্রিটে নেটওয়ার্ক পলিটিক অ্যাটেলিয়ার এর সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
সেরাজি ফাউন্ডেশন এর সভাপতি ড. হোসাইন আব্দুল হাই এর স্বাগত বক্তব্যের পর হাউজ অফ ইন্টেগ্রেশন, বনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং কোলনের অর্থনৈতিক আদালতের অবৈতনিক বিচারক যুবরাজ তালুকদার, জার্মান-বাঙলা সোসাইটি কোলন-বন এবং হাউস অফ ইন্টেগ্রেশনের সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম, নেটওয়ার্ক পলিটিক অ্যাটেলিয়ার এর বোর্ড সদস্য অ্যালব্রেশট ডব্লিউ হফম্যান, স্পোর্ট গেমাইনশাফ্ট ডয়েচার বুন্ডেস্ট্যাগ (এসজিডিবি) দাবা বিভাগের প্রধান রাইনার স্টার্ক এবং সীমান্ত ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক এবং এসএফ প্রকল্প পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম দাবা খেলার গুরুত্বপূর্ণ দিক এবং সমাজে স্বেচ্ছাসেবামূলক কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব এবং ভূমিকা তুলে ধরেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে অতিথিবৃন্দ অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি দাবা খেলার মাধ্যমে একত্রিত হওয়া এবং আন্তঃসাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তাঁরা আরও বলেন, বনের ৩৩৭,৪১৫ জনসংখ্যার প্রায় ৯৭০০০ জন অভিবাসী। মোট জনসংখ্যার অনুপাতে সেটা ২৯,৩%। কিন্তু অভিবাসী জনগোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়শই ভাষাগত বাধার কারণে জার্মান-ভাষী লোকদের সাথে মেশার সময় কিছুটা অস্বস্তি বোধ করেন, যা কখনও কখনও তাদের মধ্যে যোগাযোগ কঠিন করে তোলে।
অন্যান্যের মধ্যে, ইন্টেগ্রেশন হাউজের নির্বাহী সদস্য তামান্না খোন্দকার এবং রেশমা আক্তার, সেরাজি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য সিরাতুন নাইম, ডয়েচে ভেলে সম্পাদক আরাফাতুল ইসলাম এবং জিগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা সহযোগী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অতিথিবৃন্দ আরও বলেন, দাবা খেলায় সকল বয়স, লিঙ্গ এবং প্রেক্ষাপটের মানুষ আনন্দের সাথে এবং সবাচ্ছন্দের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারেন। একসাথে সময় কাটাতে পারেন। এছাড়াও, দাবা প্রতিযোগিতা আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগের সুযোগ খুলে দেয় এবং প্রতিযোগিতার বাইরেও নতুন দীর্ঘমেয়াদী সংযোগ তৈরি করে। দাবা খেলায় ৫ বছর বয়সী একটি শিশুও ২৫ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের বিরুদ্ধে বা হুইলচেয়ারে থাকা একজন ৭০ বছর বয়সী ব্যক্তির বিরুদ্ধেও একইভাবে খেলতে পারে। একইভাবে, একজন ব্যক্তির জাতি, বর্ণ, সাংস্কৃতিক পটভূমি বা ধর্মীয় অনুষঙ্গ একে অপরের সাথে দেখা এবং দাবা খেলার ক্ষেত্রে বাধা হওয়া উচিত নয়। এই কারণে, সেরাজি ফাউন্ডেশন সহযোগী সংগঠনগুলোর সাথে এই দাবা প্রতিযোগিতার উদ্যোগ নিয়েছে।