জগন্নাথপুর টাইমসমঙ্গলবার , ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. খেলা
  3. গ্রেট ব্রিটেন
  4. ধর্ম
  5. প্রবাসীর কথা
  6. বাংলাদেশ
  7. বিনোদন
  8. বিশ্ব
  9. মতামত
  10. রাজনীতি
  11. ল এন্ড ইমিগ্রেশন
  12. লিড নিউজ
  13. শিক্ষাঙ্গন
  14. সাহিত্য
  15. সিলেট বিভাগ
 
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে দেশের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় বাপা ও ক্যাপস এর “পরিবেশ সংস্কার কমিশন গঠন করাসহ ৯ দফা সুপারিশ”

Jagannathpur Times Uk
এপ্রিল ২২, ২০২৫ ১০:০২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

 

মির্জা আবুল কাসেম, জগন্নাথপুর টাইমস ডেস্ক :

ঢাকা, ২২ এপ্রিল, ২০২৫ : বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে দেশের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় বাপা ও ক্যাপস এর “পরিবেশ সংস্কার কমিশন গঠন করাসহ ৯ দফা সুপারিশ”

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর যৌথ উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (নীচতলা) শফিকুল কবির মিলনায়তন হলে “বিশ্ব ধরিত্রী দিবস ২০২৫: বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে করনীয়”-শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল ২০২৫) সকাল ১০:৩০ ঘটিকায় ঢাকায় বাপা’র সভাপতি, অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক, মো. আলমগীর কবির এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক ও বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাপা’র সহ-সভাপতি ও স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর এমেরিটাস অধ্যাপক, ড. এম. ফিরোজ আহমেদ, বাপা’র সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম. শহীদুল ইসলাম, বাপা সহ-সভাপতি মহিদুল হক খান, যুগ্ম সম্পাদক, হুমায়ুন কবির সুমন প্রমূখ।

এতে উপস্থিত ছিলেন, বাপা’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. হালিম দাদ খান, জাভেদ জাহান এবং জাতীয় কমিটির সদস্য, নাজিম উদ্দিন, হাজী শেখ আনছার আলী, শাকিল কবির, তরিকুল ইসলাম রাতুল, মোনছেফা তৃপ্তি, ফাহমিদা নাজনিন, সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি রাশেদুজ্জামান মজুমদার, নোঙর ট্রাস্ট’-এর চেয়ারম্যান সুমন শামস, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর মিঠুনসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। সহ আয়োজক সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন পরিবেশবাদী, সামাজিক সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ।

মুল প্রবন্ধে ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, বাংলাদেশে অবস্থিত ঢাকাস্থ আমেরিকান দূতাবাস থেকে প্রাপ্ত ২০১৬ হতে ২০২৪ সালের অর্থাৎ ঢাকার গত ৯ বছরের বায়ুমান সূচক বা AQI এর তথ্যউপাত্ত বিশ্লেষণ করেছে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। গবেষণা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষনের মাধ্যমে পাওয়া যায় যে, ঢাকায় গত ৯ বছরের ৩১১৪ দিন এর মধ্যে ঢাকার মানুষ মাত্র ৩১ দিন (১%) নির্মল বা ভালো বায়ুতে নিঃশ্বাস নিতে পেরেছে। তবে এক্ষত্রে ৬২৪ দিন (২০%) মাঝারি বায়ু, ৮৭৮ দিন (২৮%) সংবেদনশীল বায়ু, ৮৫৩ দিন (২৭%) অস্বাস্থ্যকর, ৬৩৫ দিন (২১%) খুব অস্বাস্থ্যকর এবং ৯৩ দিন (৩%) দুর্যোগপূর্ণ বায়ু গ্রহন করেন। ২০২৪ সালের সবচেয়ে ভাল ও সবচেয়ে খারাপ বায়ুমানের দিনসংখ্যা হল যথাক্রমে ২ ও ৩৫ দিন। বিশ্ব ব্যাংকের ২০২২ সালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ২০২১ সালে বাংলাদেশে বায়ু দূষণের কারণে কমপক্ষে ২৩৬,০০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার (সিআরইএ) এর গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতিবছর ৫ হাজার ২৫৮ শিশুসহ ১ লাখ ২ হাজার ৪৫৬ জন মানুষের অকালমৃত্যু ঘটে। বিশেষ করে, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে বায়ু ও সীসা দূষণ সহ বিভিন্ন দূষণ, যা শিশুদের আইকিউ হ্রাসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, বায়ুদূষণ ও শব্দ দূষণের মাত্রা এতো বেশী মাত্রায় দাঁড়িয়েছে যে ঢাকা শহরে এখন বসবাস করার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দিন দিন এই দূষণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনই এই দূষণ বন্ধ করতে না পারলে ভয়াবহ পরিণতি নেমে আসবে।

বায়ু দূষণের শিকার সবচেয়ে বেশী শিশু ও বৃদ্ধ। এর ফলে বৃদ্ধ ও শিশুদের শ্বাসতন্ত্র জনিত সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আসুন আমরা আমাদের ভবিষ্যত প্রজম্মের শিশুদের কথা চিন্তা করে দূষণ বন্ধ করি।

অধ্যাপক, ড. এম. ফিরোজ আহমেদ বলেন, মানুষ প্রতিদিন ৩০ কিউবিকি লিটার বায়ু সেবন করে থাকে। এই বায়ুটুকু যদি দূষিত হয় তবে মানব দেহ মারাত্নক ক্ষতির শিকার হবে। বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে আগে দুষণের উৎসগুলো চিহ্নিত করতে হবে। তিনি বলেন বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ ট্রান্সবাউন্ডোরী মুভমেন্ট। বার্ষিক ১৫/২০ মাইক্রোগ্রাম দুষণ মুলত ট্রান্সবাউন্ডোরী মুভমেন্ট এর ফলে হয়ে থাকে। আমাদের আগে নিজের দেশের দূষণ বন্ধ করা জরুরী তার পরে ট্রান্সবাউন্ডোরী মুভমেন্ট এর ফলে দূষণ বন্ধে ভিশন ২০৩০ মাধ্যমে অন্যান্য দেশের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার বৃদ্ধি সলিড ওয়েস্ট কম্পোজড করে কৃষিতে ব্যবহারের মাধ্যমে দূষণ কমানোর দাবি জানান।

অধ্যাপক ড. এম. শহীদুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ বছরে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধির ফলে দেশে দূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত সরকার উন্নয়নের নামে একের পর এক পরিবেশ বিধংসী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে সুন্দরবনসহ সমগ্র দেশের পরিবেশ ধংস করেছে। আমরা চাই বর্তমান অর্ন্তবর্তিকালীন সরকার দেশের উন্নয়নে পরিবেশকে সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দিবে। দেশের সাধারণ মানুষ পরিবেশ রক্ষায় মূখিয়ে আছে কিন্তু সরকারকে সেই ক্ষেত্র তৈরী করে দিতে হবে। এখন দূষণকারিদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর হতে হবে।

মহিদুল হক খান বলেন, আমাদের দাবিগুলো সুনিদিষ্টভাবে সরকারের নিকট পেশ করে তা বাস্তবায়নে সরকারকে প্রয়োজনে চাপ প্রয়োগ করতে হবে দেশের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার স্বার্থে।

আলমগীর কবির বলেন, বাপা দেশের পাণ-প্রকৃতির সু-রক্ষায় দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে পরিবেশ উপদেষ্টা একজন পরিবেশ কর্মী তাই আমরা আশা করি তিনি থাকা অবস্থায় দেশের প্রাণ-প্রকৃতির সু-রক্ষা নিশ্চিত হবে। তিনি আরো বলেন পরিবেশ দূষণ বন্ধে দেশের ফিটনেস বিহীন গাড়ী এবং ইটভাটাগুলোকে প্রয়োজনে ভর্তুকী দিয়ে হলেও পরিবেশসম্মত গাড়ীক্রয় ও পরিবেশ সম্মত উন্নত প্রযুক্তির ইটের ব্যবস্থা করা জরুরী। তিনি দেশের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় পরিবেশ সংস্কার কমিশন গঠন করার দাবি জানান।

আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে নিম্মোক্ত সুপারিশসমূহ তুলে ধরা হয়:
1. দেশের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় পরিবেশ সংস্কার কমিশন গঠন করা
2. বায়ুদূষনকারী মেয়াদউত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধ করে বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড যানবাহনের ব্যবহার বৃদ্ধি।
3. বায়ু দূষণকারী পোড়ানো ইটের বিকল্প ব্লক ইটের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
4. বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ করে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা।
5. বিদ্যুৎ উৎপাদন, যানবাহন, শিল্প কারখানা, গৃহস্থালি কাজ সহ সকল স্তরে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ক্রমান্বয়ে শূন্যের কোঠায় নামানো।
6. IEPMP সহ বিদ্যমান জ্বালানি নীতিগুলোতে সংশোধন আনা এবং নির্মল বায়ু আইন প্রণয়ন করা।
7. বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্প কারখানায় বিশ্বমানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিঃসরণ মান নির্ধারণ এবং এর কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ।
8. সৌর, বায়ু এবং জলবিদ্যুৎ ও বায়োগ্যাস প্রকল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, গবেষণা ও উন্নয়নের উপর জোর দেওয়া।
9. গৃহঅভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণ কমাতে গ্রামীণ পর্যায়ে জীবাশ্ম জ্বলানির পরিবর্তে সবুজ জ্বালানি নিশ্চিত করা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি।