জগন্নাথপুর টাইমসবুধবার , ২৬ জুলাই ২০২৩, ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রফেসর হাবিবুর রহমান এক জ্যোতির্ময় মানুষ —মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা

Jagannathpur Times BD
জুলাই ২৬, ২০২৩ ১১:১০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রফেসর হাবিবুর রহমান এক জ্যোতির্ময় মানুষ

মুক্তাদীর আহমদ মুক্তা

::

প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ছিলেন একজন সমাজ হিতৈষী আদর্শ শিক্ষক। ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষা প্রশাসক ও মৃদুভাষী সমাজ সংস্কারক। আপাদমস্তক প্রগতিশীল,খাঁটি অসাম্প্রদায়িক নিপাট এক ভদ্রলোক। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য, লেখক ও গবেষক, সমাজ বিজ্ঞানী, খ্যাতিমান এই শিক্ষাবিদের আজ ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৬ সালে ২৭ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় ১৯৪২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মোহাম্মদ মহব্বত ও মায়ের নাম মোসাম্মাত জিরা খাতুন । তিনি ১৯৫৭ সালে নবীগঞ্জ যুগল কিশোর হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯৫৯ সালে সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকল্যাণ বিষয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৯৬৮ সালে স্কটল্যান্ডের এডিনবরা ইউনিভার্সিটি থেকে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট ও ইয়ুথ স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা অর্জন করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮১ পর্যন্ত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনল উপ পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যম্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শেরে বাংলা হলে প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ।১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বরে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তিনি ১৯৯২- ১৯৯৩ পর্যন্ত শাবিপ্রবির রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন। ১৯৯৬ সালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপ উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ১৯৯৭ সালের ২০ জুলাই শাবিপ্রবির তৃতীয় উপাচার্য হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯ জুলাই ২০০১ সালে ভাইস-চ্যান্সেলরের মেয়াদ শেষ করে এ বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রফেসর হিসেবে কাজ করে যান। ২০০৩ সালে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও ডিন হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৫ সালে মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত গভীর
আন্তরিকতায় এ দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান অসংখ্য গ্রন্থের প্রণেতা। বিভিন্ন কাগজে নিয়মিত কলাম লিখতেন। তিনি বৃহত্তর সিলেটের ইতিহাস যৌথভাবে সম্পাদনা করেন।

প্রজ্ঞাবান এই মানুষটির সান্নিধ্যে যাওয়ার আমার সুযোগ হয়েছিল। আমি স্যারের সরাসরি ছাত্র না হলেও তিনি ছিলেন আমাদের শিক্ষকদের শিক্ষক। স্যারের জীবনবোধ ও চিন্তা চেতনার আমি এক গর্বিত শিক্ষার্থী । আজীবন এই অনুভুতি জাগ্রত থাকবে মানসপটে। কত স্মৃতি স্যারের সঙ্গে। এত বড় একজন মানুষ অথচ জীবনাচারে ছিলেন একেবারে সাধাসিধে। কোনোদিন স্যারের কাছে কোনো বিষয় নিয়ে গিয়ে বিফল হইনি। হোক তা পারিবারিক বা সামাজিক। ১৯৯৭ সালে স্যার যখন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি তখন আমরা একটা সংকলন প্রকাশ করেছিলাম “রোদ্দুর”। প্রান্তিক চত্ত্বরে প্রকাশনা অনুষ্ঠান করবো। স্যারকে বলতেই রাজি হয়ে গেলেন। অথচ তখনও ভালোভাবে পরিচয়ই হয়নি। যথাসময়ে স্যার উপস্থিত হলেন। এখনও যখন ঐ সময়ের সাদাকালো ছবি দেখি তখন স্যারের দৃঢ়চেতা সাহসী উচ্চারণগুলো যেন কানে বেজে উঠে। ২০০১ সাল থেকে আমি একটা মাসিক কাগজ ” অভিমত” সম্পাদনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলাম। স্যার ছিলেন এই কাগজের নিয়মিত লেখক। সিলেটের রিকাবী বাজারের মিডটাউন কমপ্লেক্সে ছিল আমাদের অফিস। প্রতিটি সংখ্যায় সকলের আগে স্যার লেখা নিয়ে নিজে এসে আমাদের না পেলে দরজার নীচ দিয়ে রেখে যেতেন। এতো উদার মনের মানুষ আমি এখন পর্যন্ত আর কাউকে দেখিনি। আমার একমাত্র ছোট বোনের বিয়ে, স্যারের বাসায় দাওয়াত কার্ড রেখে এসেছি। স্যার,বাসায় না থাকায় দেখা হয়নি। অনুষ্ঠানের দিন স্যার সকলের আগে বিয়ের সেন্টারে হাজির। কত আয়োজনে স্যারকে কত জায়গায় নিয়ে গেছি।কোনোদিন না করেননি। মনে পড়ছে একবার জগন্নাথপুর উপজেলার কাতিয়া গ্রামে নিয়ে গিয়েছিলাম। সম্ভবত জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। কি জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়েছিলেন স্যার সেদিন। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংগঠনিক আয়োজনে স্যার ছিলেন আমাদের প্রথম পছন্দ। স্যারের সরব উপস্থিতিতে প্রানবন্ত হতো আমাদের সকল আয়োজন। দেখতে ছোটখাটো মানুষ কিন্তু চারিত্রিক দৃঢ়তা আর প্রগতিশীল চিন্তা চেতনায় ছিলেন অনেক উঁচুতে। কত তুচ্ছ কাজে স্যারকে জড়িয়েছি, এখন ভাবলেই খারাপ লাগে। সুনামগঞ্জ পরিচিতি নামক একটি বইয়ের আলোচনা লেখার জন্য বললে, স্যার রাজী হয়ে গেলেন। কষ্ট করে বই পড়ে সুন্দর একটা গ্রন্থ আলোচনা লিখে দিলেন। এখনও বইটায় স্যারের আন্ডার লাইন করা পেন্সিলের দাগগুলো দেখলে কষ্ট পাই। মর্মাহত হই। মৃত্যুর কিছু দিন আগে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির তৎকালীন ক্যাম্পাসে “কালি ও কলমের” কি একটা অনুষ্ঠান ছিল। এই প্রথম দেখলাম স্যার বেশ উত্তেজিত হয়ে বক্তব্য দিলেন। সভা শেষে সিলেটের এক প্রয়াত জাসদ নেতাকে সামনা সামনি পেয়ে কয়েকটি কথা বলেছিলেন। কাছে দাঁড়িয়ে শুনেছিলাম। মর্মার্থ তখন পুরোপুরি অনুভব করতে পারিনি। এখন ৭২-৭৫ এর রাজনীতির নিবিড় পাঠ করে বুঝছি স্যারের প্রফেটিক ওয়ার্ডের মর্মার্থ।

এতো নীরবে স্যার চলে গেলেন। তাঁর মৃত্যুতে সিলেটের প্রগতিশীল সমাজে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা এখন আরো বেশি অনুভব হচ্ছে। চারপাশে বিরাজমান অন্ধকার, কূপমুণ্ডকতা আর চিন্তা – চেতনার দীনতার সময় হাবিবুর রহমান স্যারের মতো একজন দেদীপ্যমান বাতিঘরের বড় বেশি প্রয়োজন ছিল।

প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক, দক্ষ প্রশাসক ও সাদামনের চমৎকার মানুষ । তার কাছে কোনভাবে যেতে পারলে খুব সহজে সিদ্ধান্ত পাওয়া যেতো। ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থরক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন। আন্দোলন সংগ্রামের মুখেও তিনি তাঁর নীতি থেকে সরে আসতেন না।

এমন সৎ,নীতিবান,ইতিহাস ও সমাজ সচেতন মানুষের এখন বড় অভাব। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর স্যারকে বলা হল উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করতে। স্যার, রাজি হলেন না। বললেন, বর্তমান উপাচার্যের মেয়াদ রয়েছে। এ অবস্থায় আমি দায়িত্ব নিতে পারিনা। আমাকে যদি উপাচার্য করতে হয়,তাহলে উপ উপাচার্য করুন। উনার মেয়াদ শেষ হলে আমি উপাচার্যের দায়িত্ব নেবো। স্যারের ইচ্ছেমতো পরে তাই হয়েছিল। এমন নীতিবোধ তো এখন অকল্পনীয়।

স্যার উপাচার্য থাকা অবস্থায় একবার ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজনকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বহিষ্কার করা হলো।স্যারের উপর আমাদের মন খারাপ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অথচ ছাত্রলীগের ছেলেরা বহিস্কার হবে। এ নিয়ে তখন অনেক রাজনৈতিক চাপ ছিল। তীব্র আন্দোলন।বিশ্ববিদ্যালয়ে অচল। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ। পরে অবশ্য তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী, প্রয়াত জাতীয় নেতা আব্দুস সামাদ আজাদের হস্তক্ষেপে এর সুরাহা হয়। কিন্তু স্যার তাঁর সিদ্ধান্তে অটল,অবিচল ছিলেন। এমন ব্যক্তিত্ববান মানুষ ছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে শাবিপ্রবির বিভিন্ন হলের নামকরণ নিয়ে সিলেটের রাজনৈতিক পরিবেশ উত্তপ্ত। এর জন্য স্যারকে প্রতিনিয়ত নানাবিধ আক্রমণ ও সমালোচনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কিন্তু হাবিবুর রহমান স্যার সকল ন্যাক্কারজনক ঘটনা দৃঢ় মনোবলে সামলালেন। পরে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হয়। স্যারের সেসময়কার সিদ্ধান্তগুলো বর্তমানে বাস্তবায়ন হয়েছে। অনেক ঘটনা কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। কিছু কিছু ঘটনায় স্যার খুব কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু কাউকে কখনো বলেছেন বলে মনে হয় না। তিনি ছিলেন চলনে বলনে প্রগতিশীল চিন্তা চেতনার ধারক ও বাহক। জীবনের সর্বক্ষেত্রে সফল এ কৃতি পুরুষের নানাবিধ কার্যক্রমের পরিধি ছিল ব্যাপক ও বিস্তৃত। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে তিনি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন। ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান স্যারের সময়ে ১৯৯৮ সালের ২৯ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি খুবই বিনয়ী ও আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। তিনি একজন সফল পিতাও। তাঁর সন্তানেরা সকলই সুপ্রতিষ্ঠিত।

তিনি প্রকৃত অর্থেই ছিলেন একজন জ্যোতির্ময় মানুষ। আমাদের এক বড় ভরসা ও আশ্রয়ের নাম। প্রায় ১৭ বছর পরও স্যারের প্রসঙ্গ উঠলে গভীর শূন্যতা অনুভব করি। ২০০৭ সালে স্যারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আমরা একটা সংগঠন করেছিলাম। স্যারের চিন্তা চেতনা আর কর্মের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নাম নির্ধারণ করা হয় “‘সমাজ অনুশীলন “। ওয়ান ইলেভেনের সময় প্রশাসন অনুমতি দিতে রাজি নয় কোনো আয়োজনের। শেষ পর্যন্ত অনুমতি পাওয়া গেলো, কিন্তু অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কে রাখা যাবে না। তাদের আপত্তি, তিনি রাজনৈতিক লোক। সেই কঠিন সময়ে সিটি এসবিতে লিখিত অঙ্গীকার দিয়ে অনুষ্ঠান করতে হয়েছিল। লেখক ও গবেষক হিসেবে আবুল মাল
আবদুল মুহিতও শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন। কতো ঘটনা। স্যারের চিন্তা চেতনায় এতোটা প্রভাবিত হয়েছিলাম যার রেশ বহন করতে হবে আজীবন। এমন সহজিয়া মানুষ, এমন মহৎ মানুষ এ সমাজে বিরল। নবীগঞ্জে স্যারের একটা শোকসভা হয়েছিল। পরম শ্রদ্ধেয়, সাবেক অর্থমন্ত্রী
আবুল মাল আবদুল মুহিত কে নিয়ে গিয়েছিলাম। সাবেক গণ পরিষদ সদস্য আব্দুল আজিজ চৌধুরীও বক্তব্য দিয়েছিলেন। অনেকেই বলেছিলেন স্যারের স্মৃতিতে নবীগঞ্জে একটি স্থাপনা করা হবে। কিছু হয়েছে কিনা জানা নেই। সিলেটেও স্যারের স্মৃতিতে কোনো স্মারক নেই। আমাদের সংগঠন আছে। কিন্তু তেমন কোনো কার্যক্রম নেই। স্যারের বইগুলো,স্যারের হাতের লেখা এখনো যত্ন করে রেখেছি। কিন্তু স্যারের স্মৃতিতে আমরা তেমন কিছু করতে পারলাম না। বৃহত্তর সিলেট ইতিহাস প্রনয়ন পরিষদ একটি স্মারকগ্রন্থ বের করেছে এটাই শুধু একটু আত্মতৃপ্তি। যতদিন যাচ্ছে, জীবনের জটিল কোলাহলে আমরা ক্রমশ দূরে চলে যাচ্ছি হাবিবুর রহমান স্যারের বিবেকী চেতনা থেকে। তাঁর শুভানুধ্যায়ী, অনুরাগীরাও পরস্পর বিচ্ছিন্ন। অথচ তিনি কি কঠিন সময়ে হৃদয়জ বন্ধনে সকলকে একত্রিত করে নেতৃত্ব দিয়েছেন সকল অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিভাবকত্বে সিলেটের প্রগতিশীল ধারায় যে গতিসঞ্চার হয়েছিল তা এখন অনেকটা স্তিমিত। অকস্মাৎ চলে গেলেন তিনি। মাত্র ৬৫ বছরের জীবনে দেশ ও সমাজকে অনেক দিয়েছেন তিনি। কিন্তু আমরা তাঁকে কিছুই দিতে পারলাম না। মনের অজান্তে প্রায়শই উচ্চারিত হয়
“তোমার আসন শূন্য আজি”। এই জ্ঞান তাপসের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। স্বীয় কর্মগুণে ও স্বমহিমায় প্রজ্ঞাদীপ্ত মনীষা ব্যক্তি হিসেবে তিনি আমাদের হৃদয়ে থাকবেন চিরভাস্বর। শান্তিপ্রিয় এই সজ্জন মানুষটিকে পরম করুণাময় চিরপ্রশান্তিতে রাখবেন এই প্রার্থনা।

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।