জগন্নাথপুর টাইমসরবিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কমিশনের সতর্কবার্তা : ইস্ট লন্ডন মসজিদ ট্রাস্টের ১৪ কোটির টাকারও বেশী অর্থের অপচয়, বিনিয়োগে চরম অব্যবস্থাপনা

Jagannathpur Times Uk
এপ্রিল ২০, ২০২৫ ৮:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বেলাল আহমদ বকুল, জগন্নাথপুর টাইমস ডেস্ক :

কমিশনের সতর্কবার্তা : ইস্ট লন্ডন মসজিদ ট্রাস্টের প্রায় ১৪ কোটির টাকারও বেশী অর্থের অপচয়, মসজিদের প্রায় এক মিলিয়ন পাউন্ড তহবিল বিনিয়োগে চরম অব্যবস্থাপনা। যে কারণে সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ইস্ট লন্ডন মসজিদ এর ট্রাস্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্ক করেছে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের চ্যারিটি কমিশন।

গতবছর থেকে এ কমিউনিটিতে এ বিষয় নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
২০২৪ সালে মসজিদ কর্তৃপক্ষ এক সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগ ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়, যেখানে বিষয়টি স্পষ্টভাবে আলোচনায় উঠে আসে। বছর পেরিয়ে গেলেও এই টাকা আর ফেরত আসেনি। কেউ কেউ বলছেন এই ১ মিলিয়ন পাউন্ড ফেরত আসার সম্ভাবনাও নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইস্টলন্ডন মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি ও কমিউনিটির বিশিষ্টজন, এ মসজিদের একজন শুভার্থী বলেন- আমি জানি না কেন তৎকালিন দায়িত্বরত ট্রাস্টিরা এই মেজ মেডিক্যাল নামক কোম্পানির কাছে বিনিয়োগ করেন। কে দিয়েছে তাদেরকে এই অধিকার? এখন কি এই টাকা ফিরিয়ে আনতে পারবে? এভাবে নানা জনে নানা কথা হচ্ছে এ বিষয় নিয়ে।

তবে সম্প্রতি মসজিদ কর্তৃপক্ষের বিনিয়োগ ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নিয়মিত দানকারী ও কমিউনিটির অনেক সদস্য। তাঁদের প্রশ্ন—চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানে দানকৃত অর্থ ব্যবসায়িক খাতে বিনিয়োগ কতটা ইসলামসম্মত?

চ্যারিটি কমিশনের এই সতর্কতা মসজিদ পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। এখন দেখার বিষয়—মসজিদ কর্তৃপক্ষ কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে এবং দাতাদের আস্থা পুনরুদ্ধার করে।

এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে — চ্যারিটি আইন ২০১১-এর ৭৫(এ) ধারা অনুসারে ১০ এপ্রিল ট্রাস্টি বোর্ড বরাবর তিন দফা অভিযোগ উত্থাপন করে একটি নোটিশ পাঠানো হয়।

কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী, মসজিদের প্রায় এক মিলিয়ন পাউন্ড তহবিল বিনিয়োগে ব্যবস্থাপনায় চরম অব্যবস্থাপনা দেখা গেছে। এতে ইস্ট লন্ডন মসজিদ ট্রাস্টের প্রায় ১৪ কোটির টাকারও বেশী অর্থের অপচয় হয়েছে।
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচরণ না করার কারণে এই অর্থ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। এরজন্য চ্যারিটি কমিশনের সতর্কবার্তা।
ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষে এই অর্থ পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনাও ক্ষীণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা হয়েছে, সেই মেজ মেডিক্যাল (Matz Medical) নামক কোম্পানি সম্পর্কে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাপারে যথাযথ অনুসন্ধান বা যাচাই না করেই অর্থ প্রদান করা হয়েছে।

তৃতীয়ত, কমিশন জানতে চায়—
১. চ্যারিটি হিসেবে সম্পদের নিরাপত্তা ও সুশাসনের কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
২. বিনিয়োগ করা অর্থ পুনরুদ্ধারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
৩. সাবেক পরিচালকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা সম্ভব কিনা।

চ্যারিটি কমিশন মসজিদ কর্তৃপক্ষকে ছয় মাস সময় দিয়েছে এই বিষয়গুলোর পূর্ণাঙ্গ জবাব দেওয়ার জন্য। ব্যর্থ হলে কমিশন নিজেই মসজিদের ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

২০২৩ সালের ইস্ট লন্ডন মসজিদের বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ট্রাস্টি বোর্ড NHS সাপ্লায়ার হিসেবে তালিকাভুক্ত Matz Medical নামক একটি প্রতিষ্ঠানে উল্লেখিত অর্থ বিনিয়োগ করে।
পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়া হওয়ায় এই অর্থ ফেরত পাওয়া নিয়ে ব্যাপক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়।

প্রসঙ্গত, ইস্ট লন্ডন মসজিদটি একশ বছরেরও বেশি পুরনো, যা ব্রিটিশ বাংলাদেশি ও অন্যান্য মুসলিম কমিউনিটির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত। তবে ১৯৭২ সালের পর থেকে বাংলাদেশের একটি ইসলামিক রাজনৈতিক দলের অনুসারীরা মসজিদটির পরিচালনা কার্যক্রমে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।

প্রতিদিন এই মসজিদ থেকে কয়েক হাজার পাউন্ড আয় হয়, এবং প্রতিবছর রমজানসহ বিভিন্ন সময়ে ব্যাপকভাবে ফান্ডরেইজিং কার্যক্রম চালানো হয়। বাংলা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত লাইভ আপিলগুলো থেকে এক একটি সময়ে পাঁচ লক্ষ পাউন্ড পর্যন্ত কালেকশন হয়েছে বলেও জানা গেছে।

অতীতে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল থেকে মসজিদের পাশে অবস্থিত একটি সরকারি কার পার্কের জমি দাবি করে আন্দোলন চালায় স্থানীয় মুসলিমরা, যার ফলস্বরূপ জমিটি মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে পরবর্তীতে লন্ডন মুসলিম সেন্টার ও বিজনেস কমপ্লেক্স গড়ে ওঠে।

 

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।