মালয়েশিয়া প্রতিনিধি : মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনভিত্তিক সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ এর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রখ্যাত মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটিতে (এমএমইউ) শুক্রবার (২১ জুন) সন্ধ্যায় সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান ও তার সহধর্মিণী পেন্ডোরা চৌধুরী, মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বি এন রেড্ডি, মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক দাতো ড. মাজলিহাম মো. সৌদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ মালয়েশিয়ার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক কোরের সদস্য, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, ফ্যাকাল্টি মেম্বার, স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা, সাংবাদিক এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তারা সপরিবারে চলচ্চিত্রটি উপভোগ করেন।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত ‘মুজিব-দ্য মেকিং অব আ নেশন’ প্রদর্শনীর আগে সিনেমার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান এবং ভারতীয় হাইকমিশনার বি এন রেড্ডি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা ২ লাখ মা-বোনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, বাঙালিদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপসহীন সংগ্রাম এবং বাঙালি জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ এই সিনেমার মাধ্যমে নিপুণভাবে তুলে ধরা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন কালোত্তীর্ণ ব্যক্তিত্ব এবং সম্মোহনী নেতা। এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনীর পাশাপাশি ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহ সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
তিনি বলেন, শুধু বাঙালি জাতি নয়, পৃথিবীর সব স্বাধীনতাকামী মানুষ এবং জাতির জন্য বঙ্গবন্ধু প্রাসঙ্গিক কারণ বঙ্গবন্ধু। শুধু রাজনীতিবিদ নয়, তিনি ছিলেন মানবিক একজন মানুষ। তিনি নির্যাতিত মানুষের অধিকারের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন।
ভারতীয় হাইকমিশনার বি এন রেড্ডি তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের একজন নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে এক অনন্যসাধারণ ব্যক্তিত্ব। তার অদম্য স্পৃহা, জনগণের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা এবং স্বাধীনতার অর্জনে অটল অঙ্গীকার উপমহাদেশের সম্মিলিত চেতনায় একটি অমোঘ চিহ্ন রেখে গেছে।
তিনি আরও বলেন, ছবিটি বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ যাত্রা, তার আত্মত্যাগ এবং অটল সংকল্পের উদযাপন।
বঙ্গবন্ধুর মতো অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্বের জীবনীভিত্তিক সিনেমা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সম্মুখে প্রদর্শনের জন্য মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটিকে ভেন্যু হিসেবে নির্ধারণের জন্য মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী অধ্যাপক দাতো ড. মাজলিহাম মো. সৌদ বাংলাদেশ হাইকমিশনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। ভবিষ্যতে হাইকমিশনের এ ধরনের আরও আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
প্রদর্শনী শেষে প্রবাসী বাঙালি এবং বিভিন্ন দেশের দর্শকরা সিনেমার নির্মাণশৈলীর প্রশংসা করেন। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রাম, দেশের প্রতি মমত্ববোধ এবং বিপথগামীদের হাতে তার সপরিবারে মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে দর্শকরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।