প্রফেসর ড. সাহেদা আখতার পোস্ট রিটায়ারমেন্ট লিভ বা অবসর পরবর্তী ছুটিতে গমন।
“এ অনন্ত চরাচরে স্বৰ্গমর্ত্ত্য ছেয়ে
সব চেয়ে পুরাতন কথা, সব চেয়ে
গভীর ক্রন্দন “যেতে নাহি দিব।” হায়,
তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়!
চলিতেছে এমনি অনাদিকাল হতে।
প্রলয়-সমুদ্রবাহী সৃজনের স্রোতে
প্রসারিত ব্যগ্রবাহ জ্বলন্ত আঁখিতে
“দিবনা দিবনা যেতে” ডাকিতে ডাকিতে
হুহু করে’ তীব্রবেগে চলে যায় সবে
পূর্ণ করি বিশ্বতট আর্ত্ত কলরবে।”
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
প্রফেসর ড. সাহেদা আখতার বাংলা বিভাগের খ্যাতিমান শিক্ষক। শিক্ষার মানোন্নয়নে কর্মময় জীবন মুরারিচাঁদ কলেজে অতিবাহিত করেছেন। দীর্ঘসময়ে প্রভাষক থেকে শুরু করে সব পদেই এক কলেজে কাজ করেছেন। ম্যাডামের প্রথমদিকের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা ছিলাম। শ্রেণি পাঠদানে ম্যাডাম খুবই আন্তরিক ছিলেন। ম্যাডামের সহচর্যে শিক্ষার্থীর আলোর দ্যুতি প্রগাঢ় হয়েছে। আমি খুবই গৌরবান্বিত ম্যাডামের শিক্ষার্থী ও সহকর্মী হয়ে। ম্যাডামের সাথে কাজ করে আমি সমৃদ্ধ হয়েছি। ম্যাডামের বিদায় লগ্নে বাংলা বিভাগ নবীন প্রবীণের সম্মেলন ছিল। বিদায় শ্রদ্ধা জানাতে সরকারি মহিলা কলেজের বিভাগীয় প্রধানসহ সবাই এসেছিলেন। টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে নিলুফার ম্যাডাম ও রেজওয়ানা মতিন এসে সভাকে সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলা বিভাগের বিভিন্ন সেশনের শিক্ষার্থী দলে দলে এসে স্মৃতি রোমন্থন করে ম্যাডামকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এ যেন প্রস্ফুটিত গোলাপের সহস্র পাপঁড়ির মেলবন্ধন। মঈন উদ্দিন মহিলা কলেজের শিক্ষক আমাদের শিক্ষার্থী। আজির উদ্দিনের স্মৃতিতে ভেসে উঠেছে বাংলা বিভাগের একাল ও সেকাল। সময় বড়ই নিষ্ঠুর, শিক্ষার্থী থেকে শিক্ষক সময়ের ঠাহর আমারই ত্রিশ। কালের যাত্রায় জারুল তলার আসাম প্যাটার্নের বাংলা থেকে পাহাড়ের পাদদেশের শ্যামল উদ্যানের দালান। শ্যামলিমার নিবিড় বন্ধনে জাগরিত হয়েছে শিক্ষার অপার্থিব সৌন্দর্য। শিক্ষক আজীবন শিক্ষক, শিক্ষকের বিদায় হয় না। শিক্ষক প্রবাহমান থাকেন প্রজন্ম পরম্পরায়। ম্যাডামের গবেষণা কর্ম শিক্ষার্থীদের জন্য সবসময় অনুপ্রেরণা দিবে। ম্যাডামের অবসরজীবন লেখার মাধ্যমে দেশ জাতিকে সমৃদ্ধ করবে।
ম্যাডামের অবসর জীবন মঙ্গলময় আনন্দময় ও কর্মময় হোক।
লেখক : শেখ মোঃ নজরুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক- বাংলা মুরারিচাঁদ কলেজ, সিলেট।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।