নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট :
শাবি’র অধ্যাপক, কবি ও গবেষক ড. জফির সেতু’র পঞ্চাশযাপন উপলক্ষে প্রকাশিত ‘সুবর্ণসোপান’ এর একটি অন্তরঙ্গপাঠ ও লেখক আড্ডা সিলেটে নগরে অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটের ইমজা কার্যালয়ে- কবি-গবেষক ও আখ্যানলেখক জফির সেতুর পঞ্চাশযাপন উপলক্ষ্যে তাঁর সাহিত্যকৃতি মূল্যায়ন-স্মারক “সুবর্ণসোপান” এর মোড়ক-উন্মোচন, অন্তরঙ্গপাঠ ও আড্ডায় লেখকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
লেখক-গবেষক, প্রফেসর নন্দলাল শর্মা’র সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে কবি জফির সেতুর নির্মাণ-সৃষ্টির প্রেক্ষাপট ও মূল্যায়ন তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন কবি এ.কে.শেরাম,
নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক লিয়াকত শাহ ফরিদী, ডক্টর মোশতাক আহমাদ দীন,
কবি-অধ্যাপক হোসনে আরা কামালী, কথাসাহিত্যিক প্রশান্ত মৃধা, লেখক-অনুবাদক মিহিরকান্তি চৌধুরী,
কবি পুলিন রায়, লেখক-অধ্যাপক বিজিৎ দেব, কবি-অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব,
প্রাবন্ধিক নেসার শহীদ, লেখক-গবেষক ও অধ্যাপক আজির হাসিব, কবি মালেকুল হক, নাট্যকার সুফি সুফিয়ান, প্রকাশক রাজীব চৌধুরী প্রমুখ ।
“সুবর্ণসোপন” স্মারকগ্রন্থের সম্পাদক কবি-গবেষক, অধ্যাপক ডক্টর আবুল ফতেহ ফাত্তাহ অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন এবং গ্রন্থ সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন।
কবি জফির সেতুর সহধর্মিনী শাহেদা শিমুল তাঁর অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
কবি জফির সেতু তাঁর বক্তব্যে আয়োজক প্রত্যেকের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
:
উল্লেখ্য প্রাবন্ধিক ও গবেষক হিসেবে জফির সেতু নিজেকে হাজির করেছেন বেশকিছু গদ্য ও গবেষণাগ্রন্থে।
কবি জফির সেতুর সাহিত্য ও সৃষ্টিকর্ম :
জফির সেতু কবি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দেশে ও দেশের বাইরে। এছাড়া তিনি একজন ছোটোগল্পকার, ঔপন্যাসিক, ভ্রমণ-লেখক, প্রবন্ধ-লেখক ও গবেষক।
জফির সেতুর প্রথম কাব্য বহুবর্ণ রক্তবীজ ২০০৪ সালে প্রকাশিত হয়। অন্যান্য কাব্য হচ্ছে সহস্র ভোল্টের বাঘ (২০০৬), স্যানাটোরিয়াম (২০০৮), তাঁবুর নিচে দূতাবাস (২০১১), সিন্ধুদ্রাবিড়ের ঘোটকী (২০১২), জাতক ও দন্ডকারণ্য (২০১৩), সুতো দিয়ে বানানো সূর্যেরা (২০১৪), Turtle Has no wings (২০১৪), ডুমুরের গোপন ইশারা (২০১৪), প্রস্তরলিখিত (২০১৫), ইয়েস, ইউ ব্লাডি বাস্টার্ডস! (২০১৫), এখন মৃগয়া (২০১৬), আবারও শবর (২০১৬), নির্বাচিত কবিতা (২০১৭), তিনভাগ রক্ত (২০১৯), কবিতাসংগ্রহ (২০২০) ও আমি করচগাছ (২০২১)। জফির সেতুর কবিতা মণিপুরী ও ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়ে প্রকাশিত হয়েছে।
জফির সেতু বেশকিছু গল্প বাংলাদেশ ও কলকাতার পত্রপত্রিকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। প্রকাশিত হয়েছে একমাত্র গল্পগ্রন্থ বাবেলের চূড়া (২০১৩)।
জফির সেতু প্রথম উপন্যাস অকাল বোধন। এটি অভিমত ইদসংখ্যায় প্রকাশিত হয়। গ্রন্থাগারে প্রকাশিত উপন্যাস দুটি। এগুলো হচ্ছে- হিজলের রং লাল (২০১৬) ও একটি জাদুর হাড় (২০২০)।
প্রাবন্ধিক ও গবেষক হিসেবে জফির সেতু নিজেকে হাজির করেছেন বেশকিছু গদ্য ও গবেষণাগ্রন্থে। গ্রন্থগুলো হচ্ছে লোকপুরাণের বিনির্মাণ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০১১), কবিতার ইন্দ্রজাল (২০১৭), সিলেটে বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের ইতিহাস (২০১৮), স্ত্রীশিক্ষার উন্মেষপর্ব ও সিলেট মহিলা কলেজ (২০১৯), বঙ্গবন্ধু ও নয়াচীন (২০২০) ঘাটুগান ঘাটুসংস্কৃতি (২০২২) ও সিলেটের তাম্রশাসন: ইতিহাস, সমাজ ও সংস্কৃতি (২০২৪)।
জফির সেতু একজন মনস্বী লেখক, পাঠক, লোকসাহিত্য সংগ্রাহক ও সম্পাদকও। তাঁর সম্পাদিত গ্রন্থগুলো হচ্ছে দিলওয়ারের শ্রেষ্ঠ কবিতা (২০১১), নন্দলাল শর্মা: ব্যক্তি ও মানস (২০১২), সিলেটি বিয়ের গীত (২০১৩), তাম্রশাসনে শ্রীহট্ট (২০১৯), শ্রীভূমির রবীন্দ্রনাথ (২০১৯) ও সাস্ট-ইতিহাসের আদিপর্ব: কিছু স্মৃতি, কিছু কথা (২০২৪)।