নিজস্ব প্রতিবেদক. ঢাকা : বাংলাদেশে মরণঘাতি ক্যান্সারে আক্রান্তদের মধ্যে ৭৩ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষের মধ্যে নিয়মিত ধূমপান এবং ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী, ৪১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনে আসক্ত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। এ অবস্থায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ক্যান্সার রোগীদের জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিতের পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকির কারণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে আয়োজিত ‘ডিস্ট্রিবিউশন অব ক্যান্সার’স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রোমেন রায়হান।
গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্যান্সারে আক্রান্তদের মধ্যে ৭৩ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষের মধ্যে নিয়মিত ধূমপান এবং ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ নারী, ৪১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনে আসক্ত। এছাড়াও ৬৪ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ ও ৭৫ দশমিক ৪ শতাংশ নারীর মধ্যে নিয়মিত পান-সুপারি খাওয়ার ইতিহাস রয়েছে। তবে এসব ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ১৩ শতাংশ শুধু কেমোথেরাপি, ১১ দশমিক ৩ শতাংশ শুধু সার্জারি, ২ দশমিক ৩ শতাংশ শুধু রেডিওথেরাপি, ৯ দশমিক ৭ শতাংশ শুধু প্যালিয়েটিভ সেবা এবং ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী উল্লিখিত সবগুলোর একের অধিক সেবা গ্রহণ করেছেন। এমনকি রেজিস্ট্রি করা ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ রোগী কোনো প্রকার চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেননি।
এতে বলা হয়েছে, রেজিস্ট্রি করা ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী নারী (১৬.৫%) এবং পুরুষের (১৮.০%) মধ্যে সবচেয়ে বেশি হারে ক্যান্সার রোগী পাওয়া গেছে। পুরুষদের মধ্যে স্বরনালির ক্যান্সারের হার সবচেয়ে বেশি (১৩.২%)। আধিক্যের দিক থেকে শীর্ষ অন্যান্য ক্যান্সার হচ্ছে পাকস্থলী (১০.২৪), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (৮.৮%), ফুসফুস (৭.৪%) এবং খাদ্যনালির (৭.৪%) ক্যান্সার।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, নারীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হার সর্বোচ্চ (৩৫.৪%)। শীর্ষ অন্যগুলোর মধ্যে রয়েছে জরায়ুমুখ (১২.৩%), ঠোঁট ও মুখগহ্বর (১০.৮%) থাইরয়েড (৭.৪%) এবং ওভারির (৪.৬%) ক্যান্সার। ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ২৮.৬% উচ্চ রক্তচাপ, ১১.৩% ডায়াবেটিস, ৮.৩% হার্টের রোগ এবং ৩% হারে কিডনি জটিলতা ও স্ট্রোক বিদ্যমান।